কারাগারে প্রেরণ দুই জঙ্গি এবং মামলা কক্সবাজার

- আপডেট সময় : ০২:৩১:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৩ ২২১ বার পড়া হয়েছে

কামরুল ইসলাম
কক্সবাজারের কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার দুই নেতার বিরুদ্ধে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় মামলা হয়েছে। নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ওসি টান্টু সাহা জানান, মঙ্গলবার সকালে র্যাব–১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের এক সদস্য বাদী হয়ে দুই জঙ্গি সদস্যের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও পাঁচজনকে আসামি করে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলাটি নথিভুক্ত করার পর আসামিদের বান্দরবান আদালতে পাঠানো হয়েছে। আসামিরা হলেন জঙ্গি সংগঠনটির শুরা সদস্য ও সামরিক শাখার প্রধান রণবীর ওরফে মাসুদ এবং তার সহযোগী বোমা বিশেষজ্ঞ আবুল বাশার ওরফে আলম।
বান্দরবান প্রতিনিধি জানান, আটক দুই জঙ্গিকে গতকাল দুপুরে বান্দরবান চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দা সুরাইয়া আক্তারের আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত সোমবার ভোর থেকে কুতুপালং ক্যাম্প সংলগ্ন এলাকায় জঙ্গিদের সঙ্গে র্যাবের গোলাগুলির পর ওই দুজনকে গ্রেপ্তার এবং তাদের কাছ থেকে দেশি ও বিদেশি অস্ত্র এবং গোলাবারুদ উদ্ধারের কথা জানায় র্যাব। পরে গ্রেপ্তার জঙ্গি সংগঠনের দুই সদস্যকে থানায় হস্তান্তর করা হয়। ওসি টান্টু বলেন, অভিযানস্থল উখিয়া উপজেলার কুতুপালং এলাকায় হলেও অস্ত্র উদ্ধার এবং জঙ্গি সংগঠনের সদস্যদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি এলাকা থেকে। তাই মামলাটি নাইক্ষ্যংছড়ি থানায় দায়ের করা হয়েছে।
দুই পক্ষের তুমুল গোলাগুলির পর কুতুপালং ৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, পাহাড়ে–সমতলে আইন–শৃক্সখলা বাহিনীর তাড়া খেয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছিল জঙ্গিরা।
তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, তিনটি পিস্তলের ম্যাগাজিন, ১০ রাউন্ড পিস্তলের গুলি, একটি খালি কার্তুজ, দুটি একনলা (দেশীয়) বন্দুক, ১১টি ১২ বোরের কার্তুজ, ১০০ রাউন্ড পয়েন্ট টুটু (.২২) বোরের গুলি, নগদ ২ লক্ষ ৫৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের পরিচালক বলেন, বিভিন্ন সূত্রে গোয়েন্দা তথ্যে তারা নিশ্চিত হন যে, রণবীর ও বাশার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থান করছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে কুতুপালং সাত নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ‘এ’ ব্লক ঘিরে সোমবার ভোর ৫টায় যৌথ চিরুনি অভিযান শুরু করে র্যাব।
র্যাবের অবস্থান বুঝতে পেরে জঙ্গিরা পাশের পাহাড়ে চলে যায়। র্যাব ওখানে অভিযান শুরু করলে সশস্ত্র লোকজন র্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়ে। আত্মরক্ষার্থে র্যাব সদস্যরাও পাল্টা গুলি চালায়। কিছুক্ষণ পর সেখান থেকে দুই জঙ্গি নেতাকে গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয় র্যাব।
বেশ কয়েকজন তরুণের ঘর ছাড়া তদন্তে নেমে ২০২২ সালের অক্টোবরে র্যাব নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া সম্পর্কে তথ্য পাওয়ার কথা জানায়। তখনই র্যাব জানায়, পাহাড়ের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে মিলে দুর্গম এলাকায় প্রশিক্ষণ ক্যাম্প গড়ে তুলেছে জামাতুল আনসার। এরপরে পাহাড়ে ধারাবাহিক অভিযানের খবর জানিয়ে আসছে র্যাব।
র্যাব বলছে, হরকাতুল জিহাদ, জেএমবি এবং আনসার আল ইসলামের বেশ কিছু সদস্য ২০১৭ সালে নতুন এই উগ্রবাদী সংগঠনের কার্যক্রম শুরু করে। পরে ২০১৯ সালে জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া নামে কার্যক্রম পরিচালনা করতে থাকে।