আত্রাইয়ে মাঠ জুড়ে সরিষা ফুলে হলুদের সমাহার
- আপডেট সময় : ০৮:২৩:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ৭ বার পড়া হয়েছে
এমরান মাহমুদ প্রত্যয়,নওগাঁ প্রতিনিধি :
সরিষা ফুলের হলুদ বরণে সেজেছে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ফসলের মাঠ। যতদূর চোখ যায় শুধু হলুদ আর হলুদ রঙের মাখামাখি। চলতি মৌসুমে উপজেলার প্রায় প্রতিটি ফসলের মাঠজুড়ে এখন সরিষা ফুলের সুবাসে ভরা।
শীতের শিশির ভেজা সকালে সরিষার সবুজ গাছের হলুদ ফুলে সোনাঝরা রোদে ঝিকিমিক করছে। এ এক অপরূপ সৌন্দর্যে প্রকৃতি যেন নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে। যেদিকে দুচোখ যায় শুধু সরিষা ফুলের হলুদ রঙের চোখ ধাঁধানো বর্ণীল সমারোহ। আর মৌমাছির গুনগুন শব্দে সরিষা ফুলের রেণু থেকে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌমাছির দল।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার ৭৩০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে বারী-১৪, বারী-১৫, বারী-৯, বারী-১৬, বারী-১৭, বিনা-৪, বিনা-৯, টরি-৭ এবং সম্পদ।
উপজেলার পাঁচশত পঞ্চাশ জন কৃষকের মাঝে প্রত্যেককে এক কেজি উন্নত জাতের সরিষা বীজ, ২০ কেজি ডিএপি (ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট) ও ১০ কেজি এমওপি (মিউরেট অফ পটাশ) সার প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার দমদমা বান্দাইখাড়া,তারানগর গ্রামের মাঠে সরিষার সমারোহ।
কৃষি বিভাগ থেকে প্রণোদনা ও সরিষা তেলের দাম বেশি হওয়ায় চলতি বছরে কৃষকদের মাঝে সরিষা চাষে আগ্রহ বেড়েছে। নতুন সরিষা ২২০০ টাকা মণ এবং একটু শুকনা সরিষা ২৫০০-২৬০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার তাঁরা নগর গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, বারি-১৪ ও ১৫ জাতের সরিষা পাকতে একটু বেশি সময় লাগে এবং ফলনও বেশি হয়। এ কারণে আগাম বোরো রোপণ করতে দেশীয় জাতের (টরি) সরিষা লাগানো হয়। আগাম সরিষার দামও ভালো পাওয়া যায়। বর্তমানে ডিজেল এর দাম বেশি হওয়ায় আবাদ করতে বিঘা প্রতি ৩০০-৫০০ টাকা বেশি খরচ হচ্ছে।
চকশিমুলিয়া গ্রামের কৃষক সাত্তার আলী বলেন, বাজারে সরিষা তেলের দাম বেশি। গত বছর দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা মণ বিক্রি করেছি। নতুন জাতের সরিষা উঠলে আশা করছি দাম বেশি পাবো। দাম বেশি হওয়ার সম্ভবনা থাকায় এ বছর তিন বিঘাতে সরিষার আবাদ করেছি। যা গত বছর ছিল ১০ কাঠা।
উপজেলার বেওলা গ্রামের সরিষা চাষি রশীদ মন্ডল বলেন, সরিষার জমি প্রস্তুত করতে বিঘাপ্রতি প্রায় আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ হয়। এ বছর দুই বিঘা জমিতে দেশীয় জাতের সরিষা চাষ করেছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তাপস কুমার রায় বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় জমিতে জোর এসেছে। এ কারণে সরিষার ভালো আবাদ হয়েছে যা থেকে উৎপাদনের প্রত্যাশিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের নিশ্চিত সম্ভাবনা রয়েছে।
আগের যে কোনো সময় থেকে বাজারে সরিষার দামও বেশি। যেহেতু বাজারে সয়াবিন তেলের দাম বেশি রয়েছে। সেহেতু সরিষা দাম কম হবে না বলে মনে হচ্ছে। সরিষা চাষে কৃষকদের উদ্বৃদ্ধ করতে পাঁচশতের অধিক কৃষককে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে।
এমরান মাহমুদ প্রত্যয়
নওগাঁ