ঢাকা ০৩:৩৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবিসি ন্যাশনাল নিউজ২৪ ইপেপার

ব্রেকিং নিউজঃ
গীবত বা পরনিন্দা মহাপাপ কোরআন ও হাদীসের আলোকে: হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী। ঠাকুরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে চালকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মশালা । লালমনিরহাটে সাংবাদিকের উপর হামলাকারী মাইদুল গ্রেফতার চাঁদাবাজির মামলায় নিষিদ্ধ সংগঠনের ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার ঠাকুরগাঁওয়ে পীরগঞ্জে স্ত্রীর নির্যাতন মামলায় উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার বরখাস্ত ! কাজী আখতার উল আলম ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান ১০ বছরের জন্য এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের বরাদ্দ পেল বাফুফে ইজতেমার উদ্দেশে যাওয়ার পথে কুড়িগ্রাম ব্রহ্মপুত্রে নৌ-ডাকাতি ঠাকুরগাঁওয়ে জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের বাসায় দুর্ধষ চুরি ! ঠাকুরগাঁওয়ে রানীশংকৈলের খুনিয়াদীঘি শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের উপর জুতা পরে হিরো আলমের টিকটক, ভিডিও সমালোচনার ঝড় !

পবিত্র জুমাতুল বিদার ফজিলত ও গুরুত্ব

হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী ছাহেব
  • আপডেট সময় : ০৭:৪৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ এপ্রিল ২০২৪ ৩০০ বার পড়া হয়েছে

 

বিদায় নিচ্ছে মহিমান্বিত মেহমান। চলে যাচ্ছে পবিত্র দিনগুলো। আজ রমজান মাসের শেষ শুক্রবার। মুসলিম উম্মাহর কাছে এটি একটি পবিত্র দিন।

রমজানের শেষ জুমাকে বলা হয় জুমাতুল বিদা। জুমাতুল বিদা রোজাদারকে স্মরণ করিয়ে দেয়, রমজানের শেষলগ্নে এর চেয়ে ভালো কোনো দিন আর পাওয়া যাবে না। সুতরাং এ পুণ্যময় দিনটির যথাযথ সদ্ব্যবহার করা উচিত।

রমজানের শেষ জুমা হিসাবে মুসলিম উম্মাহর কাছে দিনটির বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে। জুমার দিনের স্বতন্ত্র ফজিলত অনেক বেশি। রমজানের প্রতিটি জুমার ফজিলত ও তাৎপর্যের দিক থেকে অনন্য।

রমজান ও রোজার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল মানুষের মাঝে তাকওয়া বা খোদাভীতির যোগ্যতা অর্জন করানো। আমরা রমজানে একমাত্র আল্লাহর নির্দেশে দিনে হালাল এবং পবিত্র জিনিসগুলোও বর্জন করেছি, তাহলে ওই আল্লাহর হুকুম অমান্য করে রমজানের বাইরের দিনগুলোয় কীভাবে গুনাহে লিপ্ত হব? আল্লাহকে অসন্তুষ্টকারী কাজকর্ম কেন করে বেড়াব? কেন আমরা মিথ্যা বলব? কেন আমরা মিথ্যা সাক্ষ্য দেব? কেন আমরা মানুষের মনে কষ্ট দেব? কেন অপরের হক নষ্ট করব? কেন মানুষের অধিকার হরণ করব? কেন জুলুম করব? কেন আমরা অন্যের রক্ত ঝরাব? কেন হিংসা করব? কেন অহংকার করব? কেন দুজন দিয়ে ঝগড়া বিবাদ করাব? মোটকথা, যত খারাপ বিষয় আছে, যেন সেসব অন্যায় ও গুনাহ থেকে বাঁচার অভ্যাস, ধ্যান-খেয়াল এবং গুরুত্ব সৃষ্টি হয়ে যায়-এটিই তাকওয়া।

জুমার দিন মুমিন মুসলমানদের ইমানি সম্মেলন হয়। এ দিনের তাৎপর্য বর্ণনা করে নবিজি (সা.) বলেছেন, সপ্তাহের সাত দিনের মধ্যে জুমাবার সর্বাধিক মর্যাদাবান ও নেতৃস্থানীয় দিন। এ পুণ্য দিনে আদি পিতা হজরত আদমকে (আ.) সৃষ্টি করা হয়। একই দিনে তিনি জান্নাতে প্রবেশ করেন। আবার পুনরায় পৃথিবীতে আগমন করেন। এ দিনে তার ইন্তেকাল হয়। এ শুক্রবারেই কেয়ামত সংঘটিত হবে।

এ পুণ্য দিনে এমন একটি সময় রয়েছে, যখন আল্লাহর দরবারে দোয়া কবুল হয়। (মিশকাত) রমজান মাসের শেষ শুক্রবার হজরত সুলায়মান (আ.) জেরুজালেম নগরী প্রতিষ্ঠা করেন এবং মুসলমানদের প্রথম কিবলা ‘মসজিদ আল-আকসা’ প্রতিষ্ঠা করেন বলে ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়। এ জন্য প্রতি বছর সারা বিশ্বের মুসলমানরা রমজান মাসের শেষ শুক্রবার ‘আল কুদস’ দিবস হিসাবে উদযাপন করেন।

জুমাতুল বিদার বিশাল জামাতে আমাদের দেশের বিভিন্ন মসজিদে হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করে থাকেন। তাই ওই দিনের দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আর সাধারণ জুমার দিনেই সেখানে নির্দিষ্ট মুহূর্ত যে কোনো দোয়া করা হয়ে থাকে, সেখানে জুমাতুল বিদায় তো এ ফজিলত আরও উন্মুক্ত হওয়াই যুক্তিযুক্ত। রমজান মাসে প্রতিদিন ইফতারপূর্ব সময়ে আল্লাহতায়ালা ৭০ হাজার গুণাহগারকে ক্ষমা করে দেন।

এ হিসাবে সমগ্র রমজানে যেই পরিমাণ গুনাহগারকে ক্ষমা করা হয় শুধু জুমাতুল বিদা তথা আখেরি জুমায় সেই সংখ্যক ব্যক্তিকে ক্ষমা করা হয়।

তাই এ দিনে উচিত প্রত্যেক রোজাদার আল্লাহর কাছে প্রাণ খুলে প্রার্থনা করা, ক্ষমা আদায় করা। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা আমাদের সব গুনাহ ক্ষমা করে দিন। আমিন।

লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী ছাহেব।

শেয়ার করুন

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

পবিত্র জুমাতুল বিদার ফজিলত ও গুরুত্ব

আপডেট সময় : ০৭:৪৫:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৫ এপ্রিল ২০২৪

 

বিদায় নিচ্ছে মহিমান্বিত মেহমান। চলে যাচ্ছে পবিত্র দিনগুলো। আজ রমজান মাসের শেষ শুক্রবার। মুসলিম উম্মাহর কাছে এটি একটি পবিত্র দিন।

রমজানের শেষ জুমাকে বলা হয় জুমাতুল বিদা। জুমাতুল বিদা রোজাদারকে স্মরণ করিয়ে দেয়, রমজানের শেষলগ্নে এর চেয়ে ভালো কোনো দিন আর পাওয়া যাবে না। সুতরাং এ পুণ্যময় দিনটির যথাযথ সদ্ব্যবহার করা উচিত।

রমজানের শেষ জুমা হিসাবে মুসলিম উম্মাহর কাছে দিনটির বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে। জুমার দিনের স্বতন্ত্র ফজিলত অনেক বেশি। রমজানের প্রতিটি জুমার ফজিলত ও তাৎপর্যের দিক থেকে অনন্য।

রমজান ও রোজার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল মানুষের মাঝে তাকওয়া বা খোদাভীতির যোগ্যতা অর্জন করানো। আমরা রমজানে একমাত্র আল্লাহর নির্দেশে দিনে হালাল এবং পবিত্র জিনিসগুলোও বর্জন করেছি, তাহলে ওই আল্লাহর হুকুম অমান্য করে রমজানের বাইরের দিনগুলোয় কীভাবে গুনাহে লিপ্ত হব? আল্লাহকে অসন্তুষ্টকারী কাজকর্ম কেন করে বেড়াব? কেন আমরা মিথ্যা বলব? কেন আমরা মিথ্যা সাক্ষ্য দেব? কেন আমরা মানুষের মনে কষ্ট দেব? কেন অপরের হক নষ্ট করব? কেন মানুষের অধিকার হরণ করব? কেন জুলুম করব? কেন আমরা অন্যের রক্ত ঝরাব? কেন হিংসা করব? কেন অহংকার করব? কেন দুজন দিয়ে ঝগড়া বিবাদ করাব? মোটকথা, যত খারাপ বিষয় আছে, যেন সেসব অন্যায় ও গুনাহ থেকে বাঁচার অভ্যাস, ধ্যান-খেয়াল এবং গুরুত্ব সৃষ্টি হয়ে যায়-এটিই তাকওয়া।

জুমার দিন মুমিন মুসলমানদের ইমানি সম্মেলন হয়। এ দিনের তাৎপর্য বর্ণনা করে নবিজি (সা.) বলেছেন, সপ্তাহের সাত দিনের মধ্যে জুমাবার সর্বাধিক মর্যাদাবান ও নেতৃস্থানীয় দিন। এ পুণ্য দিনে আদি পিতা হজরত আদমকে (আ.) সৃষ্টি করা হয়। একই দিনে তিনি জান্নাতে প্রবেশ করেন। আবার পুনরায় পৃথিবীতে আগমন করেন। এ দিনে তার ইন্তেকাল হয়। এ শুক্রবারেই কেয়ামত সংঘটিত হবে।

এ পুণ্য দিনে এমন একটি সময় রয়েছে, যখন আল্লাহর দরবারে দোয়া কবুল হয়। (মিশকাত) রমজান মাসের শেষ শুক্রবার হজরত সুলায়মান (আ.) জেরুজালেম নগরী প্রতিষ্ঠা করেন এবং মুসলমানদের প্রথম কিবলা ‘মসজিদ আল-আকসা’ প্রতিষ্ঠা করেন বলে ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়। এ জন্য প্রতি বছর সারা বিশ্বের মুসলমানরা রমজান মাসের শেষ শুক্রবার ‘আল কুদস’ দিবস হিসাবে উদযাপন করেন।

জুমাতুল বিদার বিশাল জামাতে আমাদের দেশের বিভিন্ন মসজিদে হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করে থাকেন। তাই ওই দিনের দোয়া আল্লাহর দরবারে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

আর সাধারণ জুমার দিনেই সেখানে নির্দিষ্ট মুহূর্ত যে কোনো দোয়া করা হয়ে থাকে, সেখানে জুমাতুল বিদায় তো এ ফজিলত আরও উন্মুক্ত হওয়াই যুক্তিযুক্ত। রমজান মাসে প্রতিদিন ইফতারপূর্ব সময়ে আল্লাহতায়ালা ৭০ হাজার গুণাহগারকে ক্ষমা করে দেন।

এ হিসাবে সমগ্র রমজানে যেই পরিমাণ গুনাহগারকে ক্ষমা করা হয় শুধু জুমাতুল বিদা তথা আখেরি জুমায় সেই সংখ্যক ব্যক্তিকে ক্ষমা করা হয়।

তাই এ দিনে উচিত প্রত্যেক রোজাদার আল্লাহর কাছে প্রাণ খুলে প্রার্থনা করা, ক্ষমা আদায় করা। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা আমাদের সব গুনাহ ক্ষমা করে দিন। আমিন।

লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী ছাহেব।

শেয়ার করুন