ঢাকা ০৪:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবিসি ন্যাশনাল নিউজ২৪ ইপেপার

ব্রেকিং নিউজঃ
জিগীষা মানবিক পার্টির আনুষ্ঠানি যাত্রা শুরু । পাঁচবিবিতে মধ্যরাতে শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল দিলেন এসপি ঠাকুরগাঁওয়ে ৫ বছর ধরে পড়ে আছে ২ কোটি টাকার স্লুইস গেট ! ঠাকুরগাঁওয়ে  রামরাই দীঘিতে অতিথি পাখির মেলা, দর্শনার্থীদের ভীড় ! স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী শিক্ষকদের ৭ দফা দাবি আদায়ে আমতলীতে স্বারকলিপি প্রদান দেশের প্রথম মধুর হাটের উদ্বোধন হলো বগুড়ায় বগুড়া শিবগঞ্জের বিদায়ী ইউএনও তাহমিনা আক্তারকে সংবর্ধনা প্রদান নাসিরনগরে দাঁতমন্ডলের ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত বেনাপোলে ইডেন কলেজের ছাত্রলীগ নেত্রীসহ গ্রেফতার ২ দৌলতপুরে সুশীল সমাজের সাথে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক উপজেলার উন্নয়নে সকলকে দায়িত্বশীল হতে হবে’

যশোরের বাঘারপাড়ায় খেজুরের রস আসতে না আসতে গাছির সঙ্গেও নাতিপুতি মেতে উঠেছে

মোঃ ওবাইদুল হক স্টাফ রিপোর্টার যশোর।।
  • আপডেট সময় : ১১:৩৯:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৫ বার পড়া হয়েছে

মোঃ ওবাইদুল হক

স্টাফ রিপোর্টার যশোর।।

যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শীত মৌসুমের আগমনে গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য প্রাথমিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা প্রথমে খেজুর গাছের মাথা পরিষ্কার করেন। এরপর শুরু হয় রস সংগ্রহ। চিরাচরিত সনাতন পদ্ধতিতে মাটির ভাঁড়ে রাতভর রস সংগ্রহ করা হয়। ভোরের সূর্য ওঠার আগে গাছিরা রস ভর্তি মাটির ভাঁড় গাছ থেকে নামিয়ে পরে মাটির হাড়িতে কিংবা টিনের বড় হাড়িতে জ্বালিয়ে গুড়-পাটালি তৈরি করে।যশোরের বিভিন্ন উপজেলায় ইতিমধ্যে গাছিরা খেজুর গাছ তোলা চাচার কাজ শুরু করেছে। অল্প দিনের মধ্যে বাজারে নতুন খেজুর গুড়-পাটালি পাওয়া যাবে। গ্রাম-বাংলায় এখন চোখে পড়ছে খেজুর গাছ তোলা-চাচার দৃশ্য। গাছিরা এখন মহা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।কিছুদিন পরই গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতীক মধুবৃক্ষ থেকে সুমধুর রস বের করে গ্রামের ঘরে ঘরে শুরু হবে গুড়-পাটালি তৈরির উৎসব। গ্রামে গ্রামে খেজুরের রস জ্বালিয়ে পিঠা, পায়েস, মুড়ি-মুড়কী ও নানা রকমের মুখরোচক খাবার তৈরি করার ধুম পড়বে। সকালে এবং সন্ধ্যায় কাঁচা রস খেতে খুবই মজাদার। রসে ভিজা চিতই পিঠার স্বাদই আলাদা। পাটালি ও দানা গুড়ের সুমিষ্ট গন্ধেই যেন অর্ধ ভোজন। রসনা তৃপ্তিতে এর জুড়ি নেই। পাটালি গুরের মধ্যে নারিকেল কোরা, তিল ভাজা মিশালে আরো সুস্বাদু লাগে। বাংলাদেশ ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড়-পাটালির ইতিহাস অনেক প্রাচীন।খেজুর গুড়-পাটালির কদর কমেনি বাঙালীর কাছে। আবহমান কাল থেকে তাই বাংলায় নবান্নের উৎসব পালনে খেজুর গুড়ের কদর বেশি। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে গাছিরা গাছ পরিষ্কার বা তোলা চাচার উপকরণ গাছি বাটাল, রশি তৈরি সহ ভাঁড় (মাটির ঠিলে) ক্রয় ও রস জ্বালানো জায়গা ঠিক করা সহ বিভিন্ন কাজে রয়েছে ব্যতিব্যস্ত।কথা হয় রায়পুর ইউনিয়নের সিলুমপুর গ্রামের ওঠিয়ার মোল্ল্যা,রামকৃষ্জপুরগ্রামের নকিম আলী, সংকর রায়পুর গ্রামের জহুর আলি বেশ কয়েকজন গাছির সাথে। তারা জানান, এ মৌসূমে অন্যান্য বছরের তুলনায় গাছ কাটা, রস জ্বালানো ও গুড় পাটালি তৈরীর উপকরণের মূল্য অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গুড়-পাটালির দাম বেশি হবে। গাছি ও গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় এমনটি হবে।গত বছর প্রতি ভাড় রস ১৫০ টাকা, গুড় কেজি প্রতি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা ও পাটালি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু এ বছর রস প্রতি ভাড় ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, গুড় কেজি প্রতি ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা এবং পাটালি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। স্থানীয় মধুবৃক্ষপ্রেমী সচেতন মহলের অভিমত, এ অঞ্চলের খেজুর গাছ ও গাছির সংখ্যা বৃদ্ধি করে প্রাচীন গৌরব আর ঐতিহ্য ধরে রাখতে সরকারের বন বিভাগ তথা সমন্বিত ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

শেয়ার করুন

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

যশোরের বাঘারপাড়ায় খেজুরের রস আসতে না আসতে গাছির সঙ্গেও নাতিপুতি মেতে উঠেছে

আপডেট সময় : ১১:৩৯:৪২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

মোঃ ওবাইদুল হক

স্টাফ রিপোর্টার যশোর।।

যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শীত মৌসুমের আগমনে গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য প্রাথমিকভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। তারা প্রথমে খেজুর গাছের মাথা পরিষ্কার করেন। এরপর শুরু হয় রস সংগ্রহ। চিরাচরিত সনাতন পদ্ধতিতে মাটির ভাঁড়ে রাতভর রস সংগ্রহ করা হয়। ভোরের সূর্য ওঠার আগে গাছিরা রস ভর্তি মাটির ভাঁড় গাছ থেকে নামিয়ে পরে মাটির হাড়িতে কিংবা টিনের বড় হাড়িতে জ্বালিয়ে গুড়-পাটালি তৈরি করে।যশোরের বিভিন্ন উপজেলায় ইতিমধ্যে গাছিরা খেজুর গাছ তোলা চাচার কাজ শুরু করেছে। অল্প দিনের মধ্যে বাজারে নতুন খেজুর গুড়-পাটালি পাওয়া যাবে। গ্রাম-বাংলায় এখন চোখে পড়ছে খেজুর গাছ তোলা-চাচার দৃশ্য। গাছিরা এখন মহা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।কিছুদিন পরই গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতীক মধুবৃক্ষ থেকে সুমধুর রস বের করে গ্রামের ঘরে ঘরে শুরু হবে গুড়-পাটালি তৈরির উৎসব। গ্রামে গ্রামে খেজুরের রস জ্বালিয়ে পিঠা, পায়েস, মুড়ি-মুড়কী ও নানা রকমের মুখরোচক খাবার তৈরি করার ধুম পড়বে। সকালে এবং সন্ধ্যায় কাঁচা রস খেতে খুবই মজাদার। রসে ভিজা চিতই পিঠার স্বাদই আলাদা। পাটালি ও দানা গুড়ের সুমিষ্ট গন্ধেই যেন অর্ধ ভোজন। রসনা তৃপ্তিতে এর জুড়ি নেই। পাটালি গুরের মধ্যে নারিকেল কোরা, তিল ভাজা মিশালে আরো সুস্বাদু লাগে। বাংলাদেশ ঐতিহ্যবাহী খেজুর গুড়-পাটালির ইতিহাস অনেক প্রাচীন।খেজুর গুড়-পাটালির কদর কমেনি বাঙালীর কাছে। আবহমান কাল থেকে তাই বাংলায় নবান্নের উৎসব পালনে খেজুর গুড়ের কদর বেশি। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে গাছিরা গাছ পরিষ্কার বা তোলা চাচার উপকরণ গাছি বাটাল, রশি তৈরি সহ ভাঁড় (মাটির ঠিলে) ক্রয় ও রস জ্বালানো জায়গা ঠিক করা সহ বিভিন্ন কাজে রয়েছে ব্যতিব্যস্ত।কথা হয় রায়পুর ইউনিয়নের সিলুমপুর গ্রামের ওঠিয়ার মোল্ল্যা,রামকৃষ্জপুরগ্রামের নকিম আলী, সংকর রায়পুর গ্রামের জহুর আলি বেশ কয়েকজন গাছির সাথে। তারা জানান, এ মৌসূমে অন্যান্য বছরের তুলনায় গাছ কাটা, রস জ্বালানো ও গুড় পাটালি তৈরীর উপকরণের মূল্য অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় গুড়-পাটালির দাম বেশি হবে। গাছি ও গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ায় এমনটি হবে।গত বছর প্রতি ভাড় রস ১৫০ টাকা, গুড় কেজি প্রতি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা ও পাটালি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু এ বছর রস প্রতি ভাড় ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, গুড় কেজি প্রতি ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা এবং পাটালি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। স্থানীয় মধুবৃক্ষপ্রেমী সচেতন মহলের অভিমত, এ অঞ্চলের খেজুর গাছ ও গাছির সংখ্যা বৃদ্ধি করে প্রাচীন গৌরব আর ঐতিহ্য ধরে রাখতে সরকারের বন বিভাগ তথা সমন্বিত ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

শেয়ার করুন