কামরুল ইসলাম চট্টগ্রাম, চট্টগ্রামর জেলার উপজেলা গুলোতে বেঙ্গের ছাতার মতো গড়ে উঠা ইট ভাটা গুলোতে ইট তৈরি করতে পাহাড় ও ফসলি জমির টপ সয়েল কেটে পোড়ানো হচ্ছে । অননুমোদিত ভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটাগুলো নিয়মিত ফসলি জমির টপ সয়েল ধ্বংস করছে। এতে জমির ঊর্বরতা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে বলে মন্তব্য করে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে ফসল উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দিনের পর দিন ফসলি জমি ও পাহাড় আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ।
সূত্র মতে জানাযায় , চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলায় ৪০৫টি ইটভাটা রয়েছে। এসব ইটভাটার অধিকাংশেরই কোনো লাইসেন্স নেই। পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন রয়েছে হাতেগোনা কয়েকটির। আবার সাতকানিয়া চন্দনাইশ, বাঁশখালী, আনোয়ারা, বোয়ালখালী চকরিয়া
রাঙ্গুনিয়া রাউজান সহ বিভিন্ন এলাকায় বনের পাশে ইটভাটা তৈরি করে কাঠ পোড়ানোরও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে- চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার ইটভাটাগুলো আবাদী জমির টপ সয়েল ও পাহাড় ধ্বংস করছে। প্রায় প্রতিটি ইটভাটাই টপ সয়েল থেকে মাটির সংস্থান করছে। যে মাটি পুড়িয়ে ইট তৈরি করা হচ্ছে। চট্টগ্রামের শস্য ভাণ্ডার খ্যাত রাঙ্গুনিয়ার গুমাই বিলের পাশেই গড়ে তোলা হয়েছে বেশ কয়েকটি ইটভাটা।
এসব ইটভাটায় হরদম ব্যবহৃত হচ্ছে গুমাই বিলের টপ সয়েল। স্কেভেটরের মতো আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে নিয়মিত টপ সয়েল সাবাড় করা হচ্ছে। ট্রাকে ট্রাকে মাটি তুলে নেয়া হচ্ছে গুমাই বিল থেকে। শুধু গুমাইবিলই নয়, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, বাঁশখালীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে টপ সয়েল সাবাড়ের মহোৎসব চলছে। প্রতিটি ইটভাটাকে কেন্দ্র করে টপ সয়েল কেটে পাহাড়ের মতো করে জড়ো করা হচ্ছে। যা দিয়ে ইট তৈরি হবে।
ধানী জমি কিংবা আবাদী জমির টপ সয়েল খুবই গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ বলে উল্লেখ করে সাতকানিয়া উপজেলার কৃষি বিভাগের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, রাতে দিনে টপ সয়েল কাটা হচ্ছে। আমাদের চোখের সামনেই জমির সর্বনাশ করা হচ্ছে। কিন্তু আসলে আমাদের কিছু করার উপায় নেই। প্রভাবশালী লোকজন সবকিছু ম্যানেজ করে রাতে দিনে টপ সয়েল কাটছে। প্রকাশ্যে দিনের বেলায় স্কেভেটর দিয়ে টপ সয়েল কাটা হলেও কেউ বাধা দেয় না। এতে করে দিনে দিনে তারা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
সূত্র বলেছে, জমির টপ সয়েল কাটার ফলে শুধু ঊর্বরতাই নষ্ট হচ্ছে না, একই সাথে জমি নিচুও হয়ে যাচ্ছে। এতে পানি জমে ফসলহানির ঘটনাও ঘটবে।
টপ সয়েল কেটে ফেলা বহু জমিতে পরবর্তীতে ফসল উৎপাদনে ধস নেমেছে বলেও তারা জানান। ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্পষ্ট ঘোষণা রয়েছে, কোনো অবস্থাতেই ফসলি জমির মাটি কাটা যাবে না। যদি বিশেষ প্রয়োজনে কেউ মাটি কাটতে চায় তাহলে মাছ চাষ করা যায় এমন গভীর করে কাটতে হবে। শুধু তাই নয় কাটা জায়গার দুই পাড় বেঁধে দিতে হবে। যাতে মাটি কাটা জমি মাছ চাষের আওতায় চলে আসে। কিন্তু ধানী জমি যেভাবে টপ সয়েল কাটা হচ্ছে তাতে এসব নিয়ম কানুনের কোনো তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। আবাদী জমির টপ সয়েল না কেটে খাল এবং নদী নালার মাটি দিয়ে ইট পোড়ানোর ব্যবস্থা করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
সূত্র বলেছে, চট্টগ্রামের ইটভাটাগুলোর ব্যাপারে জেলা প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদপ্তর বর্তমানে নিরবতা পালন করছেন । বিশেষ করে চিমনি উঁচু করা এবং কাঠ পোড়ানো নিয়ন্ত্রণে আনতে এসব ইট ভাটা গুলোতে অভিযান পরিচালনা করা দরকার । কিন্তু টপ সয়েল ধংসে বিশেষ কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি বলেও সংশ্লিষ্টরা মন্তব্য করেছেন।
এই ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের মনিটরিং ও মূল্যায়ন কর্মকর্তা শামীম আহমেদ হেলালের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, টপ সয়েল হচ্ছে ঊর্বর জমি। ফসল উৎপাদনে যা খুবই প্রয়োজনীয়। ব্রিকফিল্ডগুলো যেভাবে এই মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে তাতে জমির ঊর্বরতাশক্তি কমে যাচ্ছে। এতে প্রচুর ক্ষতি হচ্ছে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যা কৃষি উৎপাদনেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এই ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার উপ পরিচালক ফেরদৌস আনোয়ার বলেন, বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের দেখার কথা। আমরা এখন পর্যন্ত কোনো অভিযান পরিচালনা করিনি। প্রয়োজনে আমরাও অভিযান চালিয়ে টপ সয়েল কাটার অপতৎপরতা বন্ধ করবো।
Board of Directors of ABC National News : Chief Editor and Advisor-Adv Monir Uddin, Ex.Editor and Advisor-Lion Eng.Ashraful Islam, Ex.Editor-Lion Dr.Mana and Lion Palash, Acting Editor-Tawhid Sarwar, News Editor-Aftab Parvez,News Sub Editor-Pojirul Islam and
Co-Editor Siam and Neon.
Dhaka Office : 67/4,5 Chaya Neer, Shanti Bagh Dhaka 1212.
কপিরাইট © সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার