বগুড়ায় টাকা ছিনতাইয়ের সাজানো নাটকে ফেঁসে গেল দুই বন্ধু
- আপডেট সময় : ০৯:২৬:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৩ ২২০ বার পড়া হয়েছে
শাহজাহান আলীঃ বগুড়া জেলা প্রতিনিধি,
বগুড়ার নন্দীগ্রামে ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের নাটক সাজিয়ে ফেঁসে গেল জিয়াউল হক জিয়া(৩৩) ও সোহেল রানা(৩০) নামের দুই বন্ধু। পরে
পুলিশের তদন্ত ও সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে ওই দুই বন্ধুকে আটক করে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন- বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলাধীন ভাটরা ইউনিয়নের বিলশা গ্রামের মোঃ ফজলুর রহমানের ছেলে জিয়াউর হক জিয়া ও বেলঘড়িয়া গ্রামের মোঃ মকবুল হোসেনের ছেলে সোহেল রানা। বৃহস্পতিবার পুলিশ তাদেরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে টাকা ছিনতাইয়ের সাজানো নাটকের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে।
১৩ জানুয়ারি(শুক্রবার) দুপুরে নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব,তথ্য জানান, তাদের বিরুদ্ধে শুক্রবার থানায় মামলা দায়ের করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর উপজেলার ষাঁড়বুরুজ গ্রামের ধান ব্যবসায়ী মিনার আলী।
প্রেস ব্রিফিংয়ে নন্দীগ্রাম থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন,
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ধান ব্যবসায়ী মিনার আলীর সঙ্গে নন্দীগ্রামের জিয়াউল হক ও তার বন্ধু সোহেল রানার দীর্ঘদিনের ধান ক্রয়-বিক্রয় ব্যবসা সংক্রান্তে সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ উপজেলা থেকে ধান ক্রয় করে তারা বিভিন্ন কোম্পানিতে সরবরাহ করতো। ব্যবসার লেনদেনের টাকা সোহেল রানার ইসলামী ব্যাংক নন্দীগ্রাম শাখার একাউন্টে পাঠানো হতো। এনিয়ে দুই বন্ধু জিয়াউল হক ও সোহেল রানা ব্যবসায়ী মিনার আলীর টাকা আত্মসাৎ করার ফন্দি পাকায়।
একপর্যায়ে গত বুধবার ধান ব্যবসায়ী মিনার আলীর কথামতো এরোমেটিক এগ্রো এন্ড ফুল লিমিটেডের মালিক ২১ লাখ টাকা পাঠিয়ে দেন সোহেল রানার একাউন্টে।
এটিকে মিনারের কথামতো ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা দুটি একাউন্টে পাঠায় সোহেল রানা। ধান ক্রয়ের জন্য বাকি ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নিয়ে যায় জিয়াউল হক ও তার বন্ধু সোহেল রানা।
ওই দিন সন্ধ্যায় মিনারকে ফোন করে সোহেল জানায়, ব্যাংক থেকে ফেরার পথে টাকাগুলো ছিনতাই হয়ে গেছে। ভাটরা ইউনিয়নের মকবুল মেম্বার থানায় ফোন করে জানায়, উপজেলার সিমলা বাজার থেকে এক কিলোমিটার পশ্চিমে থাজাগাড়ী ব্রীজ এলাকায় তার ছেলের ব্যবসায়ী পার্টনার জিয়াউল হক ডাকাতের কবলে পড়েছে এবং টাকাগুলো ছিনতাই করে নিয়ে গেছে।
ওসি আরও বলেন,সংবাদ পেয়ে পুলিশের চৌকস টিম তাৎক্ষনিক ঘটনা স্হলে গিয়ে আশপাশের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এতে প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি সাজানো নাটক হিসাবে সন্দেহ করে পুলিশ।
টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ নিয়ে বুধবার রাতেই থানায় আসে বেলঘড়িয়া গ্রামের জিয়াউল হক ও সোহেল রানা। অভিযোগে লিখেছিলো, ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে জিয়উল হক জিয়ার মোটরসাইকেল যোগে ফেরার পথে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তার পথে রোধ করে টাকার ব্যাগ ছিনতাই হয়। তবে জিয়া ও সোহেল ভেবে ছিলো,থানায় অভিযোগ করলেই পুলিশ তাদেরকে সন্দেহ করবে না। পৌরসভার সিসিটিভির ক্যামেরার ফুটেজ পর্য়বেক্ষণ করে টাকা ছিনতাই নাটকের রহস্য উন্মোচন হয়।
অবশেষে টাকা ছিনতাইয়ের নিজেদের সাজানো নাটকে নিজেরাই ফেঁসে গেল। তাদের দুজনের তথ্যের ভিত্তিতে পৌরসভার ওমরপুর এলাকার জনৈক ব্যক্তির বাড়ি থেকে ১৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। বাকি এক লাখ টাকা উদ্ধার করা সন্ভব হয়নি বলে জানেন ওসি।