ঢাকা ১১:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবিসি ন্যাশনাল নিউজ২৪ ইপেপার

ব্রেকিং নিউজঃ
ঠাকুরগাঁওয়ে জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের বাসায় দুর্ধষ চুরি ! ঠাকুরগাঁওয়ে রানীশংকৈলের খুনিয়াদীঘি শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের উপর জুতা পরে হিরো আলমের টিকটক, ভিডিও সমালোচনার ঝড় ! ঠাকুরগাঁওয়ে ইএসডিও’র ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা — অংশীজনের প্রত্যাশা শীর্ষক সভা । চিলাহাটিতে নতুন রুপে যাত্রা শুরু করল ডিভাইন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ইপিল গাছ থেকে ডোমারে গৃহবধু দিশার মরদেহ উদ্ধার  নওহাটা পৌর বিএনপি’র কাউন্সিলে সভাপতি রফিক সম্পাদক পিটার নির্বাচিত তেঁতুলিয়ায় তথ্য অধিকার বাস্তবায়ন ও পরবীক্ষণ কমিটির সাথে তথ্য কমিশন বাংলাদেশের পরিচালকের মতবিনিময় সভা নিউজ পোর্টাল জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেন সাংবাদিক আরিফ মিরগন্জ ইউনিয়ন বিএনপির জনসসভা অনুষ্ঠিত।  ঈমানের অগ্নিপরীক্ষা! হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী। 

ফেনী নদীতে বালি লুটের বিষয় নিয়ে পৌর মেয়র সহ তিন জন গুলি বৃদ্ধ 

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৪৬:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর ২০২২ ৭৯ বার পড়া হয়েছে

কামরুল ইসলাম চট্টগ্রাম –ফেনী নদী ও কলমির চরে বালু লুটের ফেনীরআঃলীগ দ্বন্দ্বের জেরে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম খোকনসহ ৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ১১টায় মুহুরি সেচ প্রকল্প সংলগ্ন ফেনী নদী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধরা হলেন- বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র ও বারইয়ার হাট পৌর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম খোকন (৪৮), হিঙ্গুলী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা অশোক সেন (৪২) ও ওছমানপুর ইউনিয়ন যুবলীগ কর্মী সাহহেদ দুখু (৩৫)। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে মিরসরাই উপজেলার মস্তাননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে তাদের দুজনকে। একজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনার জন্য আহত পৌর মেয়র খোকনের অনুসারীরা ফেনীর ফাজিলপুর জেলা আঃলীগ নেতওইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি মজিবুল হক রিপন ও তার লোকজনদের দায়ী করেছেন। অপর দিকে ফাজিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপন ঘটনার সাথে জড়িত নয় বলে দাবী করে উল্টো বারইয়ার হাট পৌর মেয়র খোকন কে দায়ী করেছেন।

এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘ দিন যাবৎ ফেনী ও মীরসরাই এলাকার দুটি গ্রুপ ফেনী নদীর বিভিন্ন স্পট ও কলমির নামক স্থান থেকে ভ্রাম্যমান ড্রেজার দিয়ে বালি তুলে অর্ধশতাধিক বোট দিয়ে বালি লুটে করে যাচ্ছেন। গত কয়েক দিন যাবৎ মিরসরাই উপজেলার বারইয়ার হাট পৌর মেয়র রেজাউল করিম খোকন ও ফেনীর ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম খোকন ও তাদের সমর্থকের মধ্যে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ১৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে মেয়র খোকনের লোকজন বালি তুলতে গেলে রিপন চেয়ারম্যানের লোকজন দুটি বালিবাহী বোট আটকে রাখে। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে আরেকটি বোট যোগে মেয়র খোকন তার অনুসারীদের নিয়ে বোট দুটি ছাড়িয়ে আনতে গেলে আরেকটি বোটে থাকা রিপন চেয়ারম্যানের ১৫-২০জন সশস্ত্র অনুসারী এলোপাথাড়ি গুলি করলে বারইয়ার পৌর মেয়রসহ তার তিন অনুসারী গুলিবিদ্ধ হন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপন বলেন, আমি এখানকার বৈধ ইজারাদার। আমার লোকজন গুলি করার প্রশ্নই ওঠেনা। বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র খোকন অবৈধভাবে এখানে বালু তুলছেন। তিনি এসে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। তারা তাদের নিজেদের গুলিতে আহত হয়েছে, কিন্তু তার দায়ভার আমার উপর চাপিয়ে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চাইছে। সরকার আমাকে সোনাগাজীর থাক খোয়াজের লামছি ও কলমির চরে বৈধ ইজারা দিয়েছেন।

পৌর মেয়র খোকনের অনুসারী যুবলীগ নেতা রিয়াদ খান বলেন, ফেনী নদীর মিরসরাই অংশ সহ সোনাগাজীর অংশে ফাজিলপুর ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার লোকজন দীর্ঘ দিন যাবৎ ভ্রাম্যমান ড্রেজার ও বোট দিয়ে বালি লুট করে নিয়ে যাচ্ছেন। মিরসরাই এলাকার একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে মোটা বালি সরবরাহ করার জন্য বালি পরিদর্শণে গেলে মেয়র খোকন ও তার লোকজনের উপর রিপন চেয়ারম্যানের লোকজন হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথাড়ি গুলি করে। তাই তিনি রিপন চেয়ারম্যান ও তার অনুসারীদের দ্রুত গ্রেফতার দাবি করেন।

মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডা. মিনহাজ উদ্দিন জানান, রেজাউল করিম খোকনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। তিনি পেটে এবং শরীরের কয়েকটি স্থানে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি দুইজনের মধ্যে অশোক সেনকেও চমেকে পাঠানো হয়েছে। সাইদ খান দুখু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই চিকিৎসাধীন।

সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ খালেদ হোসেন দাইয়্যান বলেন, ঘটনাটি শোনার পর তাৎক্ষণিক পুলিশ দল নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। কিন্তু ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া যায়নি।

জোরারগঞ্জ থানার ওসি নুর হোসেন মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মেয়র রেজাউল করিম খোকনসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আমরা ঘটনাস্থলে আছি।

উল্লেখ্য; সোনাগাজীর কলমির চরের প্রায় চারশ একর জমি জবরদখল করে সোনাগাজী ও মিরসরাই উপজেলার বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ভূমি দস্যু মাছ চাষ করে আসছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মনজুরুল হক বলেন, সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে মাছ চাষীদের এক সপ্তাহের মধ্যে চাষকৃত মাছ সরিয়ে নিতে আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে।

মফিজুর রহমান ফেনী

শেয়ার করুন

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ফেনী নদীতে বালি লুটের বিষয় নিয়ে পৌর মেয়র সহ তিন জন গুলি বৃদ্ধ 

আপডেট সময় : ১১:৪৬:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর ২০২২

কামরুল ইসলাম চট্টগ্রাম –ফেনী নদী ও কলমির চরে বালু লুটের ফেনীরআঃলীগ দ্বন্দ্বের জেরে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র রেজাউল করিম খোকনসহ ৩ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) সকাল ১১টায় মুহুরি সেচ প্রকল্প সংলগ্ন ফেনী নদী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধরা হলেন- বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র ও বারইয়ার হাট পৌর আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম খোকন (৪৮), হিঙ্গুলী ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা অশোক সেন (৪২) ও ওছমানপুর ইউনিয়ন যুবলীগ কর্মী সাহহেদ দুখু (৩৫)। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে মিরসরাই উপজেলার মস্তাননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে তাদের দুজনকে। একজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনার জন্য আহত পৌর মেয়র খোকনের অনুসারীরা ফেনীর ফাজিলপুর জেলা আঃলীগ নেতওইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি মজিবুল হক রিপন ও তার লোকজনদের দায়ী করেছেন। অপর দিকে ফাজিলপুর ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপন ঘটনার সাথে জড়িত নয় বলে দাবী করে উল্টো বারইয়ার হাট পৌর মেয়র খোকন কে দায়ী করেছেন।

এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘ দিন যাবৎ ফেনী ও মীরসরাই এলাকার দুটি গ্রুপ ফেনী নদীর বিভিন্ন স্পট ও কলমির নামক স্থান থেকে ভ্রাম্যমান ড্রেজার দিয়ে বালি তুলে অর্ধশতাধিক বোট দিয়ে বালি লুটে করে যাচ্ছেন। গত কয়েক দিন যাবৎ মিরসরাই উপজেলার বারইয়ার হাট পৌর মেয়র রেজাউল করিম খোকন ও ফেনীর ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম খোকন ও তাদের সমর্থকের মধ্যে প্রকাশ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ১৩ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে মেয়র খোকনের লোকজন বালি তুলতে গেলে রিপন চেয়ারম্যানের লোকজন দুটি বালিবাহী বোট আটকে রাখে। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে আরেকটি বোট যোগে মেয়র খোকন তার অনুসারীদের নিয়ে বোট দুটি ছাড়িয়ে আনতে গেলে আরেকটি বোটে থাকা রিপন চেয়ারম্যানের ১৫-২০জন সশস্ত্র অনুসারী এলোপাথাড়ি গুলি করলে বারইয়ার পৌর মেয়রসহ তার তিন অনুসারী গুলিবিদ্ধ হন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফাজিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুল হক রিপন বলেন, আমি এখানকার বৈধ ইজারাদার। আমার লোকজন গুলি করার প্রশ্নই ওঠেনা। বারইয়ারহাট পৌরসভার মেয়র খোকন অবৈধভাবে এখানে বালু তুলছেন। তিনি এসে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছেন। তারা তাদের নিজেদের গুলিতে আহত হয়েছে, কিন্তু তার দায়ভার আমার উপর চাপিয়ে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে চাইছে। সরকার আমাকে সোনাগাজীর থাক খোয়াজের লামছি ও কলমির চরে বৈধ ইজারা দিয়েছেন।

পৌর মেয়র খোকনের অনুসারী যুবলীগ নেতা রিয়াদ খান বলেন, ফেনী নদীর মিরসরাই অংশ সহ সোনাগাজীর অংশে ফাজিলপুর ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার লোকজন দীর্ঘ দিন যাবৎ ভ্রাম্যমান ড্রেজার ও বোট দিয়ে বালি লুট করে নিয়ে যাচ্ছেন। মিরসরাই এলাকার একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে মোটা বালি সরবরাহ করার জন্য বালি পরিদর্শণে গেলে মেয়র খোকন ও তার লোকজনের উপর রিপন চেয়ারম্যানের লোকজন হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথাড়ি গুলি করে। তাই তিনি রিপন চেয়ারম্যান ও তার অনুসারীদের দ্রুত গ্রেফতার দাবি করেন।

মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডা. মিনহাজ উদ্দিন জানান, রেজাউল করিম খোকনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছে। তিনি পেটে এবং শরীরের কয়েকটি স্থানে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি দুইজনের মধ্যে অশোক সেনকেও চমেকে পাঠানো হয়েছে। সাইদ খান দুখু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেই চিকিৎসাধীন।

সোনাগাজী মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ খালেদ হোসেন দাইয়্যান বলেন, ঘটনাটি শোনার পর তাৎক্ষণিক পুলিশ দল নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। কিন্তু ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া যায়নি।

জোরারগঞ্জ থানার ওসি নুর হোসেন মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, মেয়র রেজাউল করিম খোকনসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আমরা ঘটনাস্থলে আছি।

উল্লেখ্য; সোনাগাজীর কলমির চরের প্রায় চারশ একর জমি জবরদখল করে সোনাগাজী ও মিরসরাই উপজেলার বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ভূমি দস্যু মাছ চাষ করে আসছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম মনজুরুল হক বলেন, সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে মাছ চাষীদের এক সপ্তাহের মধ্যে চাষকৃত মাছ সরিয়ে নিতে আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে।

মফিজুর রহমান ফেনী

শেয়ার করুন