ঢাকা ০৪:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবিসি ন্যাশনাল নিউজ২৪ ইপেপার

ব্রেকিং নিউজঃ
গীবত বা পরনিন্দা মহাপাপ কোরআন ও হাদীসের আলোকে: হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী। ঠাকুরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে চালকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মশালা । লালমনিরহাটে সাংবাদিকের উপর হামলাকারী মাইদুল গ্রেফতার চাঁদাবাজির মামলায় নিষিদ্ধ সংগঠনের ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার ঠাকুরগাঁওয়ে পীরগঞ্জে স্ত্রীর নির্যাতন মামলায় উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার বরখাস্ত ! কাজী আখতার উল আলম ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান ১০ বছরের জন্য এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের বরাদ্দ পেল বাফুফে ইজতেমার উদ্দেশে যাওয়ার পথে কুড়িগ্রাম ব্রহ্মপুত্রে নৌ-ডাকাতি ঠাকুরগাঁওয়ে জেলা বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের বাসায় দুর্ধষ চুরি ! ঠাকুরগাঁওয়ে রানীশংকৈলের খুনিয়াদীঘি শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের উপর জুতা পরে হিরো আলমের টিকটক, ভিডিও সমালোচনার ঝড় !

কুড়িগ্রামে ‘মুজিব কিল্লা’ নির্মাণে ঠিকাদারের তোড়জোড়, রয়েছে ভাঙ্গনের শঙ্কা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:০৫:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪ ১৮ বার পড়া হয়েছে

 

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-

প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মানুষ ও গবাদি পশুর আশ্রয়ের জন্য কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় ‘মুজিব কিল্লা’ নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে এটি নির্মাণের জায়গা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। বিষয়টি জানার পরও ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে আড়াইশ মিটার দূরত্বের মধ্যে অনেকটা তড়িঘড়ি করে কাজ করছেন প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ‘মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় চিলমারী ইউনিয়নের কড়াইবরিশাল চরের মাঝে মুজিব কিল্লা তৈরি করা হচ্ছে। প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, দুর্যোগ-পরবর্তী সময়ে এসব ভবন সামাজিক অনুষ্ঠান ও কমিউনিটি উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি ভবনের সামনের খোলা জায়গা ব্যবহার করা হবে খেলাধুলায়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে মুজিব কিল্লায় একটি প্রাণিসম্পদ রাখার শেড ও একটি তিনতলাবিশিষ্ট শেল্টার ভবন নির্মাণ হবে।

চিলমারীতে নির্মাণাধীন কিল্লার ব্যয় ধরা হয়েছে ছয় কোটি ৯১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। গত ২৩ জানুয়ারি এর কাজ শুরু হয়। নির্মাণের কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমজে এসএম এনপিজেভি। শুরু থেকেই প্রকল্পটি ঘিরে বিতর্ক ছিল। কারণ মুজিব কিল্লা নির্মাণে উপযুক্ত জায়গা নির্বাচন না করা; ভাঙনকবলিত এলাকা থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে জমি ভরাট; এমনকি ভাঙন ঝুঁকিতে থাকায় প্রকল্প বন্ধের শঙ্কা রয়েছে। তাই তড়িঘড়ি করে ছাদ ঢালাই দিয়ে বিল তোলার পাঁয়তারা চলছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, চলতি বছরে প্রকল্প এলাকা চিলমারী ইউনিয়নের কড়াইবরিশাল চরে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে এলাকার ৬০-৭০টি বসতভিটা ও কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয়রাও এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার আগেই তা ব্রহ্মপুত্রে বিলীনের শঙ্কা করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা রিয়াদ বাবু বলেন, ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে প্রতিনিয়ত নদীর পাড় ভাঙছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে ৪০টির মতো বসতভিটা ও আবাদি জমি ভেঙে গেছে। মুজিব কিল্লাটি এখানে তৈরি করা হলে সরকারের টাকা জলে যাবে।

চিলমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গওছল হক মণ্ডল বলেন, মুজিব কিল্লা নির্মাণের জন্য জায়গা নির্বাচনে ভুল ছিল। কারণ নদীতীরবর্তী অঞ্চলে এত বড় একটি প্রকল্পের কাজ করবে, সেটি সঠিকভাবে বিচার বিবেচনা করবে না, তা হতে পারে না। তবে এটি নির্মিত হলে এ অঞ্চলের মানুষের অনেক উপকার হতো।

তিনি জানান, প্রথমে মুজিব কিল্লাটির জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছিল চর শাখাহাতিতে। কিন্তু নির্বাচনে গওছল হক পরাজিত হলে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম প্রকল্পটি সরিয়ে নেন কড়াইবরিশালে। এটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। নদীভাঙন এলাকা থেকে দূরে নির্মাণ করা হলে কোনো শঙ্কা থাকত না। তবে ভাঙনকবলিত এলাকায় যদি বস্তা ফেলা হয়, তাহলে কিল্লা রক্ষা পেতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক বাসিন্দা জানান, নদের তীর থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে বালু উত্তোলনে সহযোগিতা করেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম।

তবে মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি বা আমার লোকজন বালু তুলছে না। নদ থেকে অনেকটা দূরে মুজিব কিল্লা নির্মাণ করা হচ্ছে। সেখানে ভাঙনের ঝুঁকি নেই।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মোশারফ হোসেন জানান, নদের ভাঙন অনেক কমেছে। সেখানে মুজিব কিল্লা নির্মাণে ভাঙনের ঝুঁকি নেই।

শেয়ার করুন

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

কুড়িগ্রামে ‘মুজিব কিল্লা’ নির্মাণে ঠিকাদারের তোড়জোড়, রয়েছে ভাঙ্গনের শঙ্কা

আপডেট সময় : ০৯:০৫:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪

 

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-

প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় মানুষ ও গবাদি পশুর আশ্রয়ের জন্য কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলায় ‘মুজিব কিল্লা’ নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে এটি নির্মাণের জায়গা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। বিষয়টি জানার পরও ব্রহ্মপুত্র নদের তীর ঘেঁষে আড়াইশ মিটার দূরত্বের মধ্যে অনেকটা তড়িঘড়ি করে কাজ করছেন প্রকল্প-সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ‘মুজিব কিল্লা নির্মাণ, সংস্কার ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের আওতায় চিলমারী ইউনিয়নের কড়াইবরিশাল চরের মাঝে মুজিব কিল্লা তৈরি করা হচ্ছে। প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, দুর্যোগ-পরবর্তী সময়ে এসব ভবন সামাজিক অনুষ্ঠান ও কমিউনিটি উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে। পাশাপাশি ভবনের সামনের খোলা জায়গা ব্যবহার করা হবে খেলাধুলায়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে মুজিব কিল্লায় একটি প্রাণিসম্পদ রাখার শেড ও একটি তিনতলাবিশিষ্ট শেল্টার ভবন নির্মাণ হবে।

চিলমারীতে নির্মাণাধীন কিল্লার ব্যয় ধরা হয়েছে ছয় কোটি ৯১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। গত ২৩ জানুয়ারি এর কাজ শুরু হয়। নির্মাণের কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমজে এসএম এনপিজেভি। শুরু থেকেই প্রকল্পটি ঘিরে বিতর্ক ছিল। কারণ মুজিব কিল্লা নির্মাণে উপযুক্ত জায়গা নির্বাচন না করা; ভাঙনকবলিত এলাকা থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে জমি ভরাট; এমনকি ভাঙন ঝুঁকিতে থাকায় প্রকল্প বন্ধের শঙ্কা রয়েছে। তাই তড়িঘড়ি করে ছাদ ঢালাই দিয়ে বিল তোলার পাঁয়তারা চলছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, চলতি বছরে প্রকল্প এলাকা চিলমারী ইউনিয়নের কড়াইবরিশাল চরে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে এলাকার ৬০-৭০টি বসতভিটা ও কৃষিজমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয়রাও এ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার আগেই তা ব্রহ্মপুত্রে বিলীনের শঙ্কা করছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা রিয়াদ বাবু বলেন, ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে প্রতিনিয়ত নদীর পাড় ভাঙছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে ৪০টির মতো বসতভিটা ও আবাদি জমি ভেঙে গেছে। মুজিব কিল্লাটি এখানে তৈরি করা হলে সরকারের টাকা জলে যাবে।

চিলমারী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান গওছল হক মণ্ডল বলেন, মুজিব কিল্লা নির্মাণের জন্য জায়গা নির্বাচনে ভুল ছিল। কারণ নদীতীরবর্তী অঞ্চলে এত বড় একটি প্রকল্পের কাজ করবে, সেটি সঠিকভাবে বিচার বিবেচনা করবে না, তা হতে পারে না। তবে এটি নির্মিত হলে এ অঞ্চলের মানুষের অনেক উপকার হতো।

তিনি জানান, প্রথমে মুজিব কিল্লাটির জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছিল চর শাখাহাতিতে। কিন্তু নির্বাচনে গওছল হক পরাজিত হলে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম প্রকল্পটি সরিয়ে নেন কড়াইবরিশালে। এটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। নদীভাঙন এলাকা থেকে দূরে নির্মাণ করা হলে কোনো শঙ্কা থাকত না। তবে ভাঙনকবলিত এলাকায় যদি বস্তা ফেলা হয়, তাহলে কিল্লা রক্ষা পেতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক বাসিন্দা জানান, নদের তীর থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করে। এলাকাবাসীর বাধা উপেক্ষা করে বালু উত্তোলনে সহযোগিতা করেন ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম।

তবে মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি বা আমার লোকজন বালু তুলছে না। নদ থেকে অনেকটা দূরে মুজিব কিল্লা নির্মাণ করা হচ্ছে। সেখানে ভাঙনের ঝুঁকি নেই।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মোশারফ হোসেন জানান, নদের ভাঙন অনেক কমেছে। সেখানে মুজিব কিল্লা নির্মাণে ভাঙনের ঝুঁকি নেই।

শেয়ার করুন