ঢাকা ১১:৩৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবিসি ন্যাশনাল নিউজ২৪ ইপেপার

ব্রেকিং নিউজঃ
ঠাকুরগাঁওয়ে জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের বাসায় দুর্ধষ চুরি ! ঠাকুরগাঁওয়ে রানীশংকৈলের খুনিয়াদীঘি শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের উপর জুতা পরে হিরো আলমের টিকটক, ভিডিও সমালোচনার ঝড় ! ঠাকুরগাঁওয়ে ইএসডিও’র ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা — অংশীজনের প্রত্যাশা শীর্ষক সভা । চিলাহাটিতে নতুন রুপে যাত্রা শুরু করল ডিভাইন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ইপিল গাছ থেকে ডোমারে গৃহবধু দিশার মরদেহ উদ্ধার  নওহাটা পৌর বিএনপি’র কাউন্সিলে সভাপতি রফিক সম্পাদক পিটার নির্বাচিত তেঁতুলিয়ায় তথ্য অধিকার বাস্তবায়ন ও পরবীক্ষণ কমিটির সাথে তথ্য কমিশন বাংলাদেশের পরিচালকের মতবিনিময় সভা নিউজ পোর্টাল জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হলেন সাংবাদিক আরিফ মিরগন্জ ইউনিয়ন বিএনপির জনসসভা অনুষ্ঠিত।  ঈমানের অগ্নিপরীক্ষা! হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী। 

পাখিদের প্রতি অন্যরকম ভালোবাসা, ৫ বছর ধরে নিয়মিত খাবার খাওয়ান

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৪১:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৫ বার পড়া হয়েছে

 

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-

কুড়িগ্রাম জেলার সদর উপজেলার পৌরসভার বাসিন্দা প্রায় পাঁচ বছর ধরে নিয়মিত পাখিদের খাবার খাওয়ান মোঃ ফজলুল হক (৪৫)। মাত্র ১০ মিনিটের জন্য তার বাড়িতে বসে পাখির মেলা। প্রতিদিন সকালে কমলা, রুটি, চাল ও চানাচুর মিশ্রিত খাবার দিতে হয় পাখিদের। নানান জাত ও বর্ণের পাখির ক্ষুধা মেটাতে প্রস্তুত থাকেন ফজলুল। পাখির খাবার খাওয়ানোর এমন দৃশ্য দেখতে লোকজনও ছুটে আসে।

ফজলুল হক কুড়িগ্রাম পৌর শহরের পলাশবাড়ি কবিরাজ পাড়া এলাকার মোঃ নছের আলীর ছেলে।

তখন সকাল সাড়ে ৬টা। মোঃ ফজলুল হকের বাড়িতে কোনো পাখির দেখা নেই। ঠিক পাঁচ মিনিটের মধ্যে কোথা থেকে যেন হঠাৎ ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিরা উড়ে এসে অবস্থান নেয় বাড়ির চাল আর উঠানে। কিচিরমিচির শব্দে শুধু ফজলুল হকের ঘুম ভাঙে না, তিনি নিজেই বুঝতে পারেন সময় হয়েছে পাখিদের খাওয়ানো। ঘরে রাখা চানাচুর আর চালের মিশ্রিত খাবার হাতে নিয়ে বের হয়ে আসেন আঙিনায়। হাতের পাশে রাখা প্লাস্টিকের বয়াম থেকে পরিমাণ মতো খাবার ছিটিয়ে দেন মাটিতে। ১০ মিনিটের মধ্যে খাবার খেয়ে পাখিরা আবার উড়ে যায় অজানা গন্তব্যে। এভাবে নিয়ম করে প্রতিদিন শত শত পাখিদের খাওয়াচ্ছেন মোঃ ফজলুল হক।

তিনি বলেন, বছর চারেক আগে বাড়ির বারান্দায় বসে হাতে বানানো রুটি খাচ্ছিলাম। হঠাৎ দুটি কাক চলে আসে বারান্দায়। রুটির একটি অংশ ছুড়ে ফেলেন মাটিতে। নির্বিঘ্নে কাক দুটো খেয়ে চলে যায়। পরের দিন আমি আমার মতো করে ঘরে শুয়ে আছি। কাক দুটি আবার বারান্দায় এসে ডাক শুরু করে। পরে ঘর থেকে বের হয়ে কাক দুটিকে উড়ে যেতে সাড়া দেই। তারা উড়ে গিয়ে গাছের ডালে বসে ডাক শুরু করে দেয়। বুঝতে পারি ওদের খাবার দিতে হবে। ঘরে থাকা চাল ছিটিয়ে দিলে ওরা গাছ থেকে নেমে এসে খাবার খেতে শুরু করে। পরের দিন একইভাবে ৫-৭টি কাক উড়ে এসে খাবার খেয়ে যায়। পরে শুধু কাকই না, দোয়েল, কাঠ ঠোকরা, কয়েক জাতের সারস, বুলবুলিসহ অন্যান্য পাখিরা দলবদ্ধ হয়ে এসে খাবার খেয়ে যায়। এখন রোজ শতাধিক পাখিদের খাবার দিতে হচ্ছে। বাকিটা জীবন যেন এইভাবে পাখিদের খাওয়াতে পারি।

তিনি আরও বলেন, অন্যান্য পাখিরা চানাচুর খেতে পছন্দ করলেও শুধুমাত্র বুলবুলির জন্য আলাদাভাবে কমলা ফল কেটে দিতে হয়।

ফজলুল হকের স্ত্রী মোছাঃ শারমিন হক বলেন, বছরের পর বছর পাখিদের খাবার দিয়ে আসছেন তিনি। খাবার দিতে একটু দেরি হলে পাখিদের শোরগোল বেড়ে যায়। দ্রুত খাবার দিলে খাওয়া শেষমাত্র পাখিগুলো কোথায় যে চলে যায় জানা নেই। প্রথম দিকে বিরক্তিকর মনে হলেও এখন ওদের প্রতি আমারও মায়া জন্মেছে। ওদের খাবার দিতে পারলে শান্তি পাই।

স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ নুর ইসলাম বলেন, আমাদের গ্রামে অনেক মানুষের বসবাস। পাখিরা কেন যে ফজলুল হকের বাড়ি গিয়ে তার হাতের খাবার খায় জানি না। রোজ রোজ পাখিদের খাবার খাওয়ার দৃশ্য দেখতে খুব ভালো লাগে।

শেয়ার করুন

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

পাখিদের প্রতি অন্যরকম ভালোবাসা, ৫ বছর ধরে নিয়মিত খাবার খাওয়ান

আপডেট সময় : ০৯:৪১:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪

 

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-

কুড়িগ্রাম জেলার সদর উপজেলার পৌরসভার বাসিন্দা প্রায় পাঁচ বছর ধরে নিয়মিত পাখিদের খাবার খাওয়ান মোঃ ফজলুল হক (৪৫)। মাত্র ১০ মিনিটের জন্য তার বাড়িতে বসে পাখির মেলা। প্রতিদিন সকালে কমলা, রুটি, চাল ও চানাচুর মিশ্রিত খাবার দিতে হয় পাখিদের। নানান জাত ও বর্ণের পাখির ক্ষুধা মেটাতে প্রস্তুত থাকেন ফজলুল। পাখির খাবার খাওয়ানোর এমন দৃশ্য দেখতে লোকজনও ছুটে আসে।

ফজলুল হক কুড়িগ্রাম পৌর শহরের পলাশবাড়ি কবিরাজ পাড়া এলাকার মোঃ নছের আলীর ছেলে।

তখন সকাল সাড়ে ৬টা। মোঃ ফজলুল হকের বাড়িতে কোনো পাখির দেখা নেই। ঠিক পাঁচ মিনিটের মধ্যে কোথা থেকে যেন হঠাৎ ঝাঁকে ঝাঁকে পাখিরা উড়ে এসে অবস্থান নেয় বাড়ির চাল আর উঠানে। কিচিরমিচির শব্দে শুধু ফজলুল হকের ঘুম ভাঙে না, তিনি নিজেই বুঝতে পারেন সময় হয়েছে পাখিদের খাওয়ানো। ঘরে রাখা চানাচুর আর চালের মিশ্রিত খাবার হাতে নিয়ে বের হয়ে আসেন আঙিনায়। হাতের পাশে রাখা প্লাস্টিকের বয়াম থেকে পরিমাণ মতো খাবার ছিটিয়ে দেন মাটিতে। ১০ মিনিটের মধ্যে খাবার খেয়ে পাখিরা আবার উড়ে যায় অজানা গন্তব্যে। এভাবে নিয়ম করে প্রতিদিন শত শত পাখিদের খাওয়াচ্ছেন মোঃ ফজলুল হক।

তিনি বলেন, বছর চারেক আগে বাড়ির বারান্দায় বসে হাতে বানানো রুটি খাচ্ছিলাম। হঠাৎ দুটি কাক চলে আসে বারান্দায়। রুটির একটি অংশ ছুড়ে ফেলেন মাটিতে। নির্বিঘ্নে কাক দুটো খেয়ে চলে যায়। পরের দিন আমি আমার মতো করে ঘরে শুয়ে আছি। কাক দুটি আবার বারান্দায় এসে ডাক শুরু করে। পরে ঘর থেকে বের হয়ে কাক দুটিকে উড়ে যেতে সাড়া দেই। তারা উড়ে গিয়ে গাছের ডালে বসে ডাক শুরু করে দেয়। বুঝতে পারি ওদের খাবার দিতে হবে। ঘরে থাকা চাল ছিটিয়ে দিলে ওরা গাছ থেকে নেমে এসে খাবার খেতে শুরু করে। পরের দিন একইভাবে ৫-৭টি কাক উড়ে এসে খাবার খেয়ে যায়। পরে শুধু কাকই না, দোয়েল, কাঠ ঠোকরা, কয়েক জাতের সারস, বুলবুলিসহ অন্যান্য পাখিরা দলবদ্ধ হয়ে এসে খাবার খেয়ে যায়। এখন রোজ শতাধিক পাখিদের খাবার দিতে হচ্ছে। বাকিটা জীবন যেন এইভাবে পাখিদের খাওয়াতে পারি।

তিনি আরও বলেন, অন্যান্য পাখিরা চানাচুর খেতে পছন্দ করলেও শুধুমাত্র বুলবুলির জন্য আলাদাভাবে কমলা ফল কেটে দিতে হয়।

ফজলুল হকের স্ত্রী মোছাঃ শারমিন হক বলেন, বছরের পর বছর পাখিদের খাবার দিয়ে আসছেন তিনি। খাবার দিতে একটু দেরি হলে পাখিদের শোরগোল বেড়ে যায়। দ্রুত খাবার দিলে খাওয়া শেষমাত্র পাখিগুলো কোথায় যে চলে যায় জানা নেই। প্রথম দিকে বিরক্তিকর মনে হলেও এখন ওদের প্রতি আমারও মায়া জন্মেছে। ওদের খাবার দিতে পারলে শান্তি পাই।

স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ নুর ইসলাম বলেন, আমাদের গ্রামে অনেক মানুষের বসবাস। পাখিরা কেন যে ফজলুল হকের বাড়ি গিয়ে তার হাতের খাবার খায় জানি না। রোজ রোজ পাখিদের খাবার খাওয়ার দৃশ্য দেখতে খুব ভালো লাগে।

শেয়ার করুন