চরে বছরে ৫০ হাজার কোটি টাকার ফসল হচ্ছে রপ্তানী
- আপডেট সময় : ০৮:৩৭:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ মার্চ ২০২৪ ৩০৩ বার পড়া হয়েছে
মাটি মামুন রংপুর
রংপুর বিভাগের চরাঞ্চলে বছরে উৎপাদন
হচ্ছে ৫০ হাজার কোটি টাকার ফসল। এ
ফসল রফতানি হচ্ছে শ্রীলংকা, জাপান,
সিঙ্গাপুরসহ মধ্যপ্রাচ্যে।
তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নদী শাসন করা
গেলে উৎপাদন আরও বাড়ানো সম্ভব; যা
বড় ভূমিকা রাখবে দেশের সামগ্রিক
অর্থনীতিতে।
সরেজমিনে তিস্তার শংকরদহ চরে গিয়ে
দেখা যায়, জমিতে কাজে ব্যস্ত কৃষক,
জীবনের পুরো সময়টাই তার কেটেছে বন্যা, নদী ভাঙন আর পানির সঙ্গে যুদ্ধ করে।
তবে নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে আঁকড়ে রেখেছেন কৃষিকেই।
তাদের মতো দেশের খাদ্য নিরাপত্তার শক্ত বলয়
তৈরি করেছেন উত্তরের চরাঞ্চলের লাখো কৃষক।
কৃষক প্রফুল্ল চন্দ্র রায় বলেন, চরে এখন ভূট্টা,আলু, মিষ্টি কুমড়া, শশা, মরিচ পেঁয়াজ, রসুন, ধানসহ অন্তত ১৫ রকমের ফসল উৎপাদন হচ্ছে।
মাটির উর্বরা শক্তি, ভালো বীজ নির্বাচন আর সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন উদ্যোগে মূল ভূখণ্ডের
তুলনায় এখন চরে অনেক ভালো ফসল ফলছে। এলাকার অন্য কৃষকরাও বলেন ঠিক একই কথা।
গবেষণারা জানান, দেশে ৩২ জেলার ১০০
উপজেলার চরে এক কোটি মানুষ বসবাস
করেন।
এর মধ্যে দেশের উত্তরাঞ্চলে ১০ লাখ মানুষের বসবাস।
বর্তমানে এই অঞ্চলের প্রায় ৬০০ চরের এক লাখ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ফসল।
শুধু দেশীয় চাহিদাই নয়, চরের উৎপাদিত ফসল জায়গা করে নিয়েছে বিশ্ববাজারেও।
কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, বছরে অন্তত ৫০ হাজার কোটি টাকার ফসল হচ্ছে উত্তরের চরগুলোতে।
এ ছাড়াও ২০২২-২৩ অর্থ বছরে বিভাগের বিভিন্ন
চর থেকে উৎপাদিত প্রায় ১৫ হাজার মেট্রিক টন মিষ্টি কুমড়া, আলু ও মিষ্টি আলু রফতানি হয়েছে মধ্যপ্রাচ্য, সিঙ্গাপুর,ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা, জাপান
ভুটানে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. ওবায়দুর রহমান মণ্ডল বলেন, রংপুর ও লালমনিরহাট থেকে মিষ্টিকুমরা মালয়েশিয়ায় রফতানি হয়।
গাইবান্ধার চরাঞ্চলের মিষ্টি আলু জাপানে যায়। এ কারণে চর এখন ধীরে ধীরে আমাদের রফতানি যোগ্য কৃষিপণ্যের হাবে পরিণত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকার ও সুইজারল্যান্ডের অর্থায়নে মেকিং মার্কেটস ওয়ার্ক ফর দি চরস, এমফোরসি প্রকল্পের মাধ্যমে রংপুর বিভাগের চার জেলাসহ মোট ছয়টি জেলায় বসবাসরত চরাঞ্চলের মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে দশ বছর মেয়াদের একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে।
উদ্দেশ্য প্রকল্প এলাকায় বসবাসকারী মানুষের
আয় বৃদ্ধি করা বলে জানান বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমির মহাপরিচালক মো.খুরশীদ আলম রেজভী।
তিনি বলেন, এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যই
হচ্ছে চরাঞ্চলের জনগণের উৎপাদিত পণ্য
যেন সঠিক বাজার মূল্য পায় তা নিশ্চিত করা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন তিস্তা শাসন করা গেলে অনেক বেশি চরকে উৎপাদনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। যার মধ্য দিয়ে মজবুত হবে দেশের কৃষি ও অর্থনীতি।