ঢাকা ০৮:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫, ২ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবিসি ন্যাশনাল নিউজ২৪ ইপেপার

রাণীনগরে স্মার্ট কার্ড বিতরণে চলছে নানা অনিয়ম

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৪:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৩ ২১৪ বার পড়া হয়েছে

 

নওগাঁ প্রতিনিধি:

নওগাঁর রাণীনগরে স্মার্ট কার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্র) বিতরণ নিয়ে চলছে নানা প্রকার হয়রানি। এক বা দুই নয়, সাতটি ইস্যুতে নাজেহাল স্মার্ট কার্ড সংগ্রহকারী সাধারণ মানুষ। কার্ড বিতরণে মাঠ নিয়েও চলছে অর্থ বাণিজ্য। হারানো কার্ডে সার্ভিস চার্জে গ্রাহককে গুনতে হচ্ছে বাড়তি পয়সা। এমনই নানা অভিযোগ ভুক্তভোগীরা করলেও এগুলো সঠিক না বলে দাবি করেছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলায় ১ লাখ ৩০ হাজার নাগরিকের মধ্যে স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু হয়েছে । ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে মিরাট ইউনিয়নের কার্ড বিতরণ চলছে ৮নং মিরাট ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে । কার্ড বিতরণের সময় প্রতিটি ভেন্যুতে একটি চক্র মোটা অঙ্কের টাকায় কন্ট্রাক্ট নিয়ে কার্ড নিতে আসা সাধারণ মানুষকে স্ক্যান, কালার ফটোকপি, লেমিনেটিংসহ অন্যান্য কাজ ওই মাঠে উপস্থিত লোকদের কাছ থেকেই করানোর জন্য বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই না, মাঠে গিয়ে এনআইডি নম্বর বা নাম দিয়ে একটি টোকেন নিতে হচ্ছে সকলকে। যা পরবর্তীতে লাইনে দাঁড়িয়ে নির্ধারিত বুথে গিয়ে দেখালে কার্ড দিয়ে দেয়া হয়। ওই টোকেনটি নিতেই এক শ’ টাকা জমা দিতে হচ্ছে মাঠে বসানো বিভিন্ন ডিভাইস পরিচালনাকারী লোকের কাছে। মজার বিষয় হলো কে বা কারা কার্ড বিতরণের আগেই স্থানীয়ভাবে মাঠ ইজারা নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে। তাদের লোকই ভোটার তালিকা থেকে নাম বের করার জন্য প্রতিজনের কাছ থেকে এক শ’ টাকা, ফটোকপি, লেমিনেটিংসহ অন্যান্য কাজে ৫০ থেকে এক শ’ টাকা পর্যন্ত একই সঙ্গে হারানো কার্ড ফেরত নিতে সরকারীভাবে ৩শ’ ৪৫ টাকা নির্ধারিত খরচ হলেও ভেন্যু থেকেই নেয়া হচ্ছে ৫শ’ ৬০ টাকা পর্যন্ত। এমনকি লাইনে দাঁড়ানো নিয়েও রয়েছে অর্থবাণিজ্য। কেউ যদি লাইনে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে না চান তাহলে টাকা দিলেই তার কার্ড ভেতর থেকে এনে নির্ধারিত গ্রাহকের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে বা হয়। এদিকে, ওই চক্রই আবার ইজিবাইক, সাইকেল ও ভ্রাম্যমাণ দোকান কোথায় কত টাকার বিনিময়ে বসবে তাও নিয়ন্ত্রণ করে। স্মার্ট কার্ড নিতে আসা ইউনিয়নের মিরাট গ্রামের সাথী রাণী বলেন, ২৭ জানুয়ারি তিনি তার স্মার্ট কার্ডটি সংগ্রহের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে এসে স্মার্ট কার্ড গ্রহণ করে বেরিয়ে আসার পর এক প্রকার জোর করে আমার স্মার্ট কার্ড স্ক্যান করে ১শত টাকা নেই। মিরাট হামিদপুর বরখৈল গ্রামের অনেকে এমন অভিযোগ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক জন জানান,নতুন চেয়ারম্যান বর্তমান নওগাঁ-৬ আসনের এমপির খুব কাছের।
আমরা জেনেছি এনআইডির অনলাইন টোকেন নিতে কোন অর্থ দিতে হয় না। কিন্তু চেয়ারম্যান তাঁর ছেলেদের দিয়ে বিশ টাকার বিনিময়ে চেয়ারম্যানের সিল সম্বলিত টোকেন নেওয়াতে বাধ্য করেছে।

মিরাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফেজ মো.জিয়ারুর রহমান জিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো.আব্দুল মমিন জানান, স্মার্ট কার্ড বিতরণে কোন ধরনের অনিয়ম হচ্ছে না। তিনি নিজে তদারকি করছেন। মাঠ অর্থ বাণিজ্যের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলেও মন্তব্য করেন। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত স্মার্ট কার্ড বিতরণ চলবে বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে হারানো কার্ড ফেরত প্রসঙ্গে জানান, ন্যাশনাল আইডি (এনআইডি) হারিয়ে গেলে নির্ধারিত ফি ৩শ’ ৪৫ টাকা নির্বাচন কমিশন বরাবর জমা দিয়ে থাকলে তার চালানকপি সংরক্ষণে রাখতে হবে। নির্ধারিত দিনে ওই ব্যক্তি নির্ধারিত স্পটে গিয়ে চালানের রশিদ জমা দিয়ে স্মার্টকার্ড গ্রহণ করতে পারবেন।

শেয়ার করুন

নিউজটি শেয়ার করুন

রাণীনগরে স্মার্ট কার্ড বিতরণে চলছে নানা অনিয়ম

আপডেট সময় : ০৬:৪৪:০৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৩

 

নওগাঁ প্রতিনিধি:

নওগাঁর রাণীনগরে স্মার্ট কার্ড (জাতীয় পরিচয়পত্র) বিতরণ নিয়ে চলছে নানা প্রকার হয়রানি। এক বা দুই নয়, সাতটি ইস্যুতে নাজেহাল স্মার্ট কার্ড সংগ্রহকারী সাধারণ মানুষ। কার্ড বিতরণে মাঠ নিয়েও চলছে অর্থ বাণিজ্য। হারানো কার্ডে সার্ভিস চার্জে গ্রাহককে গুনতে হচ্ছে বাড়তি পয়সা। এমনই নানা অভিযোগ ভুক্তভোগীরা করলেও এগুলো সঠিক না বলে দাবি করেছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলায় ১ লাখ ৩০ হাজার নাগরিকের মধ্যে স্মার্টকার্ড বিতরণ শুরু হয়েছে । ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে মিরাট ইউনিয়নের কার্ড বিতরণ চলছে ৮নং মিরাট ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে । কার্ড বিতরণের সময় প্রতিটি ভেন্যুতে একটি চক্র মোটা অঙ্কের টাকায় কন্ট্রাক্ট নিয়ে কার্ড নিতে আসা সাধারণ মানুষকে স্ক্যান, কালার ফটোকপি, লেমিনেটিংসহ অন্যান্য কাজ ওই মাঠে উপস্থিত লোকদের কাছ থেকেই করানোর জন্য বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই না, মাঠে গিয়ে এনআইডি নম্বর বা নাম দিয়ে একটি টোকেন নিতে হচ্ছে সকলকে। যা পরবর্তীতে লাইনে দাঁড়িয়ে নির্ধারিত বুথে গিয়ে দেখালে কার্ড দিয়ে দেয়া হয়। ওই টোকেনটি নিতেই এক শ’ টাকা জমা দিতে হচ্ছে মাঠে বসানো বিভিন্ন ডিভাইস পরিচালনাকারী লোকের কাছে। মজার বিষয় হলো কে বা কারা কার্ড বিতরণের আগেই স্থানীয়ভাবে মাঠ ইজারা নিচ্ছে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে। তাদের লোকই ভোটার তালিকা থেকে নাম বের করার জন্য প্রতিজনের কাছ থেকে এক শ’ টাকা, ফটোকপি, লেমিনেটিংসহ অন্যান্য কাজে ৫০ থেকে এক শ’ টাকা পর্যন্ত একই সঙ্গে হারানো কার্ড ফেরত নিতে সরকারীভাবে ৩শ’ ৪৫ টাকা নির্ধারিত খরচ হলেও ভেন্যু থেকেই নেয়া হচ্ছে ৫শ’ ৬০ টাকা পর্যন্ত। এমনকি লাইনে দাঁড়ানো নিয়েও রয়েছে অর্থবাণিজ্য। কেউ যদি লাইনে বেশিক্ষণ দাঁড়াতে না চান তাহলে টাকা দিলেই তার কার্ড ভেতর থেকে এনে নির্ধারিত গ্রাহকের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে বা হয়। এদিকে, ওই চক্রই আবার ইজিবাইক, সাইকেল ও ভ্রাম্যমাণ দোকান কোথায় কত টাকার বিনিময়ে বসবে তাও নিয়ন্ত্রণ করে। স্মার্ট কার্ড নিতে আসা ইউনিয়নের মিরাট গ্রামের সাথী রাণী বলেন, ২৭ জানুয়ারি তিনি তার স্মার্ট কার্ডটি সংগ্রহের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে এসে স্মার্ট কার্ড গ্রহণ করে বেরিয়ে আসার পর এক প্রকার জোর করে আমার স্মার্ট কার্ড স্ক্যান করে ১শত টাকা নেই। মিরাট হামিদপুর বরখৈল গ্রামের অনেকে এমন অভিযোগ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক জন জানান,নতুন চেয়ারম্যান বর্তমান নওগাঁ-৬ আসনের এমপির খুব কাছের।
আমরা জেনেছি এনআইডির অনলাইন টোকেন নিতে কোন অর্থ দিতে হয় না। কিন্তু চেয়ারম্যান তাঁর ছেলেদের দিয়ে বিশ টাকার বিনিময়ে চেয়ারম্যানের সিল সম্বলিত টোকেন নেওয়াতে বাধ্য করেছে।

মিরাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফেজ মো.জিয়ারুর রহমান জিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো.আব্দুল মমিন জানান, স্মার্ট কার্ড বিতরণে কোন ধরনের অনিয়ম হচ্ছে না। তিনি নিজে তদারকি করছেন। মাঠ অর্থ বাণিজ্যের বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলেও মন্তব্য করেন। আগামী ৪ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত স্মার্ট কার্ড বিতরণ চলবে বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে হারানো কার্ড ফেরত প্রসঙ্গে জানান, ন্যাশনাল আইডি (এনআইডি) হারিয়ে গেলে নির্ধারিত ফি ৩শ’ ৪৫ টাকা নির্বাচন কমিশন বরাবর জমা দিয়ে থাকলে তার চালানকপি সংরক্ষণে রাখতে হবে। নির্ধারিত দিনে ওই ব্যক্তি নির্ধারিত স্পটে গিয়ে চালানের রশিদ জমা দিয়ে স্মার্টকার্ড গ্রহণ করতে পারবেন।

শেয়ার করুন