সাভারে নিরীহ মানুষদের মামলা দিয়ে হয়রানি: ‘রাইটার’ স্বপনের অপরাধ চক্র উন্মোচিত
- আপডেট সময় : ১০:৩৫:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ নভেম্বর ২০২৪ ২৮ বার পড়া হয়েছে
হৃদয় খান,সাভার প্রতিনিধিঃ
সাভারে থানার ‘রাইটার’ হিসেবে পরিচিত স্বপনের বিরুদ্ধে ব্যাপক মামলা বাণিজ্য, চাঁদাবাজি ও ধর্ষণের মতো গুরুতর অপরাধের অভিযোগ উঠেছে। সাধারণ মানুষের হয়রানি, নির্যাতন ও দালালি চালিয়ে স্বপন দীর্ঘদিন ধরে নিজের প্রভাব বজায় রেখেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে সাধারণ মানুষের দুর্বলতার সুযোগ নেয়ার অভিযোগে সাভারের জনগণ ও ভুক্তভোগীদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
স্বপনের প্রাথমিক জীবনের শুরু হয় সাভারের ব্যাংক কলোনিতে খালার বাসায় আশ্রয় নিয়ে। সেখান থেকে তিনি ফটো ক্লিক স্টুডিও নামে একটি সাইবার ক্যাফে খুলে নিজের কর্মকাণ্ড শুরু করেন। এরপর তিনি সাভার থানায় নিয়মিত দালালির কাজে যুক্ত হন, যেখানে বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে থানায় আসা ভুক্তভোগীদের সমস্যার মিথ্যা সমাধানের প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেন।
মহিলা পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজা বেগম ও শুটার বাবুল শরীফের সাথে সম্পর্ক
থানার দালালি করতে গিয়ে স্বপনের পরিচয় হয় পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজা বেগমের সঙ্গে। এ সম্পর্কের সুযোগে তিনি মাহফুজা বেগমের সুনজরে নিজের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যান। এমনকি তিনি শুটার বাবুল শরীফের সাথে মিলিত হয়ে ভুক্তভোগী নারীদের ধর্ষণ ও নির্যাতনের মতো কাজেও লিপ্ত হন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অপরাধ সম্পর্কে কিছু বললে ভুক্তভোগীদের মামলার তদন্তে ফাঁসানোর ভয় দেখানো হতো, যা ভুক্তভোগীদের অভিযোগ প্রকাশ করতে বাঁধা দেয়।
হাসপাতালের পরিচালককে আসামি বানানোর চেষ্টা
স্বপনের শ্বশুরের চিকিৎসার খরচ কমানোর দাবি নিয়ে তিনি সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক আনোয়ারুল হক নাজিমের কাছে যান। তবে বিল না কমালে, স্বপন নাজিমের প্রতি বিরাগভাজন হয়ে তাকে হত্যা মামলার এজাহারে আসামি করার কৌশল নেন। থানা থেকে বিষয়টি জানার পর নাজিম সাহেবের নাম এজাহার থেকে বাদ দেয়া হয়।
এসআই রাজিব শিকদার ও মামলা বাণিজ্যের যোগসাজশ
স্বপন ও পুলিশের এসআই রাজিব শিকদারের যোগসাজশে সাভার থানায় মামলা বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়তে থাকে। নিরীহ জনগণের ওপর চাঁদাবাজির ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পর, স্থানীয় গণমাধ্যমে এ বিষয়ে খবর প্রকাশ হলে রাজিব শিকদার গা ঢাকা দেন। পরবর্তীতে এ বিষয়ে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের তদন্তের দাবি ওঠে।
রাইটার স্বপনের অতীত ও বর্তমান চক্রের অপকর্ম
স্বপনের প্রবাসী এক বন্ধুর ভাষ্যমতে, স্বপনের কুকর্মের কারণে তিনি বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর, বিএনপি ও জামাতের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করলেও এখন তিনি আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও নিরীহ মানুষদেরও একইভাবে ভুক্তভোগী করছেন। থানার মামলাগুলো থেকে মুনাফা অর্জনের চেষ্টায় তিনি দীর্ঘদিন ধরে মামলার এজাহারে মিথ্যা তথ্য প্রদান করছেন।
জনগণের প্রশ্ন: কে থামাবে স্বপনের কালো চক্র?
একের পর এক অপরাধের ঘটনায় সাধারণ মানুষের মাঝে প্রশ্ন উঠেছে, কে থামাবে স্বপনের এই কালো চক্রকে? সাভারের জনগণ ও ভুক্তভোগীরা এ বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ ও বিচার দাবি করেছেন।
আগামী প্রতিবেদনে থাকবে স্বপনের বিরুদ্ধে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য ও ভুক্তভোগীদের ভয়েস রেকর্ড।