ঢাকা ০৯:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবিসি ন্যাশনাল নিউজ২৪ ইপেপার

ব্রেকিং নিউজঃ
ঠাকুরগাঁওয়ে রানীশংকৈলের খুনিয়াদীঘি শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের উপর জুতা পরে হিরো আলমের টিকটক, ভিডিও সমালোচনার ঝড় ! ঠাকুরগাঁওয়ে ইএসডিও’র ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা — অংশীজনের প্রত্যাশা শীর্ষক সভা । চিলাহাটিতে নতুন রুপে যাত্রা শুরু করল ডিভাইন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ইপিল গাছ থেকে ডোমারে গৃহবধু দিশার মরদেহ উদ্ধার  নওহাটা পৌর বিএনপি’র কাউন্সিলে সভাপতি রফিক সম্পাদক পিটার নির্বাচিত তেঁতুলিয়ায় তথ্য অধিকার বাস্তবায়ন ও পরবীক্ষণ কমিটির সাথে তথ্য কমিশন বাংলাদেশের পরিচালকের মতবিনিময় সভা নিউজ পোর্টাল জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেন সাংবাদিক আরিফ মিরগন্জ ইউনিয়ন বিএনপির জনসসভা অনুষ্ঠিত।  ঈমানের অগ্নিপরীক্ষা! হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।  আদমদীঘিতে ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে গাছ কাটার অভিযোগ, প্রশাসন নীরব

গাংনীতে ভূয়া কৃষকদের মাঝে বীজ প্রদানের অভিযোগ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:২১:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ৯১ বার পড়া হয়েছে

মাজিদ আল মামুন
মেহেরপুর প্রতিনিধি

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ইমরান হোসেন যোগদান করার পর থেকে অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি বীজ ও সার সরবরাহ করে আসছেন। এছাড়াও কৃষকদের নামে ভূয়া প্রদর্শনী প্লটের নামে প্রকল্প দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ।
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে গাংনী উপজেলায় সরকারি প্রণোদনা হিসাবে খরিপ ২/ ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ২ হাজার কৃষকদের জন্য সরকারিভাবে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজ ও ১ হাজার কৃষকের জন্য মাসকলাইয়ের বীজ বরাদ্দ পেয়েছেন কৃষি অফিস।
জনপ্রতি ১ কেজি করে পেঁয়াজের বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার, ১০ কেজি এমওপি সার, এছাড়াও ১ হাজার কৃষকের জন্য মাসকলাইয়ের বীজ ও সার বরাদ্দ পেয়েছেন।
কৃষক পর্যায়ে জনপ্রতি মাসকলাই বীজ ৫ কেজি, ১০ কেজি ডিএপি সার ও ৫ কেজি এমওপি সার বরাদ্দ পেয়েছেন।
সেখানে গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন প্রকৃত
ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বীজ বিতরণ না করে ভূয়া কৃষকদের নামের তালিকা করে বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, যাদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করেছেন তারা কেউই প্রকৃত চাষি নয়।
যাদের মাঝে পেঁয়াজের বীজ দেওয়া হয়েছে তাদের মাধ্যে অধিকাংশ কৃষক পেঁয়াজের বীজ বোপণ না করে বীজ ও সার বাহিরে বিক্রয় করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, গাংনী উপজেলায় প্রায় ২৮ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রয়েছেন। এদের সকলেই গাংনী উপজেলার বাসিন্দা। শুধু তাই নয়, তিনারা প্রায় ৩০ বছর যাবৎ কৃষি অফিসে কর্মরত থেকে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে অফিস পরিচালনা করে আসছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মুজিবনগর সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন প্রদর্শনীতে নিম্নমানের বীজ সরবরাহ করে চাষিদের সাথে প্রতারণা করেছে ।
কৃষি অফিসের উপ-সহকারী (২৮) জন কর্মকর্তা সরকারের নিয়ম অনুযায়ী বিএডিসি কর্তৃক নতুন  উন্নত যাতের বীজ দিয়ে প্রদর্শনী প্লট তৈরী করার কথা থাকলেও নিম্নমানের পুরানো বীজ চাষিদের মাঝে দিয়ে কৃষকদের সাথে প্রতারণা করার অভিযোগ পাওয়া যায়।
গাংনী কৃষি অফিসে (২৮) জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রয়েছে যাদের সকলের বাড়ি গাংনী উপজেলায় হওয়ায় ইচ্ছেমত অফিসে আসেন ইচ্ছেমত বাড়িতে যান। এদিকে সঠিক সময়ে বীজ সরবরাহ না করায় ফলন বিপর্যয় হওয়ার আশংকা চাষিদের ।
অফিস ফাঁকি দিয়ে সারাদিন চায়ের দোকানে আড্ডাদেন আর হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করামাত্র চায়ের দোকানে বসে থাকেন। মাস শেষ হতে না হতে সরকারি বেতন নেন।
গাংনী উপজেলার সাহারবাটী ইউনিয়নের ধর্মচাকী গ্রামের চাষি সাইফুল ইসলাম, লিটন মাহমুদ ও শহিদুল ইসলাম জানান, আমাদের গ্রামে যাদের মাঝে পেঁয়াজের বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। তারা কেউই প্রকৃত চাষি না। সরকারি বীজ ও সার পাওয়ার সাথে সাথে বীজ ও সার বাহিরে বিক্রয় করেছেন।
আর মাসকলাইয়ের বীজ যাদের দিয়েছেন, তারা কেউই কৃষক না, বীজ সময় মত না দিয়ে অসময়ে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করেছেন। ফলে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন কমে যাবে। প্রকৃত কৃষকদের মাঝে বীজ সরবরাহ করা হলে গাংনী উপজেলায় পেঁয়াজের চাহিদা পূরণ হতো বলেও অনেকে জানান।
কৃষক সাইফুল ইসলাম আরও জানান,গত ২৫ বছরের মধ্যে গাংনী কৃষি অফিসের কোন কর্মকর্তাকে মাঠ তদারকি করতে দেখা যায়নি। তিনার আমাদের কোন পরর্মশও দেননি। যদি কৃষিবিদরা আমাদের পরার্মশ প্রদান করতো তাহলে আমাদের ধানক্ষেত ও গমক্ষেত বিনষ্ট হতো না। এধরনের কর্মকর্তা থাকার চেয়ে না থাকায় ভাল।
এব্যাপারে গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইমরান হোসেনের নিকট থেকে কৃষকদের নামের তালিকা চাইলে তিনি বলেন,ক্ষুদ্র প্রান্ত্রিক কৃষকদের নামের তালিকা তৈরি করা হয়নি।
নামের তালিকা তৈরি না করে কিভাবে সরকারি বীজ ও সার বিতরণ করেছেন। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে নামের তালিকা তৈরি করে আপনাদের দেওয়া হবে। তিনি অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করে পরে বলন,আপনাদের কোন তথ্য দেওয়া যাবেনা। তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করে তথ্য নিতে হবে।

 

শেয়ার করুন

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

গাংনীতে ভূয়া কৃষকদের মাঝে বীজ প্রদানের অভিযোগ

আপডেট সময় : ০৯:২১:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

মাজিদ আল মামুন
মেহেরপুর প্রতিনিধি

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ইমরান হোসেন যোগদান করার পর থেকে অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি বীজ ও সার সরবরাহ করে আসছেন। এছাড়াও কৃষকদের নামে ভূয়া প্রদর্শনী প্লটের নামে প্রকল্প দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ।
জানা গেছে, চলতি মৌসুমে গাংনী উপজেলায় সরকারি প্রণোদনা হিসাবে খরিপ ২/ ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক ২ হাজার কৃষকদের জন্য সরকারিভাবে গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজ ও ১ হাজার কৃষকের জন্য মাসকলাইয়ের বীজ বরাদ্দ পেয়েছেন কৃষি অফিস।
জনপ্রতি ১ কেজি করে পেঁয়াজের বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার, ১০ কেজি এমওপি সার, এছাড়াও ১ হাজার কৃষকের জন্য মাসকলাইয়ের বীজ ও সার বরাদ্দ পেয়েছেন।
কৃষক পর্যায়ে জনপ্রতি মাসকলাই বীজ ৫ কেজি, ১০ কেজি ডিএপি সার ও ৫ কেজি এমওপি সার বরাদ্দ পেয়েছেন।
সেখানে গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন প্রকৃত
ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বীজ বিতরণ না করে ভূয়া কৃষকদের নামের তালিকা করে বিনামূল্যে বীজ ও রাসায়নিক সার বিতরণ করেছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, যাদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ করেছেন তারা কেউই প্রকৃত চাষি নয়।
যাদের মাঝে পেঁয়াজের বীজ দেওয়া হয়েছে তাদের মাধ্যে অধিকাংশ কৃষক পেঁয়াজের বীজ বোপণ না করে বীজ ও সার বাহিরে বিক্রয় করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, গাংনী উপজেলায় প্রায় ২৮ জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রয়েছেন। এদের সকলেই গাংনী উপজেলার বাসিন্দা। শুধু তাই নয়, তিনারা প্রায় ৩০ বছর যাবৎ কৃষি অফিসে কর্মরত থেকে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে অফিস পরিচালনা করে আসছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
মুজিবনগর সমন্বিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন প্রদর্শনীতে নিম্নমানের বীজ সরবরাহ করে চাষিদের সাথে প্রতারণা করেছে ।
কৃষি অফিসের উপ-সহকারী (২৮) জন কর্মকর্তা সরকারের নিয়ম অনুযায়ী বিএডিসি কর্তৃক নতুন  উন্নত যাতের বীজ দিয়ে প্রদর্শনী প্লট তৈরী করার কথা থাকলেও নিম্নমানের পুরানো বীজ চাষিদের মাঝে দিয়ে কৃষকদের সাথে প্রতারণা করার অভিযোগ পাওয়া যায়।
গাংনী কৃষি অফিসে (২৮) জন উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা রয়েছে যাদের সকলের বাড়ি গাংনী উপজেলায় হওয়ায় ইচ্ছেমত অফিসে আসেন ইচ্ছেমত বাড়িতে যান। এদিকে সঠিক সময়ে বীজ সরবরাহ না করায় ফলন বিপর্যয় হওয়ার আশংকা চাষিদের ।
অফিস ফাঁকি দিয়ে সারাদিন চায়ের দোকানে আড্ডাদেন আর হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করামাত্র চায়ের দোকানে বসে থাকেন। মাস শেষ হতে না হতে সরকারি বেতন নেন।
গাংনী উপজেলার সাহারবাটী ইউনিয়নের ধর্মচাকী গ্রামের চাষি সাইফুল ইসলাম, লিটন মাহমুদ ও শহিদুল ইসলাম জানান, আমাদের গ্রামে যাদের মাঝে পেঁয়াজের বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। তারা কেউই প্রকৃত চাষি না। সরকারি বীজ ও সার পাওয়ার সাথে সাথে বীজ ও সার বাহিরে বিক্রয় করেছেন।
আর মাসকলাইয়ের বীজ যাদের দিয়েছেন, তারা কেউই কৃষক না, বীজ সময় মত না দিয়ে অসময়ে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করেছেন। ফলে দেশে পেঁয়াজের উৎপাদন কমে যাবে। প্রকৃত কৃষকদের মাঝে বীজ সরবরাহ করা হলে গাংনী উপজেলায় পেঁয়াজের চাহিদা পূরণ হতো বলেও অনেকে জানান।
কৃষক সাইফুল ইসলাম আরও জানান,গত ২৫ বছরের মধ্যে গাংনী কৃষি অফিসের কোন কর্মকর্তাকে মাঠ তদারকি করতে দেখা যায়নি। তিনার আমাদের কোন পরর্মশও দেননি। যদি কৃষিবিদরা আমাদের পরার্মশ প্রদান করতো তাহলে আমাদের ধানক্ষেত ও গমক্ষেত বিনষ্ট হতো না। এধরনের কর্মকর্তা থাকার চেয়ে না থাকায় ভাল।
এব্যাপারে গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইমরান হোসেনের নিকট থেকে কৃষকদের নামের তালিকা চাইলে তিনি বলেন,ক্ষুদ্র প্রান্ত্রিক কৃষকদের নামের তালিকা তৈরি করা হয়নি।
নামের তালিকা তৈরি না করে কিভাবে সরকারি বীজ ও সার বিতরণ করেছেন। এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অল্প সময়ের মধ্যে নামের তালিকা তৈরি করে আপনাদের দেওয়া হবে। তিনি অনিয়মের বিষয়টি অস্বীকার করে পরে বলন,আপনাদের কোন তথ্য দেওয়া যাবেনা। তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করে তথ্য নিতে হবে।

 

শেয়ার করুন