রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে কোরআনের মাহফিল পন্ড।
- আপডেট সময় : ১১:২৪:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ অক্টোবর ২০২৪ ১০২ বার পড়া হয়েছে
দৌলতপুর প্রতিনিধি, কুষ্টিয়া।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে তারাগুনিয়া কাচারিপাড়া যুব সমাজের উদ্যোগে তাফসিরুল কোরআন মাহফিল এর আয়োজন করা হয়। মাহফিলের প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আল্লামা সাদিকুর রহমান আল- আজহারী , খতিব বায়তুল ওয়াদুদ জামে মসজিদ, মুগদা, ঢাকা । বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন , হাফেজ মাওলানা আসলাম উদ্দিন জিহাদি ,ঢাকা । প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলহাজ্ব মোঃ বিল্লাল হোসেন, সাবেক চেয়ারম্যান, ০৭ নম্বর হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ, দৌলতপুর। আলহাজ্ব খন্দকার আশরাফুজ্জামান এর সভাপতিত্বে বাদ এশা তাফসিরুল কোরআন মাহফিল এর মূল আলোচনা শুরু হয়। যথারীতি বিশেষ অতিথি হাফেজ মাওলানা আসলাম উদ্দিন জিহাদী তার আলোচনা শুরু করেন। তাফসীরুল কুরআন মাহফিলে বিশেষ বক্তা কুরআনের আলোচনা বাদ দিয়ে বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাজনৈতিক আলোচনা শুরু করেন। বিএনপিকে ফ্যাসিবাদ, চোর ,লুটেরা আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন , সদ্য আওয়ামী ফ্যাসিবাদ সরকার পতনের পর আরেক ফ্যাসিবাদ, চোর, লুটেরা মাথা চাঁড়া দিয়ে উঠেছে ,ইতিমধ্যে তারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি ও লুটতরাজ শুরু করেছে ,বিগত বিএনপি সরকারের আমলের সকল মেম্বার চেয়ারম্যানদের গম চোর আখ্যা দিয়ে বলেন আগামী দিন এই সকল গম চোর ও লুটতরাজের দলকে আমরা আর ক্ষমতার আসনে দেখতে চাই না।
পাশাপাশি তিনি একটি নির্দিষ্ট দলের প্রতি ইঙ্গিত করে সেই দলের পতাকা তলে সবাই কে আসার আহ্বান জানান। বিশেষ বক্তা কে মাহফিল কমিটি কয়েকবার অনুরোধ করেও এই ধরনের রাজনৈতিক বক্তব্য থেকে বিরত রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রধান অতিথি সাবেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বিশেষ বক্তার উদ্দেশ্যে বলেন , আপনি এখানে না আওয়ামীলীগ ,না বিএনপি, না জামায়াত শিবিরের বক্তা হিসেবে এসেছেন , আপনি এসেছেন তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে । সাবেক চেয়ারম্যান কোরআনের মাহফিলে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা এড়াতে কোন দলের সমালোচনা না করে কোরআন থেকে তাফসীর করার জোর আহ্বান করেন। কারণ এখানে সকল দলের সকল মতের মানুষ উপস্থিত আছেন।একপর্যায়ে মাহফিলে উপস্থিত পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের কট্টর সমর্থক আনিসুর রহমান ফুয়াদ চেয়ারম্যান কে উদ্দেশ্য করে বলেন আপনি আলোচনা বন্ধ করার কে ? এই আলোচনা চলবে। ফুয়াদ নিজে একজন আদম ব্যবসায়ী ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে বিদেশে মানুষ পাঠানোর নামে অনেকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার নানা অভিযোগ উঠেছে, তাই নিজেকে বাঁচানোর স্বার্থে এখন সে দৌলতপুর জামায়াতের একজন কর্মী দাবি করে। ফুয়াদেরে এমন আচরণে পাশে থাকা শ্রোতারা ফুয়াদের উপর চড়াও হলে চেয়ারম্যান বিল্লাল হোসেন মঞ্চ থেকে নেমে জটলার দিকে এগিয়ে যান। ঠিক তখনই প্রধান বক্তা আল্লামা সাদিকুর রহমান আল আজহারী মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে উপস্থিত জনতাকে উস্কিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে চেয়ারম্যানকে কটাক্ষ করে বলেন আপনাকে শ্রোতার গায়ে হাত তোলার ক্ষমতা কে দিয়েছে? জনতার কাছে আপনাকে ক্ষমা চাইতে হবে। প্রধান মেহমানের এহেন বক্তব্যে উপস্থিত জনতা আর উত্তেজিত হয়ে পড়লে আয়োজক কমিটি প্রধান বক্তা ও বিশেষ বক্তা কে নিরাপদে তাদের গাড়িতে উঠিয়ে দিয়ে মাহফিলের সমাপ্তি ঘোষনা করেন। এদিকে সাধারন মাহফিল প্রেমী জনতা আয়োজক কমিটির সমালোচনা করে বলেন তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে এই ধরনের বিশেষ ঘরনার বক্তা আনা ঠিক হয়নি।