এবিসি সাহিত্য ডেস্ক:

🔤 এ লেখায় শিক্ষনীয় কিছু নেই ।
….. আমাদের চারপাশে এতো ছাত্র ও সরি, ভুলে বহুবচন ব্যবহার করে আমাদের লিখে ফেলেছি।
আমার চারপাশে এতো ছাত্র এতো বৈষম্য বিরোধী সংগঠন এতে আমি ভরসা ও ভয় দুটোই পাচ্ছি।
আমি আজকাল অনেক চিহ্নিত বখাটে ছেলেদের দেখছি ডার্বি সিগারেট বেনসনের প্যাকেটে ভরে গার্লস স্কুল কলেজের সামনে বেশ আয়েশ করে হাঁটা চলা করতে।
তারা মোটামুটি ছাত্র হয়ে বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে। এতে আমার আপাতত কোন সমস্যা হচ্ছে না। তবে সমস্যা যে কারো না কারো হচ্ছে বা হবে এটা বলার জন্য আর লম্বা কলাম লেখার দরকার নেই।
আমি জানি না আমার লেখা কোন সমন্বয়ক বা তাদের লেজের চোখে পড়বে কিনা। যদি পড়ে থাকেও তাদের আমার মতো মানুষের লেখা পড়ার মতো সময় নিশ্চয়ই এখন আর নেই।
তাদের এখন মেলা কাজ।
দেশ সামলানো
বিদেশ সামলানো
কর্পোরেট ওয়ার্ল্ড সামলানো
এর মধ্যে আছে আবার দেশ বিদেশের মিডিয়া সামলানো।
বিদেশি মিডিয়ার বিদেশি সাংবাদিকরা প্রশ্ন ইংরেজিতে করবে এবং তাদের প্রশ্নের উত্তর ইংরেজিতে দিতে হবে।
এই ছোট্ট জিনিসটা জেনে বুঝেও কেন আমাদের সমন্বয়করা ( উপদেষ্টা বর্তমান ) ইংরেজিতে দক্ষ না হয়ে তাদের মুখোমুখি হলেন এই লজ্জা হয়তো আরও কিছু দিন আমাকে লজ্জিত করে রাখবে।
আমার আবার লজ্জা একটু কম।
তবে লজ্জা কম হলেও অবাক হবার ক্ষমতা প্রচুর।
আমি যা দেখি তাতেই অবাক হই।
তিন দিন আগে মেলা খানেক অবাক হলাম আমাদের প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশ্য ভাষন শুনে তাঁর বিভিন্ন সংস্কার কমিটি করা দেখে।
সে কমিটির কাজ নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যাথা নেই। কিন্তু ব্যাথা টা হলো ছাত্র আন্দোলনের সময় যারা গুলি খেয়ে মারা গেলেন তাদের সঠিক তথ্য বা সংখ্যা নিয়ে কোন কমিটি হলো না। আমার জানা মতে সারা দেশে এখনো অসংখ্য মানুষ চিকিৎসারত, চিকিৎসাহীন, টাকার অভাবে ঔষধ না খেতে পেরে পরিবারে বোঝা হয়ে আছে।
এদের বিষয়ে কোন কিছু তিনি বললেন না।
শুধু মুখে দায়সারা চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়ে যাচ্ছেন উপদেষ্টা ও সমন্বয়করা।
চার দিন আগে অনেক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে দিনাজপুরের রফিক রোকেয়া দম্পতির কথা।
রোকেয়া ছিলেন অন্তঃসত্ত্বা। আগষ্টের চার তারিখে রফিক তার স্ত্রী রোকেয়া কে ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যাওয়ার সময় ঢাকা মেডিক্যালের সামনে গুলি বিদ্ধ হয়।
তাদের নবজাতক শিশুকে বিক্রি করে এখন রফিকের চিকিৎসা চলছে।
এমন একটা খবর প্রকাশের পরও গত চার দিন তাদের পরিবারের সঙ্গে সরকারের বা সমন্বয়কের কেউ যোগাযোগ করেছে বলে খবর পাওয়া যায়নি।

প্রফেসর স্যার ব্যাস্ত আছেন হাসিনার বাসা বাড়ি যাদুঘর করা নিয়ে। আর উপদেষ্টারা আছেন ইলিশ নিয়ে।
আর সমন্বয়কেরা আছে গলাবাজি নিয়ে।
এক মাস পাড় হয়ে গেছে। সময় টা কিন্তু একেবারে কম না।
এর মধ্যে দৃশ্যমান কোন কিছু হয়েছে ?
যা দেখে আমরা আশায় বুক বাঁধতে পারি।
দিন দিন কিন্তু সাধারণ মানুষের আস্থা কমে যাচ্ছে। আমারও।
দেশে আওয়ামী সরকার না বিএনপি জামাতের সরকার আসবে এটা নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যাথা নেই।
আমার চাওয়া শুধু একটা জিনিস সেটা হলো একটা দূর্নীতি মুক্ত দেশ।
শুধু দূর্নীতি মুক্ত একটা দেশ হলেই আমি খুশি।

শেষে একটা কথা বলতে ইচ্ছে করছে।
তখন বাবা বেঁচে ছিলেন। আমি গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরি তখন আমার বয়স বেশি না। একটা পারিবারিক মিটিং এ আমি বেশ চিল্লাচিল্লি করি। মিটিং এ বাবা কয়েকবার আমার দিকে শীতল চোখে তাকালেন।
রাতে বাড়ি এসে বললেন – তুমি যদি চাও তোমার সিদ্ধান্ত সবাই মেনে নিক তবে তুমি কথা বলবে সবার শেষে এবং খুব নিচু গলায়। চিল্লাচিল্লি করে তুমি তোমার সিদ্ধান্ত কখনো সবার উপর চাপিয়ে দিতে পারবে না।
বাবার কথা শুনে সে রাতে বেকায়দা মেজাজ খারাপ হলো। মনে মনে বললাম জোরে বললেই কেউ শোনে না আর নিচু গলায় বললে শুনবে !
এখন বুঝি চিৎকার করে কিছু হয়না

কিছু সমন্বয়কের বডি ল্যাঙ্গুয়েজ খুব ঔদ্ধত্যপূর্ণ।
এটা মোটামুটি অনেকের চোখে পড়তে শুরু করেছে। তাদের উচিৎ চিৎকার করা বন্ধ করা। বক্তব্য দেবার সময় এতো জোরে চিৎকার করে কথা বলার কিছু নেই। মানবিক ভাবে কথা বলুন। আপনারা দায়িত্ব নেবার পরে প্রথম কোন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত হয়েছেন সেটা হলো বন্যার্তের ত্রাণের টাকা কালেকশনে। সেই টাকার গড়মিলেই আপনাদের দিকে কিন্তু আঙুল উঠে গেছে। সেটা আগে পরিস্কার করুন।
কথা আস্তে বলুন আর মানুষের চোখের ভাষা পড়ুন। চোখের ভাষা কিন্তু চল্লিশ দিনে অনেক বদলে গেছে।
গত সরকার সাধারণ মানুষের চোখের ভাষা পড়তে চেষ্টা করেনি এর পরিনাম তো দেখছেন।
আপনাদের বয়স অল্প আমজনতার চোখের ভাষা পড়তে ব্যার্থ হলে নিজেদের পরিনাম নিজেরাই দেখে যাবেন।।