কুড়িগ্রামের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারদের ৮ মাস ধরে বেতন বন্ধ

- আপডেট সময় : ০১:১৩:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫ ৬ বার পড়া হয়েছে

আনোয়ার সাঈদ তিতু,
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:-
টানা ৮ মাস ধরে বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় চরম অর্থসংকটে দিন কাটাচ্ছেন কুড়িগ্রামের ২৯৬টি কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা। অন্যদিকে, ক্লিনিকগুলোতে প্রয়োজনীয় ওষুধ সরবরাহও কমে গেছে। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন-ভাতার বিষয়টি বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
মাঠপর্যায়ে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রতিদিনই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোতে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ সাধারণ রোগের চিকিৎসা নিতে আসছেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা ওষুধের সংকটের মধ্যেও পরামর্শ ও চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
কুড়িগ্রামের দুর্গম চরাঞ্চল ও প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ২০০০ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে ২৯৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়। প্রতিটি ক্লিনিকে একজন করে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার নিয়োগ দেয়া হয়। এখান থেকেই সাধারণ রোগের চিকিৎসা ও বিনামূল্যে ওষুধ পেয়ে আসছেন স্থানীয়রা।
যাত্রাপুর এলাকার বাসিন্দা মোমেনা বেগম বলেন, ‘এই ক্লিনিকগুলো আমাদের জন্য আশীর্বাদ। এখান থেকে বিনামূল্যে ওষুধ পাই। কিন্তু যদি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে আমাদের হাসপাতালে যেতে হবে, যা কষ্টসাধ্য।’
২০২৪ সালের জুলাই থেকে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো প্রকল্প থেকে ট্রাস্টের আওতায় যাওয়ায় স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন বন্ধ হয়ে যায়। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। আসন্ন ঈদের আগেই বেতন পরিশোধের দাবি জানিয়েছেন তারা।
চর সিতাইঝাড় কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার রনজিনা বেগম বলেন, ‘৮ মাস ধরে বেতন পাচ্ছি না, খুব কষ্টে আছি। বাচ্চাদের স্কুলের বেতন দিতে পারছি না। দ্রুত আমাদের বকেয়া বেতনসহ নিয়মিত বেতন দেয়া হোক।’
কুড়িগ্রাম জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া অন্যান্য ওষুধ সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও স্বাস্থ্যকর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ না হওয়ায় বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
কুড়িগ্রামের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. আ ন ম গোলাম মোহাইমেন বলেন, ‘বেতন-ভাতা ছাড়াই মাসের পর মাস স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছেন, যা অমানবিক। আমরা বিষয়টি বারবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, যাতে দ্রুত সমাধান হয় এবং তারা ঈদের আগেই বেতন পান।’
কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলার মধ্যে চরাঞ্চলে রয়েছে ১১০টি কমিউনিটি ক্লিনিক। আগে ২৭ প্রকারের ওষুধ দেয়া হলেও এখন তা কমিয়ে ২২ প্রকার করা হয়েছে। বেতন-ভাতার সংকট এবং ওষুধের সরবরাহ কমে যাওয়ায় স্বাস্থ্যসেবার মানও ব্যাহত হচ্ছে।
সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা, স্বাস্থ্যকর্মীদের দ্রুত বেতন পরিশোধ করে স্বাস্থ্যসেবাকে সচল রাখা হোক।