দেশের মানুষ যেনো খাঁচায় বন্দি হয়ে আছে- গোলাম মোহাম্মদ কাদের
- আপডেট সময় : ১২:১৬:৪১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২ নভেম্বর ২০২২ ৬৯ বার পড়া হয়েছে
পজিরুল ইসলাম স্টাফ রিপোর্টার
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জনবন্ধু গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি বলেছেন, দেশের মানুষ যেনো খাঁচায় বন্দি হয়ে আছে। দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে হবে। তিনি বলেন, দেশের মানুষকে মুক্তি দিতে দেশের যুব সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে।
আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এর বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে জাতীয় যুব সংহতি আয়োজিত আলোচনা সভায় গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি এ কথা বলেন।
জাতীয় যুব সংহতির আহ্বায়ক ও জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এইচএম শাহরিয়ার আসিফ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা পরিচালনা করেন জাতীয় যুব সংহতির সদস্য সচিব ও জাতীয় পার্টির ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, স্পীকারের আশ্বাসে সংসদে ফিরেছে জাতীয় পার্টি। বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচনের বিষয়ে স্পীকার সময় চেয়েছেন। তিনি বলেন, সমাধান না হলে আমাদের হাতে বিকল্প অপশন আছে। তিনি বলেন, বিভক্তি সৃষ্টির জন্য ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিলো। জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ আছে।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, সোনার খাঁচায় বন্দি একটি পাখি কখনোই সুখি হতে পারে না। ঠিক তেমনই, অধিকার ছাড়া কোন দেশের মানুষ ভালো থাকতে পারে না। তিনি বলেন, দেশের মানুষের কোন অধিকার নেই। দেশের মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। দেশের মানুষ চায়, তারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করে ইচ্ছেমত কাউকে ক্ষমতায় বসাবেন। আবার, অপছন্দ হলে তাকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেবেন। মানুষের ভোটাধিকার অকার্যকর করা হয়েছে। মানুষ প্রতিবাদ করতে পারছে না, বিক্ষোভ করতে পারছে না। দেশের গণমাধ্যমও অকার্যকর হয়ে যাচ্ছে । ইচ্ছে করলেই, সঠিক তথ্য প্রকাশ করতে পারছে না গণমাধ্যম। সাধারণ মানুষ হচ্ছেন দেশের মালিক। তাদের মালিকানা ছিনতাই হয়ে গেছে। দেশের মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে।
এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার সংবিধান সংশোধন করে দেশে একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছে। সকল ক্ষমতা এক ব্যক্তির হাতে। এক ব্যক্তির হাতে সকল ক্ষমতা থাকলে কখনোই গণতান্ত্রিক চর্চা সম্ভব নয়। দেশে গণতন্ত্র না থাকলে কোথাও জবাবদিহিতা থাকে না। আর জবাবদিহিতা না থাকলে সকল ক্ষেত্রে দুর্ণীতি বিস্তার ঘটে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশের যুব সমাজকে সংগ্রাম করতে হবে। এজন্য যুব সমাজকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। তিনি বলেন, এদেশ কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠির নয়। এদেশ আমাদের, এদেশের মালিক সাধারণ মানুষ। দেশের সকল মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, রাজনীতি যেন ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। যারা রাজনীতি করবে সকল অধিকার যেন তাদের জন্যই। দেশের সাধারণ মানুষের জন্য কোন অধিকার নেই। তিনি বলেন, শিক্ষা খাতের বরাদ্দ দিয়ে আধুনিক ভবন তৈরী হচ্ছে, আধুনিক আসবাবপত্র তৈরী হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষা ব্যবস্থার কোন উন্নতি নেই। শিক্ষা ব্যবস্থার মান দিন দিন অবনতি হচ্ছে। তিনি বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোথাও ছাত্র আছে শিক্ষক নেই, আবার কোথাও শিক্ষক আছে ছাত্র নেই। শিক্ষাঙ্গণের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে কোটি কোটি ছাত্র বেকার হয়ে আছে। সরকারের যেন কোন দায় নেই। দেশের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে আছেন কেউ খোঁজ রাখেন না। সরকার দেশের প্রবৃদ্ধি তুলে ধরেন। মেগা প্রকল্প দেখিয়ে উন্নয়নের কথা বলেন। কিন্তু, মেগা প্রকল্পের নামে একটি চক্র বড় লোক হচ্ছেন। তারা দেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছে। তিনি বলেন, সকল মেগা প্রকল্পে বাংলাদেশের যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। প্রয়োজনে বিদেশীদের তত্বাবধানে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশের যুবকদের দক্ষ করে গড়তে হবে।
এসময় জাতীয় পার্টি মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু এমপি বলেন, দেশে ৫ কোটি বেকার দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে। বেকারদের নিয়ে সরকারের কোন ভাবনা নেই। সরকারি দলের লোকেরা বেহেস্তে আছেন, তারা বেকারদের কষ্ট বোঝেন না। ব্যবসা, বিদ্যুত ও বিদুতের নামে ক্যাপাসিটি চার্জ দেখিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট হয়ে গেছে। তিনি বলেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগ শুধু ক্ষমতায় যেতে ব্যস্ত। দেশের মানুয়ের কষ্ট নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যাথা নেই। আমরা মানুষের সব অধিকার নিশ্চিত করতেই রাজনীতি করছি।
এসময় বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এমপি, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আব্দুস সবুর আসুদ, এডভোকেট মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর সিকদার লোটন, নাজমা আখতার এমপি, যুব নেতাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মোঃ হেলাল উদ্দিন, হেলাল উদ্দিন, দ্বীন ইসলাম শেখ, শেখ সারোয়ার, শফিকুল ইসলাম দুলাল, নেওয়াজ আলী ভূঁইয়া, এডভোকেট মাঈন উদ্দিন মাইনু, আবু নাসের বাদল, মোঃ সাহীদ আলম, মোঃ জিয়াউর রহমান বিপুল, কাজী শাহীন আলীম, মোঃ নজরুল ইসলাম, শাহীন আলীম, আরিফুল রুবেল, মোঃ আলমগীর হোসেন, মোঃ ফরিদ আলম, খন্দকার নজরুল ইসলাম, শরিফুর ইসলাম শরীফ, জি এম শহীদ, মোঃ জাকির হোসেন, মোঃ রফিকুল ইসলাম রফিক, শাহজাহান মাতবর, মর্তুজা আহমেদ চৌধুরী, শাহ আনোয়ারুল অনু, মেহেদী হাসান জাকির, হাসান সারোয়ার সুজন, সালাম উদ্দিন বাচ্চু, ইউসুফ আলী লস্কর, শরিফুল ইসলাম বাধন, মোঃ আশরাফুল আলম।
উপস্থিত ছিলেন চেয়ারম্যানের উপদেস্টা মনির আহমেদ, আমিনুল ইসলাম মন্ডল, ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম শফিক, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, মোঃ জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, যুগ্ম মহাসচিব আমির হোসেন ভূঁইয়া, সৈয়দ মঞ্জুর হোসেন মঞ্জু, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য এম এ রাজ্জাক খান, মঞ্জুরুল হক মঞ্জু, গোলাম মোস্তফা, এস এম আল জুবায়ের, যুগ্ম সম্পাদক তিতাস মোস্তফা, সমরেশ মন্ডল মানিক, কেন্দ্রীয় সদস্য তসলিমা আকবর রুনা, মিথিলা রওয়াজা, আলমগীর হোসেন, আলাউদ্দিন আহমেদ, শফিকুল ইসলাম শফিক, প্রিন্সিপাল মোস্তফা চৌধুরী।
খন্দকার দেলোয়ার জালালী
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান
প্রেস সেক্রেটারি ০২