ঢাকা ১১:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবিসি ন্যাশনাল নিউজ২৪ ইপেপার

ব্রেকিং নিউজঃ
ঠাকুরগাঁওয়ে জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের বাসায় দুর্ধষ চুরি ! ঠাকুরগাঁওয়ে রানীশংকৈলের খুনিয়াদীঘি শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের উপর জুতা পরে হিরো আলমের টিকটক, ভিডিও সমালোচনার ঝড় ! ঠাকুরগাঁওয়ে ইএসডিও’র ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা — অংশীজনের প্রত্যাশা শীর্ষক সভা । চিলাহাটিতে নতুন রুপে যাত্রা শুরু করল ডিভাইন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ইপিল গাছ থেকে ডোমারে গৃহবধু দিশার মরদেহ উদ্ধার  নওহাটা পৌর বিএনপি’র কাউন্সিলে সভাপতি রফিক সম্পাদক পিটার নির্বাচিত তেঁতুলিয়ায় তথ্য অধিকার বাস্তবায়ন ও পরবীক্ষণ কমিটির সাথে তথ্য কমিশন বাংলাদেশের পরিচালকের মতবিনিময় সভা নিউজ পোর্টাল জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেন সাংবাদিক আরিফ মিরগন্জ ইউনিয়ন বিএনপির জনসসভা অনুষ্ঠিত।  ঈমানের অগ্নিপরীক্ষা! হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী। 

দৌলতপুরে ইউপি চেয়ারম্যানকে নিজ কার্যালয়ে গুলি করে হত্যা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:১৮:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৭৩ বার পড়া হয়েছে

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নঈম উদ্দিন সেন্টুকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদে নিজ কার্যালয়ে দাপ্তরিক কাজ করার সময় তার ওপর গুলি চালানো হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত এলাকাবাসী বেশ কয়েকটি বাড়িতে লুটপাট এবং আগুন লাগিয়ে দেয়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর নিয়মিত পরিষদে যেতেন চেয়ারম্যান নঈম উদ্দীন সেন্টু। সোমবারও সকালে অন্য দিনের মতো বাড়ি থেকে সামান্য দূরে অবস্থিত ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদে যান তিনি। পরে তিনি নিজ কার্যালয়ে বসে দাপ্তরিক কাজকর্ম করছিলেন। এ সময় ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন গ্রাম পুলিশ এবং দুইজন ইউপি সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে তার কার্যালয়ের পেছনের দিকের জানালা দিয়ে পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে দুর্বৃত্তরা। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান নঈমুদ্দীন সেন্টু। চেয়ারম্যানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় ও ভাঙচুর করে। স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা তথ্য সংগ্রহ ও ছবি তুলতে গেলে তাদের উপর চড়াও হয় তারা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বেলা সাড়ে ৩ তিনটার দিকে সেনাবাহিনীর সহায়তায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এলাকাবাসী জানায়, নঈমুদ্দিন সেন্টু এক সময় বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে দলীয় কোন কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন না। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ সময় তাকে আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে ওঠাবসা করতে দেখা যায়। এর আগেও তিনি একই ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী গ্রাম পুলিশ নাসির উদ্দিন জানান, তিনি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের বাইরে বসে ছিলেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের পেছনের জানালা দিয়ে চার পাঁচ রাউন্ড গুলি চালায় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। গুলির শব্দ শুনে তিনি প্রাণভয়ে পরিষদের একটি কক্ষে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। কিছুক্ষণ পর তিনি ওই কক্ষ থেকে বেরিয়ে এসে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে গিয়ে দেখেন চেয়ারম্যান সেন্টুর গুলিবিদ্ধ নিথর লাশ ফ্লোরে পড়ে রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর একজন জানান, হত্যাকান্ড শেষে দুর্বৃত্তরা পদ্মা নদী দিয়ে ট্রলারযোগে পালিয়ে গেছে।

নিহতের চেয়ারম্যানের জামাই হাসিবুর রহমান বিজয় বলেন, ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর থেকে তার শশুরকে এলাকার একটি গোষ্ঠি হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিল। তারাই এ হত্যাকান্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।

নিহতের পূত্রবধু শামীমা আক্তার বলেন, ‘চেয়ারম্যানের কারো সাথে শত্রুতা ছিল না। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা তদন্ত করে বের করার জন্য পুলিশের প্রতি অনুরোধ করছি’।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিরপুর সার্কেল) আব্দুল খালেক জানান, কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাকে গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে গেছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে। ঘটনায় জড়িতদের খুজে বের করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দৌলতপুরে ইউপি চেয়ারম্যানকে নিজ কার্যালয়ে গুলি করে হত্যা

আপডেট সময় : ০৯:১৮:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নঈম উদ্দিন সেন্টুকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদে নিজ কার্যালয়ে দাপ্তরিক কাজ করার সময় তার ওপর গুলি চালানো হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত এলাকাবাসী বেশ কয়েকটি বাড়িতে লুটপাট এবং আগুন লাগিয়ে দেয়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর নিয়মিত পরিষদে যেতেন চেয়ারম্যান নঈম উদ্দীন সেন্টু। সোমবারও সকালে অন্য দিনের মতো বাড়ি থেকে সামান্য দূরে অবস্থিত ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদে যান তিনি। পরে তিনি নিজ কার্যালয়ে বসে দাপ্তরিক কাজকর্ম করছিলেন। এ সময় ইউনিয়ন পরিষদের কয়েকজন গ্রাম পুলিশ এবং দুইজন ইউপি সদস্য উপস্থিত ছিলেন। বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে তার কার্যালয়ের পেছনের দিকের জানালা দিয়ে পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে দুর্বৃত্তরা। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান নঈমুদ্দীন সেন্টু। চেয়ারম্যানের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় ও ভাঙচুর করে। স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা তথ্য সংগ্রহ ও ছবি তুলতে গেলে তাদের উপর চড়াও হয় তারা। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বেলা সাড়ে ৩ তিনটার দিকে সেনাবাহিনীর সহায়তায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এলাকাবাসী জানায়, নঈমুদ্দিন সেন্টু এক সময় বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে দলীয় কোন কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন না। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ সময় তাকে আওয়ামীলীগ নেতাদের সাথে ওঠাবসা করতে দেখা যায়। এর আগেও তিনি একই ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শী গ্রাম পুলিশ নাসির উদ্দিন জানান, তিনি চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের বাইরে বসে ছিলেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের পেছনের জানালা দিয়ে চার পাঁচ রাউন্ড গুলি চালায় অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। গুলির শব্দ শুনে তিনি প্রাণভয়ে পরিষদের একটি কক্ষে গিয়ে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। কিছুক্ষণ পর তিনি ওই কক্ষ থেকে বেরিয়ে এসে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে গিয়ে দেখেন চেয়ারম্যান সেন্টুর গুলিবিদ্ধ নিথর লাশ ফ্লোরে পড়ে রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর একজন জানান, হত্যাকান্ড শেষে দুর্বৃত্তরা পদ্মা নদী দিয়ে ট্রলারযোগে পালিয়ে গেছে।

নিহতের চেয়ারম্যানের জামাই হাসিবুর রহমান বিজয় বলেন, ৫ আগষ্ট সরকার পতনের পর থেকে তার শশুরকে এলাকার একটি গোষ্ঠি হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিল। তারাই এ হত্যাকান্ড ঘটিয়ে থাকতে পারে।

নিহতের পূত্রবধু শামীমা আক্তার বলেন, ‘চেয়ারম্যানের কারো সাথে শত্রুতা ছিল না। কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা তদন্ত করে বের করার জন্য পুলিশের প্রতি অনুরোধ করছি’।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিরপুর সার্কেল) আব্দুল খালেক জানান, কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাকে গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে গেছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে। ঘটনায় জড়িতদের খুজে বের করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন