আদালতের নারী হাজত খানায় নারীর সাথে তুফানের সাক্ষাতের ঘটনায় বেড়িয়ে এলো আসল রহস্য

- আপডেট সময় : ০৯:৫৫:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫ ৮ বার পড়া হয়েছে

মিরু হাসান, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি
বগুড়া চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নারী হাজত খানায় আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী তুফান সরকারের সঙ্গে তার স্ত্রী, শাশুড়ী, শালিকা, শ্যালক ও তার আইনজীবী’র সহকারী দেখা করার ঘটনার বেড়িয়ে এলো আসল রহস্য।
এঘটনায় আদালত থেকে ঘটনার দিন প্রত্যাহার হওয়া এটিএসআই জয়নালের এক বক্তব্যতে উঠে এসেছে মূল রহস্য। এর আগেও বেশ কয়টি হাজিরাতে ওই একই রকম ঘটনার ছবি আশায় তা নিয়েই শুরু হয় অনুসন্ধান।
জানা যায়, ৩রা মার্চ সোমবার দুপুর আনুমানিক ২ টার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বগুড়ার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হোন সাংবাদিকরা। তারপর নারী হাজত খানায় হাতে নাতে ধরা পড়েন বগুড়ার কুখ্যাত সন্ত্রাসী শ্রমিকলীগ নেতা, ১৩ বছরের সাজাপ্রাপ্ত ও ধর্ষন মামলার আসামী তুফান সরকার। সেখানে আগে থেকে তুফানের জন্য অপেক্ষা করছিলেন তার স্ত্রী, শালিকা, শ্যালক, শাশুড়ী ও তার পক্ষের এক আইনজীবী’র সহকারী।
আদালতে ডিউটি করা নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক একজন পুলিশ সদস্য বলেন, কোর্ট ইন্সপেক্টর মোসাদ্দেক হোসেন, ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার বিনিময়ে নারী হাজত খানায় বিভিন্ন মানুষকে গোপন ভাবে দেখা করবার ব্যবস্থা করে দেন। নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক ওই পুলিশ সদস্য আরও বলেন, তুফানের সঙ্গে শুধু ওই দিনই যে তার পরিবার দেখা করেছে তা কিন্তু না। ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে এর আগেও বহুবার দেখা করেছে।
প্রত্যাহার হওয়া এটিএসআই জয়নাল বলেন, যেই সময়ে সাংবাদিকরা আদালতে উপস্থিত হয়, ওই সময় ইন্সপেক্টর মোসাদ্দেক আমাকে বলেন, ভিতরে কী হচ্ছে একটু দেখে আসো, আমি দেখতে গিয়ে ফেসে গেছি। সাধারণত অনেকেই টাকার মাধ্যমেই দেখা করে, টাকা ছাড়া ওখানে দেখা যায় না, খাবারও দেয়া যায় না। তুফান ভিআইপি আসামি, তুফানের থেকে অবশ্যই মোটা অংকের টাকা নিয়েছে। আমাকে বিনা অপরাধে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমার কাছে চাবিও ছিলো না, ইন্সপেক্টরের অনুমতি ছাড়া কখনোই এই ধরনের কাজ সম্ভব নয়। তিনি ই এসব কাজের মাস্টারমাইন্ড।
এদিকে কোর্ট ইন্সপেক্টর মোসাদ্দেক বলেন, আমি এই বিষয়ে কোন কথা বলতে চাইনা। আমি এখানে দীর্ঘদিন চাকরি করায় আমার শত্রু বেড়ে গেছে, তাই বিভিন্ন ধরনের মানুষ শত্রুতামূলক কথাবার্তা বলছেন আমার বিরুদ্ধে।
এঘটনায় জেলা পুলিশ বলছে, তুফানি এই কান্ডে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা হলেন, জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান, পুলিশ অফিসের কন্ট্রোল ইন্সপেক্টর জাহাঙ্গীর হোসেন এবং ডিআইও- ৩ (ডিএসবি) ইন্সপেক্টর হুমায়ুন কবীর।
তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) হোসাইন মোহাম্মদ রায়হান বলেন, তুফান কান্ডে একজন কে ইতিমধ্যেই প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করছি খুব শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।