দখল আর দুষণে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের খালগুলো বিলীন, সচেতন নাগরিক সংগঠন এর মানববন্ধন
- আপডেট সময় : ০২:২৬:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুলাই ২০২৪ ৩৩ বার পড়া হয়েছে
স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ভিতর দিয়ে বয়ে যাওয়া খাল গুলো দখল ও ভরাট হওয়ায় একটু বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে বন্যার রুপ নিচ্ছে। শহরের খালগুলো পানি নিষ্কাশনের জন্য এক সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতো। এখন আর করে না। দখল আর দূষণে পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ ৭টি খালের মধ্যে ৫টির অস্তিত্ব বিলীন হয়ে পড়েছে। অবৈধ দখল দারদের কবলে পড়ে এসব খালের চিহ্ন মুছে যাচ্ছে। খালের ওপর বাসা-বাড়ি, ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান, মসজিদ- মাদ্রাসা, কবরস্থান ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।
এরই প্রতিবাদে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বন্যার প্রকোপ থেকে রক্ষা পেতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ও পৌর শহরের খাল উদ্ধারের দাবিতে সুনামগঞ্জ সচেতন নাগরিক সংগঠনের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। পৌর শহরের আলফাত স্কয়ার (ট্রাফিক পয়েন্ট) এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে এসময় বক্তব্য রাখেন, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খলিল রহমান, জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
পৌর শহরের কয়েকজন নাম প্রকাশ না করে জানান, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীরা খালগুলো দখল করে রেখেছেন। এতে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা একদম ভেঙে পড়েছে। ফলে বর্ষাকালে বৃষ্টিপাত হলেই শহরের বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার তৈরি হয়ে থাকে। তখন চরম দুর্ভোগে পড়েন পৌরবাসী। সম্প্রতি দু’দফা বন্যা ও ভারি বৃষ্টিপাতে পৌর শহরের বেশকিছু এলাকার এক তলা পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে যায়। তখন অনেকেই আশ্রয় কেন্দ্রে গিয়ে উঠে জীবন রক্ষা করেন।
জানা যায়, শহরের বড়পাড়া খাল, তেঘরিয়া খাল, কামারখাল, বলাইখালী খাল, নলুয়াখালী খাল, ধোপাখালী খাল ও ঘাবরখালী খাল সহ ছোট বড় কয়েকটি খাল প্রভাবশালীদের দখলে রয়েছে। সুরমা নদী থেকে উৎপত্তি হয়ে মধ্যবাজার দিয়ে প্রবাহিত হয়ে খাল শেষ হয়েছে জাউয়ার হাওরে গিয়ে। এসব খালের দখলদারদের চিহ্নিত করা গেলেও উদ্ধারে নেই তৎপরতা। যার ফলে পৌরসভার নির্মিত ছোট ড্রেনগুলো এখন আর কাজে আসছে না। ড্রেন ও নর্দমার পানি ঢুকে পড়ছে ঘরে। অস্বাস্থ্যকর ও অসহনীয় পরিবেশে নাকাল পৌরবাসী। এছাড়াও তেঘরিয়া, বড়পাড়া, বলাইখালী ও নলুয়াখালী খালও ইতোমধ্যে দখল হয়ে গেছে ধোপাখালী ও ঘাবরখালী খাল এখন দৃশ্যমান রয়েছে।
জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মানববন্ধনে বলেন, এবার দুই দফা বন্যার মুখোমুখী হতে হয়েছে সুনামগঞ্জ বাসিকে। নদী ভরাট, হাওরে অপরিকল্পিত ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও শহরের খাল ভরাট হওয়ার কারণে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। বছর বছর বন্যার ক্ষতির হাত থেকে ও জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি চায় সুনামগঞ্জের মানুষ।
অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, অলিম্পিক খেলা ৪ বছর পরপর হয়, আর সুনামগঞ্জে বন্যা হয় দুই বছর পরপর। তিনি বলেন, পৌর শহরের পান্ডার খালসহ প্রায় ২০টি খাল ভরাট হয়ে গেছে। এই খালগুলো দিয়ে নদী থেকে দেখার হাওরে পানি প্রবেশ করতো। এখন খাল দিয়ে আর পানি যেতে পারে না। এজন্য বৃষ্টিপাত হলেই শহরে ও নদীর তীরবর্তী গ্রাম প্লাবিত হয়। এর থেকে পরিত্রাণের জন্য খালগুলো উদ্ধার ও খনন করে পানির অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করলেই বন্যা থেকে রেহাই মিলতে পারে।