আনোয়ার সাঈদ তিতু,
কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলায় অসাধু ডিলারের কারসাজিতে বাজারে সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ডিলাররা দোকানে সার না রেখে গোপনে গুদামে রেখে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছেন। আমনের ভরা মৌসুমে সার ডিলারদের এমন কারসাজিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ডিলারদের সার উত্তোলন, মজুত ও বিতরণের বিষয়টি যথাযথভাবে মনিটরিং করছে না কৃষি বিভাগ। কিছু ক্ষেত্রে কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে নানা অনিয়ম করছেন ডিলাররা। প্রত্যেক ডিলারকে ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ বাজারের নিজস্ব ঘর থেকে কৃষকদের কাছে সার বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২৪ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে আমন ধান আবাদ করা হয়েছে। কৃষকদের মাঝে সরকারি মূল্যে রাসায়নিক সার বিতরণের জন্য বিসিআইসির ১৩ জন এবং বিএডিসির ১৫ জন সার ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। উপজেলার ১৩ ইউনিয়নে প্রতিটিতে একজন বিসিআইসির ও একজন বিএডিসির ডিলার রয়েছেন। সার বিপণন নীতিমালা মোতাবেক প্রতিটি ইউনিয়নে ডিলারদের ঘর থাকলেও তা শুধু কাগজে কলমে। কৃষকদের অভিযোগ, বাজারের নিজস্ব দোকানে ডিলাররা কখনও সার তোলেন না, বিক্রিও করেন না।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, মেসার্স তালুকদার কনস্ট্রাকশন, মেসার্স সবুজ ট্রেডার্স, মেসার্স রশিদ এন্টারপ্রাইজসহ ১৩ জন ডিলারের সারের বরাদ্দ তুলছে তিনজন ডিলারের একটি সিন্ডিকেট।
সিন্ডিকেটটি কৃষকদের কাছে সার বিক্রি না করে বেশি দামে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছে। এতে বাজারে সব সময় সারের সংকট থাকে। এ সুযোগে খুচরা ব্যবসায়ীরা সরকারি মূল্যের দ্বিগুণ দামে সার বিক্রি করছেন।
পূর্ব কালুডাঙ্গা গ্রামের কৃষক মো. মকবুল হোসেন বলেন, তিনি তাঁর ইউনিয়নের ডিলারের ঘরে (দোকানে) গিয়েছিলেন। তারা টিএসপি সার নেই বলে তাঁকে সাফ জানিয়েছেন। পরে খুচরা দোকান থেকে ১ হাজার ৩৫০ টাকা মূল্যের এক বস্তা সার ২ হাজার ৪০০ টাকা দিয়ে কিনতে বাধ্য হয়েছেন। এমনিতে পর্যাপ্ত বৃষ্টির অভাবে সেচ দিয়ে জমি চাষ করেছেন। তার ওপর সারের চড়া দামে কৃষকদের নাভিশ্বাস উঠেছে বলে জানান তিনি।
উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১২০০ টাকা বস্তার ইউরিয়া সার বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ টাকায়। টিএসপি সার ১৩৫০ টাকার পরিবর্তে ২৩০০ টাকা, ডিএপি সার ১০৫০ পরিবর্তে ১৩৫০ টাকা ও এমওপি সার বিক্রি হচ্ছে ১২০০ টাকার স্থলে ১৩০০ টাকা।
গুনাইগাছ ইউনিয়নের জুম্মাহাট কাঁঠালবাড়ী গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক বেপারি বলেন, তাঁর ইউনিয়নের ডিলার মেসার্স আবুল কালাম মণ্ডল। জুম্মাহাট বাজারে তাঁর ভাড়া নেওয়া ঘরে সাইনবোর্ড আছে। কিন্তু সেখানে কোনো দিন কৃষকদের কাছে সার বিক্রি করতে দেখেননি তিনি।
থেতরাই ইউনিয়নের কিশোরপুর গ্রামের কৃষক কৃষক আবু তালেবের অভিযোগ, তাঁর ইউনিয়নের ডিলার মেসার্স আমজাদ হোসেন। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নামে ফাসি দেওয়া বাজারে একটি দোকান রয়েছে। কিন্তু সেখানে সার বিক্রি করা হয় না। একই ভাষ্য হাতিয়া ইউনিয়নের কৃষকদেরও। ওই ইউনিয়নের ডিলার মেসার্স সুফিয়া এন্টারপ্রাইজের দোকানে সার বিক্রি হতে দেখেনি কৃষকরা।
এ বিষয়ে সার ডিলার মেসার্স মাসুদ ট্রেডার্সের মালিক মাসুদ রানা বলেন, টিএসপি সারের সরবরাহ কম, আমন মৌসুমে চাহিদা বেশি হওয়ায় দাম বেড়েছে। তবে অন্য সারের দাম ঠিক আছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ইউনিয়নে ডিলাররা নিজস্ব দোকানে সার তোলেন না– এমন অভিযোগ আছে। তবে বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগ পাননি তিনি। এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Board of Directors of ABC National News : Chief Editor and Advisor-Adv Monir Uddin, Ex.Editor and Advisor-Lion Eng.Ashraful Islam, Ex.Editor-Lion Dr.Mana and Lion Palash, Acting Editor-Tawhid Sarwar, News Editor-Aftab Parvez,News Sub Editor-Pojirul Islam and
Co-Editor Siam and Neon.
Dhaka Office : 67/4,5 Chaya Neer, Shanti Bagh Dhaka 1212.