মোঃ খাদেমুল ইসলাম,
পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি :
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় যে কয়েকটি নদীতে নুড়ি পাথর পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম ডাহুক নদী৷ গত কয়েক বছর আগে সমতল ভূমি থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেলে বেকার হয়ে পড়ে কয়েক হাজার পাথর শ্রমিক৷ অনেকেই বাধ্য হয়ে পরিবর্তন করেছেন পেশা৷ তবে শ্রমিকদের একটি বড় অংশকে টিকিয়ে রেখেছে ডাহুক নদীর নুড়ি পাথর৷ কারন এই নদী থেকে ভেসে আসা নুড়ি পাথর উত্তোলন করে কোন রকম সংসার চালাচ্ছেন উপজেলার কয়েক হাজার পাথর শ্রমিক৷ তবে হঠাৎ করে পাথর উত্তোলনে প্রশাসন কতৃক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় বেকার হওয়ার পথে এই সাধারণ শ্রমিকরা৷
এদিকে সেই নদীতে সনাতন পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলনের দাবীতে বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের কালিতলা ডহুক সেতু সংলগ্ন সড়ক এলাকায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে স্থানীয় পাথর উত্তোলন শ্রমিকরা৷ এসময় তারা সড়ক অবরোধ করে সড়কের উপর সমাবেশ করেন৷ এতে শালবাহান-হারাদিঘী পাকা সড়কে আটকে থাকে বিভিন্ন যানবাহন৷
এদিকে সাধারন শ্রমিকরা বলছেন, এক সময় তেঁতুলিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সমতল ভূমি থেকে সনাতন পদ্ধতিতে প্রচুর পরিমাণে পাথর উত্তোলন হতো। এতে কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছিল কয়েক হাজার মানুষের৷ তবে একি ক্রচক্রি মহল অবৈধ ভাবে ডেজার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করার কারণে বন্ধ হয়ে যায় পাথর উত্তোলন। এতে বেকার হয়ে পড়ে উপজেলার হাজার হাজার পাথর শ্রমিক। তবে পাথর উত্তোলন বন্ধ হলেও সরকার কর্তৃক শ্রমিকদের জন্য করা হয়নি কোন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা৷ তবে শ্রমিকরা বাধয় হয়ে পরবর্তীতে নদীতে ডুবে ডাকি কোদাল দিয়ে পাথর তোলে কোন রকম করে চালাচ্ছে৷ আর এভাবে কয়েক বছর ধরে ডাহুক নদীর বিভিন্ন স্থানে এসব গরীব শ্রমিকরা দল বেধে পাথর উত্তোলন করে সংসার চালাচ্ছে। তবে হঠাং করে প্রশাসন কতৃক পাথর উত্তোলন নিষেধাজ্ঞা জারি করায় পাথর উত্তোলন করতে পারছে না শ্রমিকরা। ফলে বেকার হওয়ার পথে তারা৷ তাই তারা নদী থেকে পাথর উত্তোলনের দাবী জানান।
এদিকে স্থানীয় প্রশাসন বলছেন দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী পাথর মহাল ব্যতিত কোথাও পাথর উত্তোলনে নিয়ম কানুন নেই। এছাড়া ডাহুক নদীর দুটি সেতু সংলগ্ন স্থানে পাথর উত্তোলনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সেতু।
সরকার কর্তৃক সারাদেশে পাথর উত্তোলনের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে৷ তবে সাধারণ শ্রমিকরা ডাহুক নদীর দুই সেতুর কাছাকাছি পাথর উত্তোলনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে নদীর উপর নির্মান সেতু৷
এবিষয়ে পাথর শ্রমিক নেতা হারুন অর রশিদ বলেন,আমরা গরীব মানুষ। নদীতে যে পাথর ভেসে আসে সেই পাথর উত্তোলন করে কোন রকম জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্তু পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেলে আমার না খেয়ে মরে যাবো।
একই কথা বলেন জরিফুল ইসলাম নামে আরেক পাথর শ্রমিক,আজকে আমরা সড়কে বসেছি কাজের জন্য। আমরা কাজ চাই। কাজ করে সংসার চালাতে চাই। আমরা পাথর উত্তোলন করতে চাই। প্রশাসন যেন আমাদের সহযোগিতা করেন।
শ্রমিক নেতা মস্তানসের বলেন,আমরা সরকারের সব নিয়মকানুন মেনেই পাথরের উত্তোলন করি। আমাদের পাথরে উত্তলোন যেন বন্ধ হয় তাই একটি মহল কাজ করছে। আমরা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ করবো আমরা গরীব মানুষরা যেভাবে নদীতে পাথর উত্তোলন করে আসছি। সেই ভাবে যেন করে যেতে পারি। সরকারের কাছে দাবি জানাবো আমাদের সাধারণ শ্রমিকদের মুখের আহার আপনারা এভাবে কেড়ে নিয়েন না।
এদিকে তেঁতুলিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও শ্রমিক নেতা মুক্তারুল হক বলেন,তেঁতুলিয়ার হাজার হাজার পাথর শ্রমিক সমতল ভূমিতে পাথরে উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করতো। কিন্তু সমতল ভূমিতে পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়ে যাওয়ার তারা নদীতে পাথর উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করছেন৷ আর এই নদীরে পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়ে গেলে আমার শ্রমিকরা না খেয়ে মরে যাবে। তাই আমরা সরকারের কাছে অনুরোধ করছি শ্রমিকরা যেন আগের মত পাথর উত্তোলন করতে পারে৷
এদিকে তেতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফজলে রাব্বি জানান, পাথর শ্রমিকরা সনাতন পদ্ধতিতে পাথর করার দাবীতে একটি স্মারক লিপি জমা দিয়েছে বলে তারা জানিয়ছে। আমি বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
Board of Directors of ABC National News : Chief Editor and Advisor-Adv Monir Uddin, Ex.Editor and Advisor-Lion Eng.Ashraful Islam, Ex.Editor-Lion Dr.Mana and Lion Palash, Acting Editor-Tawhid Sarwar, News Editor-Aftab Parvez,News Sub Editor-Pojirul Islam and
Co-Editor Siam and Neon.
Dhaka Office : 67/4,5 Chaya Neer, Shanti Bagh Dhaka 1212.
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার