রাজবাড়ীর বহরপুরে বৃষ্টির জন্য সুন্নত আমল ইস্তিস্কা নামাজ আদায় করলেন হাজারো মুসল্লী
- আপডেট সময় : ০৮:৩১:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ১১৩ বার পড়া হয়েছে
ইস্তিস্কা’ শব্দের অর্থ পানির জন্য প্রার্থনা করা। খরা বা দাবদাহের অবস্থা থেকে নিষ্কৃতি পেতে আল্লাহ তাআলার কাছে তওবা করে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ে আকুতি ভরে বৃষ্টির জন্য দোয়া করা। এই নামাজকে ইস্তিস্কার নামাজ বলে। পরপর তিন দিন ইস্তিস্কার নামাজ পড়া সুন্নত। যদি ইতিমধ্যে বৃষ্টি হয়েও যায়, তবু তিন দিন করা উত্তম। এই তিন দিন নফল রোজা রাখা মুস্তাহাব।
সোমবার ২২ এপ্রিল রাজবাড়ী জেলার বালিয়াকান্দি থানার বহরপুর ইউনিয়নের বহরপুর মৃধার বটতলা ঈদগাহ ময়দানে এই নামাজের আয়োজন করা হয়।
হাজারো মুসল্লী দূর দূরান্ত থেকে এসে এই নামাজে অংশ গ্রহন করে। এই নামাজের উৎপত্তি সম্বন্ধে হয়রত আবদুল্লাহ ইবনে জায়েদ (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) নামাজের জন্য মাঠের দিকে বের হয়ে গেলেন, অতঃপর ইস্তিস্কা (আল্লাহর কাছে পানি তলব) করলেন। তিনি কিবলামুখী হলেন। তাঁর চাদর উল্টিয়ে পরলেন এবং দুই রাকাত নামাজ আদায় করলেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)।
তীব্র দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত তীব্র খড়ায় মাটি ফেটে চৌচির অনাবৃষ্টি ফলে নাভিশ্বাস তৈরি হয়েছে। সারা দেশে চলছে তীব্র দাবদাহ ও খরা। বিভিন্ন অঞ্চলে টিউবওয়েলে পানি উঠছে না গর্ভস্থ পানি লেয়ার নিচে নেমে গেছে। চারদিকি পানির জন্য হাহাকার। এক ফোটা বৃষ্টির আশায় মানবজাতির পাশাপাশি প্রহর গুনছে পশুপাখিরাও। কিন্তু বৃষ্টির দেখা মিলছে না। প্রতিদিনই তাপমাত্রা যেন বেড়েই চলছে।এই
অবস্থায় রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার বহরপুরে তীব্র দাবদাহ থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টির আশায় ইস্তিস্কার সুন্নত নামাজ আদায় করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী সাথে দূরদূরান্ত থেকে আসা মুসল্লীগন। উপজেলার বহরপুর ইউনিয়নের বহরপুর মৃধার বটতলা ঈদগাহ ময়দানে খোলা আকাশের নিচে এ নামাজ শেষে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে জলে জন্য চোখের জলে বুক ভাসালেন হাজারো মুসলিম।
বহরপুর মৃধার বটতলা ঈদগাহ ময়দানে দেখা যায়, বাদ যোহর নানা বয়সী মানুষ নামাজের জন্য মাঠে হাজির হয়েছেন। নামাজে প্রায় হাজারও মুসল্লি অংশ নেন। নামাজে ইমামতি করেন বহরপুর হাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মুফতি সাইফুল ইসলাম। ইমাম প্রথমে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে নামাজের নিয়মকানুন বলেন। এরপর দুই রাকাত নামাজ আদায় করেন সবাই। নামাজ শেষে খুতবা পাঠ করার পর দুই হাত তুলে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে , তীব্র তাপপ্রবাহ ও খরা থেকে রক্ষা পেতে বৃষ্টি চেয়ে দীর্ঘ সময় আল্লাহর কাছে মোনাজাত করেন। মোনাজাতের সময় অঝরে কান্না করছিলেন মুসল্লীগন।
স্থানীয় কয়েকজন মুসল্লী রাজবাড়ী সময় প্রতিনিধিকে বলেন, গরমে খুবই খারাপ অবস্থা। দীর্ঘদিন অনাবৃষ্টির কারণে মানুষ, পশুপাখি, গাছপালাসহ সবাই কষ্টে আছে।ও পুকুর নদীনালা খালবিল শুকিয়ে গেছে।কোথাও পানি মিলছে না। বৃষ্টিবাদল নেই মাটি ফেটে যাচ্ছে । তীবৃর তাপে ক্ষেতের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা ক্রমাগত বাড়ছেই। এ জন্য আমরা মহান আল্লাহর দরবারে প্রশান্তির বৃষ্টি চেয়েছি। যেকোনো বিপদ থেকে রক্ষা পেতে আমরা প্রথমেই আমরা মহান সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করি। এ নামাজ ও দোয়ার মধ্য দিয়ে সেই কাজটি করা হলো। নিশ্চয়ই আল্লাহ রহমতের বৃষ্টি বর্ষণ করবেন আশা করছি।
বহরপুর হাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ পেশ ইমাম ও খতিব মুফতি মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, অনাবৃষ্টি ও অতি তাপপ্রবাহের কারণে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। এই অবস্থায় আল্লাহর সাহায্য ছাড়া আমাদের উপায় নেই। তাই এই দাবদাহ থেকে মুক্তি পেতে বৃষ্টি লাভের আশায় রসূল (সা.) এর সুন্নত মেনে আমরা মহান সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে ইস্তিস্কার নামাজ আদায় করেছি। নামাজ শেষে আমরা মহান আল্লাহ পাকের দরবারে মাফ চেয়ে বৃষ্টির জন্য কান্নাকাটি করেছি।নিশ্চয়ই আল্লাহ রহমতের মালিক। আগামীকাল ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার এই একই স্হানে
বাদযোহর ইস্তেস্কার নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। সবাইকে শরীক হওয়ার জন্য আহ্বান জানান।