বিএস বিদ্যুৎ, ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি
জবাবদিহিতার আওতায় আনা যায়নি ১১০০ অনুমোদনহীন সহযোগী রিক্রুটিং এজেন্সি
মালেয়েশিয়ায় শ্রমিক সংকটের জন্য অনুমোদিত ১০১টি রেক্রুটিং এজেন্সিকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা সম্ভব হলেও আড়ালে থেকে গেছে অনুমোদনহীন সহযোগী রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো। সংশ্লিষ্টদের গাফিলতিসহ নানা কারণে গত মে’ মাসে মালয়েশিয়ায় যেতে পারেনি প্রায় ১৭ হাজার শ্রমিক বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। তাদের পাওনা পরিশোধের জন্য ১০১টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। শ্রমিকদের পাওনার ইস্যুটি কাজে লাগিয়ে ইতোমধ্যে একটি অসাধুচক্র মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার ধ্বংস করার মিশনে নেমেছে। তারা বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। অথচ মালয়েশিয়া বর্তমানে রেমিটেন্স আহরণের দিক থেকে অষ্টম থেকে চতুর্থ অবস্থানে এসেছে। মালয়েশিয়ার জনশক্তি রপ্তানি সংশ্লিষ্টরা এসব তথ্য জানিয়েছেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩১ মে, মালয়েশিয়া সরকার বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে অনুমতি পাওয়া ১৬ হাজার ৯৭০ জন কর্মী মালয়েশিয়া যেতে পারেননি। অত:পর ০১ জুন ২০২৪ তারিখে মালয়েশিয়ায় কর্মী গমন বন্ধ হওয়ার পর ভিসা ও বিএমইট'র ছাড়পত্র প্রাপ্ত কর্মীদেরকে মন্ত্রণালয়ে নিবন্ধনের অনুরোধ জানানো হয়। এই প্রেক্ষিতে ০৪ হাজারের মতো কর্মী মন্ত্রণালয় ও বিএমইটি-তে রিপোর্ট করেন, তবে মন্ত্রণালয় ঘোষিত ভিসা ও বিএমইটি'র ছাড়পত্র প্রাপ্ত ১৭,০০০ কর্মীর তালিকা পাওয়া যায়নি। এছাড়াও স্বল্প সময়ের মধ্যে বহু সংখ্যক কর্মীর জন্য বিমান টিকেটের অপ্রাপ্যতা, সর্বশেষ মুহুর্তে কিছু নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মী নেওয়ার প্রচেষ্টা, ভিসা ইস্যুর ক্ষেত্রে Backlog সমস্যা, নিয়োগকারীর কাছ থেকে কর্মীদেরকে বিমান বন্দরে পৌছানোর পর রিসিভ করার নিশ্চয়তা না পাওয়া, কলিং ভিসার মেয়াদ বাড়লেও নির্ধারিত সময়সীমা বলবৎ রাখা, ৩০ মে, ২০২৪ তারিখ পর্যন্ত e-Visa এবং ছাড়পত্র প্রাপ্ত কর্মীদের সঠিক পরিসংখ্যান না পাওয়া, কালো তালিকাভূক্ত এবং সমস্যাগ্রস্ত কোম্পানিতে না পাঠানো প্রভৃতি কারণে বিএমইটি ছাড়পত্র প্রাপ্ত এসকল কর্মী ৩১, মে, ২০২৪ তারিখের মধ্যে মালয়েশিয়ায় গমন করতে পারেননি। উল্লেখ্য যে, বর্তমান ধাপে (২০২২-২৪) দু'দেশের সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সরকারি খাতের BOESL সহ ১০১টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে মালযেশিয়া সরকার সেদেশে কর্মী প্রেরণের অনুমোদন দিলেও অনুমোদন ছাড়া অবৈধ ১১০০ এর অধিক লাইসেন্সধারী রিক্রুটিং এজেন্সি অবৈধভাবে ভিসা ক্রয়-বিক্রয় বাণিজ্যে লিপ্ত থাকলেও তারাই ১০১টি রিক্রুটিং এজেন্সির উপর দোষ চাপিয়েছে এবং বিশেষত: প্রাথমিক পর্যায়ের ২৫টি এবং আরো সুনির্দিষ্টভাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী দুই-একজনকেই দোষারোপ করা হচ্ছে।
অর্থ ফেরতদের জন্য দুই দফা সময় বেঁধে দেওয়া হলেও অনেক শ্রমিক তাদের অর্থ বুঝে পাননি। বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, মালয়েশিয়া যেতে না পারা কর্মীদের সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সির দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। ১০১টি রেক্রুটিং এজেন্সি সরাসরি শ্রমিকদের কাছ থেকে অর্থ না নিয়ে সহযোগী রিক্রুটিং এজেন্সির নিকট থেকে অর্থ নিয়েছে। অর্থ ফেরত প্রক্রিয়ায় সহযোগী রিক্রুটিং এজেন্সি গুলোকে সম্পৃক্ত করা না গেলে শ্রমিকদের অর্থ ফেরত পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। ওই সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সহযোগী রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো মালয়েশিয়া যেতে না পারা শ্রমিকদের দায়-দেনা পরিশোধপূর্বক প্রমাণসহ সংশ্লিষ্ট ১০১টি রিক্রুটিং এজেন্সিকে অবহিত করবে। এছাড়া গত ২৬ সেপ্টেম্বর বহির্গমন ছাড়পত্র পাওয়া কর্মীদের দায়-দেনা পরিশোধের তথ্য ১০ অক্টোবরের মধ্যে নির্ধারিত ছকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেয় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা জানান শ্রমিকদের অর্থ ফেরত দেওয়া নিয়ে চরম নৈরাজ্য চলছে। এক শ্রেণীর দালাল শ্রমিকদেরকে নানামুখী প্রলোভন দিয়ে বিভিন্ন এজেন্সির কাছ থেকে অর্থ আদায় করে দেওয়ার কথা বলে রেকর্ডিং এজেন্সি মালিকদের হয়রানি করছে। অনেক ক্ষেত্রে বিএমইটি ও মন্ত্রণালয় কোন ধরনের তদন্ত ছাড়াই রিক্রুটিং এজেন্সি মালিকদের জরিমানা করছে বা লাইসেন্স স্থগিত করছে। একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক জানান,মালয়েশিয়াগামী শ্রমিকরা ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা করে দিয়েছে। এরমধ্যে মূল রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা গড়পড়তায় এক থেকে দেড় লাখ টাকা নিয়েছেন। বাকী চার হতে সাড়ে চার লাখ টাকা গেছে সহযোগী এজেন্সি ও দালালদের হাতে । এখন সব টাকা মূল রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে পরিশোধের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। এতে অনেক ব্যবসায়ী ব্যবসা গুটিয়ে পথে বসে গেছেন। তাছাড়া যারা মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য টাকা দিয়েছেন তারা টাকা দেওয়ার প্রমাণপত্র ছাড়াই টাকা দাবী করছেন। তাদের সঙ্গে একটি দালালচক্র তদন্ত ছাড়াই টাকা পরিশোধের জন্য রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকদের নির্দেশ দিচ্ছেন। মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা বলছেন “শ্রমিকরা অভিযোগ দিলেই টাকা দিয়ে দিতে হবে'। তবে টাকা লেনদেনের প্রমাণপত্র দাখিল করছে না।
মালয়েশিয়ার শ্রম বাজারে সংকটের নেপথ্যে আগে থেকেই এজেন্সিগুলো মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করছেন। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে সেই সমস্যা আরো প্রকট হয়ে উঠেছে। শ্রমিক সংকট তৈরির জন্য প্রায় সকল এজেন্সি মালিক মন্ত্রণালয়ের সচিব রুহুল আমিনের অদূরদর্শিতা, অযথা সময়ক্ষেপণ, আমলাতান্ত্রিক জটিলতা তৈরি করে সময় নষ্ট করাকে দায়ী করেন। গত বছরের ডিসেম্বরে তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পান মন্ত্রণালয়ে যোগ দিয়ে তিনি প্রায় দুই মাস মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ অনুমতি বন্ধ রাখেন। এতে বড় ধরনের জটিলতা তৈরি
Board of Directors of ABC National News : Chief Editor and Advisor-Adv Monir Uddin, Ex.Editor and Advisor-Lion Eng.Ashraful Islam, Ex.Editor-Lion Dr.Mana and Lion Palash, Acting Editor-Tawhid Sarwar, News Editor-Aftab Parvez,News Sub Editor-Pojirul Islam and
Co-Editor Siam and Neon.
Dhaka Office : 67/4,5 Chaya Neer, Shanti Bagh Dhaka 1212.
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার