এবিসি নিউজ ডেস্কঃ
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি যে অগ্নিসন্ত্রাস, নৈরাজ্যের পথ থেকে বের হয়নি, সেটির বহি:প্রকাশ তারা চট্টগ্রামে দেখিয়েছে। ঢাকায় খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলছেন তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করতে চান। আর অপরদিকে চট্টগ্রামে তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের নমুনা হচ্ছে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়িঘোড়া ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ।’
মঙ্গলবার ১৭ জানুয়ারি অপরাহ্নে সচিবালয়ে তথ্য অধিদফতর সম্মেলন কক্ষে মোনায়েম সরকার সম্পাদিত ‘আবদুল গাফফার চৌধুরী স্মারক গ্রন্থে’র মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন। শতাধিক গ্রন্থপ্রণেতা বিশিষ্ট রাজনীতিক ও বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর ডিভালপমেন্ট রিসার্চের মহাপরিচালক মোনায়েম সরকারের সভাপতিত্বে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান শরীফ, প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া, বাংলা টিভির চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ, আগামী প্রকাশনীর স্বত্ত্বাধিকারী ওসমান গণি, গ্রন্থটির সহ-সম্পাদক ড. দিনাক সোহানী ও অপূর্ব শর্মা বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা বারবার বলে আসছি, বিএনপি দেশে অশান্তি সৃষ্টির জন্যই সভা সমাবেশগুলো করছে। সেই সমাবেশের নামে যেহেতু তারা আবার অগ্নিসংযোগ শুরু করেছে, পুলিশের ওপর হামলা করছে এবং সে কারণে জনজীবন নিরাপত্তা বিঘিœত হচ্ছে, অতএব ভবিষ্যতে তাদের সমাবেশের ক্ষেত্রে আরো সতর্ক থাকতে হবে। তারা সমাবেশের কথা বলে আবার কি করে সেটি নিয়েও ভাবতে হবে, সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
‘বিএনপির রাজনীতি জনমুখী নয়, বিদেশিমুখী’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারা রাতের অন্ধকারে বিদেশি কূটনীতিকদের কাছে ছুটে যাওয়া, তাদের পদলেহন করা এই নীতি গ্রহণ করেছে। তবে এ সব করে কোন লাভ হয়নি সেটি তারা বুঝেছে যখন অতি সম্প্রতি মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে এসে বলে গেছেন যে বাংলাদেশে নিরাপত্তা বাহিনীর কাজের গুণগত উন্নতি হয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীকে সহায়তা করতে চায়, প্রশিক্ষণ দিতে চায়। এতে তাদের মাথাটা খারাপ হয়ে গেছে। ফলে এখন তারা আবোল-তাবোল বকা শুরু করেছে।’
বিএনপির ওপর দমন নিপীড়নের অভিযোগ খন্ডন করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার বিএনপির ওপর দমন নিপীড়ন চালাচ্ছে না। বিএনপিকে বলবো তারা যখন ক্ষমতায় ছিল, কি করেছিল সেটা দেখতে পেছনে তাকানোর জন্য। তারা অপারেশন ক্লিনহার্টের নামে ২০০২ সালে ডজন ডজন মানুষ হত্যা করেছিল, আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআই অফিসের মালামাল লুট করে সীল করে দিয়েছিল।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি আমাদের সমাবেশগুলোতে ভয়াবহ গ্রেনেড ও বোমা হামলা চালিয়ে বহু মানুষকে হতাহত করেছিল, আমাদের পার্টি অফিসের সামনে কাঁটাতারের বেড়া দিয়েছিল, রাসেল স্কয়ারে জ্যেষ্ঠ রাজনীতিক মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিমসহ বহু নেতা-কর্মীকে লাঠিপেটা করেছিল। কিন্তু তাদের কোনো অফিস তো সরকার বন্ধ করেনি, তাদের কোনো সমাবেশে হামলা হয়নি, ফখরুল-আব্বাস-মোশাররফ সাহেবদের গায়ে তো কোনো আঁচড়ও পড়েনি।’
এর আগে সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ‘আবদুল গাফফার চৌধুরী স্মারক গ্রন্থ’ প্রণয়নের জন্য সম্পাদক মোনায়েম সরকারকে ধন্যবাদ জানান। এ সময় প্রয়াত আবদুল গাফফার চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে মন্ত্রী বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জাতিসংঘের মাধ্যমে ২১ ফেব্রুয়ারি আজ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে অভিষিক্ত। আমাদের দুই প্রবাসী সালাম এবং রফিক এ বিষয়ে যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তা দ্রুততম সময়ে রাষ্ট্রের পক্ষে জাতিসংঘে পাঠিয়েছিলেন বিধায় ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’- আব্দুল গাফফার চৌধুরীর এই কালজয়ী গানটি বিশ্বময় নিজ নিজ ভাষায় গাওয়া হয়।'
সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, আব্দুল গাফফার চৌধুরী শুধু মাত্র গান রচনার মধ্যেই তার সৃজনশীল কর্মকান্ড সীমাবদ্ধ রেখেছেন তা নয়। তিনি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে কাজ করেছেন। স্বাধিকার আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর স্বাধীনতার চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে দেশকে যখন পশ্চাৎপদ করা হচ্ছিল, তখন আব্দুল গাফফার চৌধুরী কলম ধরেছেন।’
‘যে বা যারাই ক্ষমতায় থাকুক, যখনই কোনো অসংগতি দেখেছেন, সেটির ব্যাপারে আব্দুল গাফফার চৌধুরী কলম ধরেছেন, এমন কি আমাদের সরকারকে পরামর্শ দিতে গিয়ে কলম ধরেছেন, প্রয়োজনে আমাদের সমালোচনাও করেছেন’ বলেন ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘একজন কলমযোদ্ধা তেমনই হওয়া উচিত। তিনি তেমনই একজন মানুষ ছিলেন। তার মৃত্যুর এক বছরের মাথায় এই বইটি সম্পাদনা করার জন্য আমি মোনায়েম সরকারকে শ্রদ্ধা জানাই, সম্মান জানাই। বইয়ের সম্পাদনা পরিষদে যারা ছিলেন, তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। সুলতান শরীফ ভাইয়ের বয়স ৮৩ বছর। এখানে আসার জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। মোনায়েম সরকার দেখতে তরুণ কিন্তু বয়স মাত্র ৮০।’
বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন ফর ডিভালপমেন্ট রিসার্চের সহায়তায় আগামী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত ৪১৬ পৃষ্ঠার ‘আবদুল গাফফার চৌধুরী স্মারক গ্রন্থ’টিতে প্রায় ৮০টি নিবন্ধ, সাক্ষাৎকার, গাফফার চৌধুরীর কবিতা ও গল্প রয়েছে।
Board of Directors of ABC National News : Chief Editor and Advisor-Adv Monir Uddin, Ex.Editor and Advisor-Lion Eng.Ashraful Islam, Ex.Editor-Lion Dr.Mana and Lion Palash, Acting Editor-Tawhid Sarwar, News Editor-Aftab Parvez,News Sub Editor-Pojirul Islam and
Co-Editor Siam and Neon.
Dhaka Office : 67/4,5 Chaya Neer, Shanti Bagh Dhaka 1212.