চাঁপাইনবাবগঞ্জে বোমা হামলা করে লুটপাট ও বিল দখলের চেষ্টা
- আপডেট সময় : ০৭:১৪:৪১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪ ২৯ বার পড়া হয়েছে
মাহিদুল ইসলাম ফরহাদ
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মোনাকষা ইউনিয়নের কুমিরাদহ বিল দখলের চেষ্টায় প্রকাশ্যে বোমাবাজির ঘটনায় অস্থির হয়ে উঠেছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। গত (৮ অক্টোবর) দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলার মোনাকষা ইউনিয়নের কুমিরাদহ বিল দখলের চেষ্টায় প্রায় ৪০টি বোমা ফাটান, কাইয়ুম রেজা চৌধুরীর লোকজন এবং অনেক গুলো অবিস্ফরিত বোমা উদ্ধার করেছেন আইন শৃংখলা বাহিনী বলে দাবি করেছেন বিলের ইজারাদার আলফাজ উদ্দিন।
এবিষয়ে কাইয়ুম রেজা চৌধুরী, সাবেক নারী আসনের সংসদ সদস্য জারা জাবীন মাহবুব, আবু হেনা মোস্তফা কামাল পরশ, মিনার খলিলকে দুষছেন কুমিরাদহ বিলের ইজারাদার আলফাজ উদ্দিন ও তার লোকজন। বোমা হামলায় বিষয়ে শিবগঞ্জ থানায় লিখিত এজাহারে ৫০ জন আসামি করা হয়েছে। আসামিরা হলেন, সাজ্জাদ জোহাদ ওয়াকফ স্টেটের মোতাওয়াল্লী ১। কাইয়ুম রেজা চৌধুরী,(৬৫) পিতা মৃত মর্তুজা রেজা চৌধুরী, ২। কাইয়ুম রেজা চৌধুরীর মেয়ে নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জারা জাবীন মাহবুব (৪৫) ৩। মোঃ মর্তুজা রেজা চৌধুরী (আমের) (৪৪) পিতা মৃত কামরান রেজা চৌধুরী, ৪। আবু হেনা মোস্তফা কামাল (পরশ) (৪৫) পিতা মোঃ শফিকুল ডাক্তার, ৫। আব্দুর রাজ্জাক (৪২) পিতা মহসিন আলী, ৬। মিনার (৩৮) পিতা মৃত মুকুল,৭। জিলহজ (৩২) পিতা আফতাব উদ্দিন, ৮। রবু (৪৮) পিতা মৃত নইমুদ্দীন, ৯। সাকিম আলী (৩৫) পিতা মৃত মেসের আলী, ১০। পরাগ @ (গুরু) (৪৮) পিতা মৃত ইলিয়াস, সহ ৫০ জনকে আসামি করে থানায় একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন।
লিখিত এজাহারে তিনি আরো বলেন, বোমা হামলার সময় আসামিরা আমার লীজ কৃত বিলের মোট ৩০.৮৭২৫০/- টাকার বিভিন্ন সরঞ্জাম লুটপ করে নিয়ে যায়।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মোনাকষা ইউনিয়নের কাইয়ুম রেজা চৌধুরীর ইজারা প্রদান করা কুমিরাদহ বিল দখলে নিতে, কাইয়ুম রেজা চৌধুরীর লোকজন , কুখ্যাত বোমাবাজরা সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুমিরাদহ বিল এলাকায় শতাধিক বোমার বিস্ফোরণ ঘটান। বোমার বিস্ফোরণে আসেপাশের এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
এলাকাবাসী জানায়, গত ৮ অক্টোবর কাইয়ুম রেজা চৌধুরীর লোকজন কুমিরাদহ বিল দখলের চেষ্টা করে আসছিল। গত ৮ অক্টোবর চৌধুরীর অনুসারীরা দফায় দফায় সাতরশিয়া গ্রামের কুমিরাদহ বিল এলাকায় অর্ধ শতাধিক বোমা ফাটিয়ে বিল দখলের চেষ্টা করেন। কিন্তু সময় মতো আইন শৃংখলা বাহিনী উপস্থিত হলে তারা বোমাবাজরা কুমিরাদহ বিল এলাকায থেকে পালিয়ে যান । পালিয়ে যাওয়ার সময় তারা অনেক গুলো অবিস্ফরিত বোমা রেখে যান যেগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
কুমিরাদহ বিলের ইজারাদার আলফাজ উদ্দিন জানান নিয়ম অনুযায়ী চৌধুরী ইসমাইল সাজ্জাদ জোয়াদ ওয়াকফ এস্টেটের মোতাওয়াল্লী ও সাবেক এমপি জারা জাবীন মাহবুবের বাবা কাইয়ুম রেজা চৌধুরীর কাছ থেকে কুমিরাদহ বিল ইজারা নেওয়া হয়। কিন্তু এমপি জারা তার লোকজনের মাধ্যমে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে এমপি নিজে উপস্থিত থেকে বিলের ধারে থাকা মাছের খাবার ও বিভিন্ন সরঞ্জাম লুটপাট করেছে৷ তারই ধারাবাহিকতায় গত ৮ অক্টোবর কাইয়ুম রেজা চৌধুরী ও তার মেয়ে নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জারা জাবীন মাহবুবের লোকজন কুমিরাদহ বিলে বোমা হামলা চালিয়ে ভাংচুর লুটপাট করেন আমরা তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ আমরা এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
কাইয়ুম রেজা চৌধুরীর মেয়ে নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জারা জাবীন মাহবুবের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কুমিরাদহ বিলটি আমাদের প্রত্যেক সম্পত্তি, আলফাজ উদ্দিন জোর করে দখল করে রেখেছে, আমাদের লোকজন বিলে যাওয়া মাত্রই আলফাজ উদ্দিনসহ তার লোকজন আমাদের লোকজনের উপর হাতবোমা নিক্ষেপ করেন, এবং আমাদের লোকজন বিল থেকে সরে আসেন, এবিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আদালতের রায়ে আলফাজের ইজারা বাতিল করা হয়েছে, এবং অনেক মামলা এখনো চলমান রয়েছে, এ হামলার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ায় প্রস্তুতি চলছে।
শিবগঞ্জ থানার এসআই পিয়ারুল ইসলাম, বলেন ৭ ককটেল বোমা অবিস্ফোরিত ২ বিস্ফোরিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। তদন্ত চলছে তদন্ত শেষে বলতে পারব কে বা কারা এগুলো করেছেন।
এবিষয়ে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম কিবরিয়ার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ২ টি ককটেল বোমা বিস্ফোরিত হয়েছে এবং ৭ টি ককটেল বোমা পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে, কে বা কারা এগুলো করেছেন, আমাদের তদন্ত চলছে তদন্ত চলছে তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।