ঢাকা ১০:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবিসি ন্যাশনাল নিউজ২৪ ইপেপার

ব্রেকিং নিউজঃ
২৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর এর মৃত্যুতে রাসিক প্রশাসকের শোক নওগাঁয় পাষণ্ড স্বামীর লাঠির আঘাতে স্ত্রীর মর্মান্তিক মৃত্যুর রাজস্ব বোর্ডের আয়কর আইনজীবী হতে চান দৈনিক হালচাল পত্রিকার সাংবাদিক আছানুল হক এর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ  কুড়িগ্রামে ৩২.৭ কেজি গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার নওগার ঘাটনগরে মাদক নির্মূল কমিটির আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত রাউজানের পশ্চিম গুজরায় সূলভ মূল্যে খাদ্য সামগ্রী পেল ৪শ জন এনায়েতপুর ছাত্র হত্যা মামলায় সাবেক এমপি মোমিন মন্ডলের পিএস সেলিম সরকার গ্রেফতার, সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশে ব্যাপক রদবদল ৬ থানার ওসি বদলী দুই হাতে গুলি চালানো রুবেল ফের ৭ দিনের রিমান্ডে

বগুড়ায় আতঙ্কের আরও একটি নাম আতা বাহিনী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ০৯:০৬:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৬ বার পড়া হয়েছে

 

মিরু হাসান, স্টাফ রিপোর্টার
বগুড়ার কাহালু উপজেলার মালঞ্চা ইউনিয়নের কলমা শিবা গ্রামে ‘আতা’ বাহিনীর অত্যাচারে আতঙ্কে রয়েছে কয়েকশ’ পরিবার।হত্যাকাণ্ড, সন্ত্রাসী হামলা, কুপিয়ে জখম, দখলদারিত্ব, চাঁদা দাবিসহ নানা অভিযোগ এই বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে। এই বাহিনীর মূলহোতা আতাউর রহমান ওরফে আতার নামে রয়েছে হত্যাসহ আটটি মামলা।  এলাকাবাসির অভিযোগ আতাকে পুলিশ একাধিকবার গ্রেপ্তার করলেও স্বল্প সময়ের মধ্যে জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও এলাকায় আধিপত্য শুরু করে।

আতাউর রহমান আতা কাহালুর  মালঞ্চ ইউনিয়নের কলমা শিবা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক সোনার ওরফে পিরুর ছেলে। পানের দোকানদার পিরুর ছেলে আতাউর দুই বছর আগে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। পরে ২০২২ সাল থেকে ওই এলাকায় হঠাৎ করে বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহার করে শুরু করেন চাঁদাবাজি। ১০/১২জন সদস্যের এই বাহিনী আতার নেতৃত্বে চালাতো চাঁদাবাজি, দখলবাজি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। এর মধ্যে হত্যা মামলার আসামিদের তালিকায় নাম আসার পর আরও বেপরোয়া হয়ে পড়েন আতা।

কাহালু উপজেলার একটি হিন্দুপাড়ার এক তরুণীকে আতা বাহিনীর সদস্য বিপুল বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তরুণীর বাবা মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেন। বিয়ের পর সম্প্রতি ওই তরুণী বাবার বাড়ি বেড়াতে আসেন। বিয়ে করতে ব্যর্থ হয়ে বিপুল তাঁর সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আতা বাহিনীকে নিয়র৩০ আগস্ট রাত ১০টার দিকে ওই তরুণীর বাড়িতে যান। এ সময় তরুণীর বাবার কাছে আতা বাহিনীর দলনেতা আতা ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। মেয়ের সম্মানের কথা ভেবে তরুণীর বাবা আতা বাহিনীর সদস্যদের ২ হাজার টাকা দিতে চান। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে আতা বাহিনীর ৮ থেকে ১০ জন সদস্য তরুণীর বাবাকে মারধর শুরু করেন। সখা প্রামানিক নামে এক প্রতিবেশী প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসীরা তাঁকেও এলোপাতাড়ি মারধরসহ ছুরিকাঘাত করে। বাড়ির লোকজন চিৎকার শুরু করলে এ সময়  গ্রামের লোকজন এক হয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে চাঁদা নিতে আসা আতা বাহিনীর সদস্যদের ধাওয়া করেন। গ্রামবাসীর ধাওয়ায় পালানোর সময় আতার সহযোগী রাকিব হোসেন মাটিতে পড়ে যান। এরপর গ্রামবাসী তাঁকে আটক করে পিটুনি দেন। ঘটনাস্থলেই রাকিবের মৃত্যু হয়। নিহত রাকিবের বাড়ি কাহালু উপজেলার পরিশেষ গ্রামে। তাঁর বাবার নাম সামছুল ফকির। রাকিবের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে একটি মামলা বিচারাধীন।

গত বছর, অভয় প্রামানিকের ছেলে হরিদাস নতুন একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা কেনেন। এতে  আতা বাহিনীর নজর পড়ে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিএনজি নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে আতার নেতৃত্বে হরিদাসকে জিম্মি করা হয়। প্রচণ্ড মারধর করে হরিদাসকে তাঁরা  অভয় প্রামানিকের কাছে নিয়ে যেয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে এক লাখ টাকা দাবি করে। পরে বাধ্য হয়ে ৯৮ হাজার টাকা দিয়ে মীমাংসা করেন অভয় প্রামানিক। এ ঘটনায় ভীত হয়ে হরিদাস তাঁর সিএনজি বিক্রি করে দেন। একই কায়দায় সবুজ, সখাকে মারধর করে টাকা হাতিয়ে নেয় আতা বাহিনী।

ভুক্তভোগী হরিদাস বলেন, ‘এলাকায় কেউ কোন একটু বেশি টাকার কাজ করলেই আতা বাহিনীর কবলে পড়তে হয়। আমি সিএনজি কিনে মারধরের শিকার হই এবং পরে গরু বিক্রি করে আতাকে ৯৮ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। পরে প্রাণভয়ে আমি সিএনজি বিক্রি করে দিয়ে এখন কৃষিকাজ করছি।

রথিন্দ্র নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘আতা বাহিনীর অত্যাচারে আমরা অতিষ্ট। একটা ছাগল বিক্রি করলেও আতাকে চাঁদা দিতে হয়। আর না দিলেই রামদা, হাসুয়া, চাকু দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এমন অবস্থায় অনেকে ইন্ডিয়া চলে যাওয়ারও প্রস্তুতি নিয়েছে।

বাড়ি দখল হওয়া মোতাহারের বোন জ্যোৎনা বেওয়া বলেন, ‘আমার ভাই এলাকায় না থাকায় আমি আর আমার ছেলে ভাইয়ের বাড়িতে উঠি। এক মাস আগে বিকালে আতা এসে বলে এখুনি বাড়ি ছাড়তে হবে। কেন ছাড়তে হবে জিজ্ঞাসা করলে আতা রামদা দেখিয়ে বলে, এতো কিছুর উত্তর দিতে পারবো। আমার এই বাড়ির উপর খুব আকর্ষণ। তাই বাড়ি আমাকে দিতে হবে। সেই থেকে আমি আর এই বাড়িতে আসিনা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস সামাদ বলেন, ‘আতা বাহিনীর অত্যাচারে আমরা আতঙ্কে আছি। তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় গত বছর তাঁরা আমাকে বেধরক মারধর করে। এ ঘটনায় আমি মামলা দায়ের করলে পুলিশ আতাকে গ্রেপ্তার করে। পরে কয়েকদিনের মধ্যেই আবার জামিনে মুক্ত হয়ে যায়। আতা একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছিল। তবে যতবারই আতা গ্রেপ্তার হয়ে জেল থেকে বের হয়ে আসে ততবারই তাঁর অত্যচারের মাত্রা বেড়ে যায়। আমরা এলাকায় শান্তি চাই।

বগুড়া কাহালু থানায় সদ্য যোগদানকৃত অফিসার ইনচার্জ শাহীনুজ্জামান বলেন, চাঁদা দাবি করার সময় আতা বাহিনীর এক সদস্য গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা পৃথক দুইটি মামলা দায়ের হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে আতা বাহিনীর নিতাই নামের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছি৷ আট মামলার আসামি আতাসহ বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।

শেয়ার করুন

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বগুড়ায় আতঙ্কের আরও একটি নাম আতা বাহিনী

আপডেট সময় : ০৯:০৬:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

 

মিরু হাসান, স্টাফ রিপোর্টার
বগুড়ার কাহালু উপজেলার মালঞ্চা ইউনিয়নের কলমা শিবা গ্রামে ‘আতা’ বাহিনীর অত্যাচারে আতঙ্কে রয়েছে কয়েকশ’ পরিবার।হত্যাকাণ্ড, সন্ত্রাসী হামলা, কুপিয়ে জখম, দখলদারিত্ব, চাঁদা দাবিসহ নানা অভিযোগ এই বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে। এই বাহিনীর মূলহোতা আতাউর রহমান ওরফে আতার নামে রয়েছে হত্যাসহ আটটি মামলা।  এলাকাবাসির অভিযোগ আতাকে পুলিশ একাধিকবার গ্রেপ্তার করলেও স্বল্প সময়ের মধ্যে জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও এলাকায় আধিপত্য শুরু করে।

আতাউর রহমান আতা কাহালুর  মালঞ্চ ইউনিয়নের কলমা শিবা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক সোনার ওরফে পিরুর ছেলে। পানের দোকানদার পিরুর ছেলে আতাউর দুই বছর আগে রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন। পরে ২০২২ সাল থেকে ওই এলাকায় হঠাৎ করে বিভিন্ন অস্ত্র ব্যবহার করে শুরু করেন চাঁদাবাজি। ১০/১২জন সদস্যের এই বাহিনী আতার নেতৃত্বে চালাতো চাঁদাবাজি, দখলবাজি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। এর মধ্যে হত্যা মামলার আসামিদের তালিকায় নাম আসার পর আরও বেপরোয়া হয়ে পড়েন আতা।

কাহালু উপজেলার একটি হিন্দুপাড়ার এক তরুণীকে আতা বাহিনীর সদস্য বিপুল বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তরুণীর বাবা মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেন। বিয়ের পর সম্প্রতি ওই তরুণী বাবার বাড়ি বেড়াতে আসেন। বিয়ে করতে ব্যর্থ হয়ে বিপুল তাঁর সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আতা বাহিনীকে নিয়র৩০ আগস্ট রাত ১০টার দিকে ওই তরুণীর বাড়িতে যান। এ সময় তরুণীর বাবার কাছে আতা বাহিনীর দলনেতা আতা ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। মেয়ের সম্মানের কথা ভেবে তরুণীর বাবা আতা বাহিনীর সদস্যদের ২ হাজার টাকা দিতে চান। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে আতা বাহিনীর ৮ থেকে ১০ জন সদস্য তরুণীর বাবাকে মারধর শুরু করেন। সখা প্রামানিক নামে এক প্রতিবেশী প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসীরা তাঁকেও এলোপাতাড়ি মারধরসহ ছুরিকাঘাত করে। বাড়ির লোকজন চিৎকার শুরু করলে এ সময়  গ্রামের লোকজন এক হয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে চাঁদা নিতে আসা আতা বাহিনীর সদস্যদের ধাওয়া করেন। গ্রামবাসীর ধাওয়ায় পালানোর সময় আতার সহযোগী রাকিব হোসেন মাটিতে পড়ে যান। এরপর গ্রামবাসী তাঁকে আটক করে পিটুনি দেন। ঘটনাস্থলেই রাকিবের মৃত্যু হয়। নিহত রাকিবের বাড়ি কাহালু উপজেলার পরিশেষ গ্রামে। তাঁর বাবার নাম সামছুল ফকির। রাকিবের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে একটি মামলা বিচারাধীন।

গত বছর, অভয় প্রামানিকের ছেলে হরিদাস নতুন একটি সিএনজি চালিত অটোরিকশা কেনেন। এতে  আতা বাহিনীর নজর পড়ে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে সিএনজি নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে আতার নেতৃত্বে হরিদাসকে জিম্মি করা হয়। প্রচণ্ড মারধর করে হরিদাসকে তাঁরা  অভয় প্রামানিকের কাছে নিয়ে যেয়ে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে এক লাখ টাকা দাবি করে। পরে বাধ্য হয়ে ৯৮ হাজার টাকা দিয়ে মীমাংসা করেন অভয় প্রামানিক। এ ঘটনায় ভীত হয়ে হরিদাস তাঁর সিএনজি বিক্রি করে দেন। একই কায়দায় সবুজ, সখাকে মারধর করে টাকা হাতিয়ে নেয় আতা বাহিনী।

ভুক্তভোগী হরিদাস বলেন, ‘এলাকায় কেউ কোন একটু বেশি টাকার কাজ করলেই আতা বাহিনীর কবলে পড়তে হয়। আমি সিএনজি কিনে মারধরের শিকার হই এবং পরে গরু বিক্রি করে আতাকে ৯৮ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়। পরে প্রাণভয়ে আমি সিএনজি বিক্রি করে দিয়ে এখন কৃষিকাজ করছি।

রথিন্দ্র নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ‘আতা বাহিনীর অত্যাচারে আমরা অতিষ্ট। একটা ছাগল বিক্রি করলেও আতাকে চাঁদা দিতে হয়। আর না দিলেই রামদা, হাসুয়া, চাকু দিয়ে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এমন অবস্থায় অনেকে ইন্ডিয়া চলে যাওয়ারও প্রস্তুতি নিয়েছে।

বাড়ি দখল হওয়া মোতাহারের বোন জ্যোৎনা বেওয়া বলেন, ‘আমার ভাই এলাকায় না থাকায় আমি আর আমার ছেলে ভাইয়ের বাড়িতে উঠি। এক মাস আগে বিকালে আতা এসে বলে এখুনি বাড়ি ছাড়তে হবে। কেন ছাড়তে হবে জিজ্ঞাসা করলে আতা রামদা দেখিয়ে বলে, এতো কিছুর উত্তর দিতে পারবো। আমার এই বাড়ির উপর খুব আকর্ষণ। তাই বাড়ি আমাকে দিতে হবে। সেই থেকে আমি আর এই বাড়িতে আসিনা।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুস সামাদ বলেন, ‘আতা বাহিনীর অত্যাচারে আমরা আতঙ্কে আছি। তাদের অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় গত বছর তাঁরা আমাকে বেধরক মারধর করে। এ ঘটনায় আমি মামলা দায়ের করলে পুলিশ আতাকে গ্রেপ্তার করে। পরে কয়েকদিনের মধ্যেই আবার জামিনে মুক্ত হয়ে যায়। আতা একাধিকবার গ্রেপ্তার হয়েছিল। তবে যতবারই আতা গ্রেপ্তার হয়ে জেল থেকে বের হয়ে আসে ততবারই তাঁর অত্যচারের মাত্রা বেড়ে যায়। আমরা এলাকায় শান্তি চাই।

বগুড়া কাহালু থানায় সদ্য যোগদানকৃত অফিসার ইনচার্জ শাহীনুজ্জামান বলেন, চাঁদা দাবি করার সময় আতা বাহিনীর এক সদস্য গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা পৃথক দুইটি মামলা দায়ের হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে আতা বাহিনীর নিতাই নামের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছি৷ আট মামলার আসামি আতাসহ বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।

শেয়ার করুন