২৪ ঘন্টার মধ্যে কোতোয়ালী থানার নওমহলে সংঘটিত নৃশংস হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন
- আপডেট সময় : ১০:১৯:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ৩২ বার পড়া হয়েছে
মকবুল হোসেন ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি
আজ৭ডিসেম্বর শনিবার বিকেলে ময়মনসিংহ পুলিশ সুপার এর সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়।
গত ০৬/১২/২০২৪ তারিখ দুপুর ১৪:০০ ঘটিকায় কোতোয়ালী থানাধীন নওমহল এলাকার সারদা ঘোষ রোডস্থ নির্মাণাধীন ভবন টাওয়ার বিল্ডিং নং-৪৩-এর ৩য় তলায় একজন যুবকের মৃতদেহ পাওয়া গেছে মর্মে সংবাদ পেয়ে কোতোয়ালী থানার ৩নং ফাঁড়ির ইনচার্জ, অফিসার ইনচার্জ কোতোয়ালী মডেল থানা, জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ ও জেলার ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ভবনের নির্মাণ শ্রমিকদের ফোরম্যান রমজান আলী (২৪), পিতা-মোঃ রশিদুল ইসলাম, ঠিকানা-পূর্ব বরগ্রাম, কাশিনাথপুর, থানা-জলঢাকা, জেলা-নীলফামারী এর মৃতদেহ তার নিজ শয়নকক্ষে পাওয়া যায় এবং নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় যে, তার মাথায় ভারী ভোতা বস্তু দ্বারা উপর্যুপরি আঘাতে তার মুখমন্ডল ও মস্তকের ডান অংশ পুরোপুরি বিকৃত অবস্থায় রয়েছে। ঘটনাটি তৎক্ষণাৎ সমগ্র ময়মনসিংহ শহরে ব্যপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে।
সংবাদ প্রাপ্তির সাথে সাথে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দের নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা গোয়েন্দা শাখা ও কোতোয়ালী থানা পুলিশ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন ও হত্যাকারীকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে কার্যক্রম শুরু করে। ভবনের অপরাপর নির্মাণ শ্রমিকদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, ফোরম্যান হিসেবে দায়িত্বপালনকালে মৃত রমজান আলীর কাছে কতিপয় নির্মাণ শ্রমিকের মজুরী পাওনা ছিল। সেই আলোকে ঘটনাস্থল থেকে জব্দকৃত ভিকটিমের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে এবং ভবনের প্রবেশপথে স্থাপিত একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে নির্মাণাধীন ভবনে রডমিস্ত্রি হিসেবে কর্মরত মোঃ আমিনুর ইসলাম (২৫)-কে সন্দিগ্ধ হিসেবে সনাক্ত করা হয়। পরবর্তীতে জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জের নেতৃত্বে ডিবি ও কোতোয়ালী থানার একটি যৌথ আভিযানিক দল আজ ০৭/১২/২০২৪ তারিখ সকাল ০৭:০০ ঘটিকায় এই নারকীয় হত্যাকান্ড সংঘটনকারী আমিনুর ইসলামকে নরসিংদী জেলার সদর থানাধীন শাহপ্রতাপ মোড় এলাকার একটি ছাত্রাবাস থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী আমিনুর জানায় যে, গত অক্টোবর মাসে সে রংপুর থেকে ময়মনসিংহে এসে উক্ত ভবনে রডমিস্ত্রি হিসেবে কাজ শুরু করে। এই কাজে তাকে সহযোগিতা করার জন্য তার শশুর ও চাচা শশুরকে সে সাথে নিয়ে আসে। প্রথম দুই সপ্তাহ তাদেরকে নিয়মিত পারিশ্রমিক প্রদান করা হলেও বিগত প্রায় দেড়মাস যাবৎ তারা নিয়মিত পারিশ্রমিক পেত না। একপর্যায়ে তার শশুর ও চাচা শশুর পারিশ্রমিক না নিয়েই গ্রামের বাড়ি ফিরে যায় এবং গ্রামের আত্মীয় স্বজনের কাছে আমিনুরের সম্মানহানি হয়। এই ধারাবাহিকতায় গতকাল অনুমান ১২:১৫ ঘটিকায় মৃত রমজানের সাথে আমিনুরের তীব্র বাকবিতন্ডার একপর্যায়ে রমজান তাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করলে আমিনুর উত্তেজিত হয়ে মেঝেতে পড়ে থাকা ভারী লোহার রড দ্বারা রমজানের মাথায় স্বজোরে উপর্যুপরি আঘাত করে। মৃত্যু নিশ্চিত করার পর সে দ্রুত ঘটনাস্থল হতে পলায়ন করে প্রথমে ঢাকা এরপর নারায়ণগঞ্জ এবং অবশেষে নরসিংদী গমন করে।
ঘটনাস্থল থেকে রক্তমাখা লোহার রড জব্দ করা হয়।আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।