ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর ভয়ে সেন্টমার্টিন বেড়াতে যাওয়া হলনা পর্যটকের
- আপডেট সময় : ১১:২২:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ অক্টোবর ২০২২ ৭৪ বার পড়া হয়েছে
কামরুল ইসলাম চট্টগ্রাম
বঙ্গোপসাগরে সিত্রাং নামে ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হয়েছে। শক্তি অর্জন করে সিত্রাং আগামী মঙ্গলবার সকালে বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানতে পারে। ইতিমধ্যে দেশের সবকটি সমুদ্রবন্দর ও কক্সবাজারকে ৪ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর প্রভাবে উপকূলে ৫-৭ ফুট জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে সকাল থেকে হালকা বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
বৈরী আবহাওয়ায় সেন্টমার্টিনে বেড়াতে যাওয়া চার শতাধিক পর্যটককে কক্সবাজারে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। পর্যটকরা গত রবিবার রাত ৮টার সময় কর্ণফুলী জাহাজযোগে কক্সবাজারে এসে পৌঁছেছে বলে জানিয়েছেন জাহাজটির কক্সবাজারের ইনচার্জ হোসাইনুল ইসলাম বাহাদুর।
জরুরি ভিত্তিতে জাহাজ মালিক ও জেলা প্রশাসন এ উদ্যোগ গ্রহণ করে।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়ের শঙ্কায় আজ সোমবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের ভ্রমণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
স্থানীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে। কক্সবাজার, মোংলা, পায়রা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে ৪ নম্বর স্হানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত জারি করা হয়েছে।
কর্ণফুলী জাহাজের কক্সবাজারের ব্যবস্থাপক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, “সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সেন্টমার্টিনে যেসব পর্যটক গেছেন সবাই কর্ণফুলী জাহাজের যাত্রী। সাগর উত্তাল হলেও পর্যটকদের কক্সবাজারে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।”
সেন্টমার্টিন সার্ভিস ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “দ্বীপের তিন শতাধিক নৌকা, ট্রলার, স্পিডবোট জেটি ঘাটে নোঙর করা হয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌপথে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।”
স্হানীয় আওয়ামী লীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন জানান, বৈরী আবহাওয়া সংকেতের কারণে প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। তাই প্রায় পর্যটক কর্ণফুলী জাহাজে করে চলে গেছে।
তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী প্রায় ১০/২০ জন পর্যটক দ্বীপে রয়ে গেছেন বলেও জানান তিনি।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, “সেন্টমার্টিনে সকাল থেকে গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। এখন জাহাজ চলাচল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকবে। যেসব পর্যটক দ্বীপে অবস্থান করছেন তাদেরকে জাহাজে করে কক্সবাজার ফিরে যেতে অনুরোধ জানিয়ে মাইকিং করা হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে জাহাজ চলাচল শুরু হবে।”
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, “দুর্যোগ পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পুলিশ সদস্যরা সতর্ক রয়েছে।”
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, “ঘূর্ণিঝড়ে স্থানীয় লোকজনের ক্ষয়ক্ষতি রোধে সাইক্লোন শেল্টার ও বহুতল ভবনগুলো খোলা রাখার জন্য ইউনিয়ন পরিষদকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। দ্বীপের মানুষের জন্য শুকনা খাবার, পানিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে।”
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মামুনুর রশীদ জানান, ঘূর্ণিঝড় বিষয়ে সব ধরনের সতর্কতা ও ক্ষয়ক্ষতি রোধে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা, উপজেলা পর্যায়ে মেডিকেল টিম গঠন ও সার্বিক বিষয়ে তদারকির জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে।