ঈদকে সামনে রেখে কাজে ব্যস্ত কামাররা
- আপডেট সময় : ০৮:৩২:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ জুন ২০২৩ ১৫৪ বার পড়া হয়েছে
উজ্জল প্রধান, স্টাফ রিপোর্টারঃ
ইসলামের ইতিহাসে মুসলিম উম্মাহর মহিমান্বিত ত্যাগের মধ্য দিয়ে এসেছে পবিত্র ঈদ উল আজহা (কোরবানি ঈদ)।
আসন্ন কোরবানি ঈদের পশু জবায়ের প্রস্তুুতি হিসেবে দাঁ, বটি, ছুরি, চাপাতিসহ গোসত কাটার বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার কামাররা।
এসব সরঞ্জাম নতুনভাবে তৈরি এবং পুরোনোগুলোতে শান দিতে এখন ব্যস্ত তারা। তবে কয়লা,লোহাসহ সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় আগের মতো লাভ তেমন হয়না বলে জানান এক কামার কারিগর।
বছরের অন্য দিনগুলোতে তেমন কাজ না থাকায় অলস সময় কাটালেও কোরবানির সময়টাতে তাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। এ সময় প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পরিশ্রম করতে হয় তাদের। মূলত এসময় তাদের বেচাকেনা কিছুটা বেড়ে যায়।
শহরের আলহাজ্ব মোড়ে অবস্থিত রাজ্জাক কামার “এবিসি ন্যাশনাল নিউজ” -প্রতিবেদক কে বলেন, বাপ দাদার পৈত্রিক ব্যাবসা থেকেই আমার এই ব্যাবসা,আগে অনেক কাজ করেছি ব্যাবসা ভালোই ছিলো,তবে এখন ব্যবসায় মন্দা চলছে, কোরবানি ছাড়া বছরের অন্য সময়ে আমরা কোনোরকম দিন পার করি। বিভিন্ন এনজিও থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করে নিজের সংসার চালাতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।
একারণে অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশা বেছে নিয়েছেন। আগে ইরি ও আমন মৌসুমে এই এলাকায় ধান কাটার জন্য কাস্তে ও আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে পাট কাটার জন্য বড় বড় হাঁসুয়া তৈরির বায়না পেতাম। এখন হাট-বাজারে লোকের তেমন সমাগম নেই। ফলে খুব কষ্টে দিনযাপন করছি।
আগে ঈশ্বরদীতে কয়েকশত কামার থাকলেও এখন ৫০/৬০ জনের বেশি নাই। সরকারী কোন সুযোগ সুবিধা আমরা পাইনা। আমাদের নেই কোন স্থায়ী কোন কামার পট্রি,দিন দিন এই পেশা বিলুপ্তির পথে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানে প্রতিটি দা তৈরিতে প্রকারভেদে মজুরি নেওয়া হচ্ছে ২০০-৪০০ টাকা পর্যন্ত। চাকু তৈরিতে নেওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা। বড় ছুড়ি তৈরিতে নেওয়া হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকা। বটি তৈরিতে নেওয়া হচ্ছে দেড়শ টাকা থেকে আড়াইশ টাকা।
দাঁ শান দিতে আসা শহরের আনার কসায়ের ছেলে তুষারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, কয়েক দিন পরেই ঈদ। গরু ও ছাগল জবাই দিতে এবং গোসত কাটতে প্রয়োজন চাকু ও ছুরির,সে কারণে দাঁ, বটি ও ছুরি শান দিতে এসেছি। তবে গতবছরে এসব কাজের যে মজুরি ছিল তার চেয়ে এবারে মজুরি খানিকটা বেশি।
বাজারের পাইকারী ব্যাবসায়ী রতন কর্মকার জানান,সারাবছরই তারা দা, বটি, চাকু, ছুরি বিক্রি করেন। কিন্তু কোরবানির মৌসুমেই এসব সরঞ্জামের বেচাকেনা বেশি হয়। এবারও বিক্রি হচ্ছে। তবে কয়লা ও লোহার দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় কামারদের কাছ থেকে খানিকটা বেশি দামে এসব জিনিসপত্র কিনতে হচ্ছে। যার ফলে কিছুটা বেশি দামে আমাদের বিক্রি করতে হচ্ছে।