আনোয়ার সাঈদ তিতু,
কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
সীমানা থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে বৈঠক এবং আশ্বাসের পরেও বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ কর্তৃক নিরস্ত্র বাংলাদেশিদের গুলি করে হত্যার ঘটনা থামছে না। বিএসএফ কর্তৃক সীমান্ত হত্যা ‘শূন্যের কোঠায়’ নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি একের পর এক হত্যাকাণ্ডে অসার প্রমাণ হচ্ছে। সীমান্তে সব হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং সীমান্তহত্যা বন্ধের দাবিতে ‘মার্চ ফর ফেলানী’ যৌথ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় কুড়িগ্রাম শহরের কলেজমোড় থেকে জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার সীমান্তবর্তী রামখানা ইউনিয়নে ফেলানীর বাড়ি অভিমুখে এই পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবে সংগঠন দুটি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা শাখা থেকে জানানো হয়েছে, ফেলানীসহ সীমান্তে সব হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা বন্ধের দাবিতে ‘মার্চ ফর ফেলানী’ কর্মসূচি সফল করা হবে। এজন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কর্মসূচিতে জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ড. আতিক মুজাহিদ, মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় সদস্যসচিব আরিফ সোহেল, দফতর সম্পাদক জাহিদ আহসান ও সমন্বয়ক রিফাত রিদওয়ানসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফের গুলি এবং নির্যাতনে অন্তত ৩১৯ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আসক বলছে, ২০১১ সালে ২৪ জন, ২০১২ সালে ২৪ জন, ২০১৩ সালে ১৮ জন, ২০১৪ সালে ২৪ জন, ২০১৫ সালে ৩৮ জন, ২০১৬ সালে ২৫ জন, ২০১৭ সালে ১৭ জন, ২০১৮ সালে মাত্র ৩ জন নিহত হলে সীমান্তে হত্যা বন্ধের সম্ভাবনা দেখা যায় কিন্তু ২০১৯ সালে তা বেড়ে আবার ৩৪ জনে দাঁড়ায়। ২০২০ সালে ২৫ জন, ২০২১ সালে ১৮ জন, ২০২২ সালে ২৩ জন, ২০২৩ সালে ৩১ জন এবং ২০২৪ সালে ১৫ জন নিহতের তথ্য পাওয়া গেছে।
সীমান্তে প্রতিবছর বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি হত্যাকাণ্ড ঘটলেও সবচেয়ে আলোচিত ছিলও ২০১১ সালে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলা সীমান্তে বাংলাদেশি কিশোরী ফেলানী হত্যার ঘটনা। ওই বছরের ৭ জানুয়ারি ভোরে সীমান্তের কাঁটাতার পেরিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরার সময় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষের গুলিতে নিহত হয়ে কাঁটাতারে ঝুলে থাকে ১৫ বছর বয়সী ফেলানীর লাশ। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিষয়টি ফলাও করে প্রচার হলে প্রশ্নের মুখে পড়ে ভারতের ‘সীমান্ত নীতি’। এরপর অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্যের বিচারের নামে প্রহসনের আয়োজন করে ভারত। অন্যদিকে চলে একের পর সীমান্ত হত্যা। যা এই সময়ে এসেও চলমান রয়েছে।
২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে ভারতের ত্রিপুরায় থাকা ভাইকে দেখার জন্য মায়ের সঙ্গে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে কুলাউড়া সীমান্তে নিহত হয় ১৪ বছরের কিশোরী স্বর্ণা দাস। ফেলানি থেকে স্বর্ণা দাস এবং তার আগে ও পরে কোনও সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের বিচার করেনি ভারত সরকার। বরং একের পর এক সীমান্ত হত্যাকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে তাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী। রাষ্ট্রীয় কিংবা আন্তর্জাতিক কোনও বিধিনিষেধ তোয়াক্কা করছে না তারা।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক সব হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং হত্যা বন্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার ‘মার্চ ফর ফেলানী’ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে জুলাই অভ্যুত্থান সংশ্লিষ্ট সংগঠন দুটি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা শাখার আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ নাহিদ বলেন, ‘সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবিতে এই পদযাত্রা। কর্মসূচি সফল করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শহর থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে নাগেশ্বরীর সীমান্ত সংলগ্ন রামখানা দীঘির পাড় এলাকায় সমাবেশে মিলিত হবে। এরপর ফেলানী খাতুনের বাড়িতে যাবেন নেতৃবৃন্দ।’
Board of Directors of ABC National News : Chief Editor and Advisor-Adv Monir Uddin, Ex.Editor and Advisor-Lion Eng.Ashraful Islam, Ex.Editor-Lion Dr.Mana and Lion Palash, Acting Editor-Tawhid Sarwar, News Editor-Aftab Parvez,News Sub Editor-Pojirul Islam and
Co-Editor Siam and Neon.
Dhaka Office : 67/4,5 Chaya Neer, Shanti Bagh Dhaka 1212.