কালকিনির শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বই বিক্রির টাকা আত্মসাৎতের অভিযোগ
- আপডেট সময় : ১১:০৯:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪ ২০ বার পড়া হয়েছে
মাদারীপুরের কালকিনি ও ডাসার উপজেলায় ১৯৯ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। ওই সকল বিদ্যালয়গুলোতে বঙ্গবন্ধুর নামে তিনটি বই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রদান করা হয়। মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া ওই তিনটি বইয়ের দাম ৩ হাজার টাকা করে মোট ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করা হয়। কিন্তু বইয়ের সঠিক মুল্য হওয়া কথা ছিল সর্বোচ্চ দেড় হাজার টাকা করে। আর এই অতিরিক্ত দামে বই বিক্রির ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে কালকিনি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষ কর্মকর্তা মো. বদিউজ্জামানের বিরুদ্ধে। তবে অভিযুক্ত ওই শিক্ষা কর্মকর্তার দাবি, বইয়ের দামের ব্যাপারে ইউএনও স্যার ও ডিপিও স্যার জানে। এখনও টাকার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয় নাই।
জানাযায়, ওই বই বিক্রির টাকা মাদারীপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। কালকিনি ও ডাসার উপজেলায় ১৯৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রায় ১৫০টি বিদ্যালয় থেকে এই টাকা উত্তোলন করা হয় অনেক আগেই। ২০২৩ -২৪ইং সালের অর্থ বছরের স্লিপের টাকা থেকে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তারা ক্লাস্টার ভিত্তিক প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে জুলাই মাসে ওই টাকা উত্তোলন করে। বই তিনটির নাম ভাইয়েরা আমার-আহবানে শেখ হাসিনা, সকলের তরে সকলে আমরা, সংগ্রহ সঞ্চলনা ও সম্পাদনা নজরুল ইসলাম সাবেক প্রধান মন্ত্রীর স্পিচ রাইটার সচিব ও জিনিয়াস প্রকাশনী।
প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ও বিদ্যালয় সুত্রে জানা গেছে, ৩টি বইয়ের সর্বোচ্চ দাম হবে ১৫ থেকে ১৬শ’ টাকা। আর এই তিনটি বইয়ের দুইটির দাম ৮ শত টাকা করে ১৬শ’ ও একটি বইয়ের দাম ১৬শ’ টাকা লেখা মোট ৩ হাজার ২শ’ টাকা। তবে সরকার পতন হওয়ার পর এখনও ওই টাকা অফিসে জমা রয়েছে। এটিও কর্মকর্তারা স্লিপের টাকা থেকে নিয়ে গেছে । কিন্তু তারা বলছে ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের স্লিপের টাকা থেকে সমন্বয় করা হবে।
টাকা আত্নসাৎ এর ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রধান শিক্ষক জানান, শেখ মুজিবুরের নামে লেখা তিনটি বই যার দাম হবে ১৫ বা ১৬ শ’ টাকা কিন্তু সেই বইয়ের জন্য ৩ হাজার টাকা ধরা হয়েছে তাও আবার স্লিপের টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে। তবে সরকার পরিবর্তন হয়েছে এখন আমাদের টাকাটা ফেরত দিলে আামাদের বিদ্যালয়ের উপকার হয়। শিক্ষ কর্মকর্তা ও সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা স্যারেরা বলে বইয়ের টাকা মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। যেখানে সরকারই পরিবর্তন হয়ে গেছে সেই টাকা কি ভাবে এখন নিবে বা পাঠাবে। আমাদের মনে হয় এই টাকা আত্নসাৎ করেছে তারা।
কালকিনি উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা চরদৌলত খান ক্লাস্টার আনিচুর রহমান মিয়া বলেন, বঙ্গবন্ধু উপর লেখা ৩টি বইয়ের মুল্যে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের স্লিপের টাকা থেকে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ২০২৪-২৫ অর্থ বছরের স্লিপের টাকা থেকে সম্বনয় করা হবে।
টাকা আত্নসাৎ এর অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. বদিউজ্জামান বলেন , শিক্ষা মন্ত্রণায় থেকে যে তিনটি বই এসেছে তা প্রত্যেকটি স্কুলে দেওয়া হয়েছে কিন্তু কোন স্কুল থেকে টাকা নেওয়া হয় নাই।
চলতি অর্থ বছরের ( ২০২৪-২৫) স্লিপের টাকা থেকে সমন্বয় করা হবে। বইয়ের ব্যাপারে ইউএনও( কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ) স্যার ও ডিটিও (মাদারীপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা) স্যার জানে। এখনও টাকার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্তু হয় নাই।
এ ব্যাপারে কালকিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার দাস বলেন, আমি বই এর কিছু জানি না। যদি আমার কথা বলে থাকে শিক্ষা কর্মকর্তা তা হলে কথাটা সঠিক না। আমি শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে জেনে নেই সে কি জন্য আমার নাম বললো।
এ বিষয় জানতে চাইলে মাদারীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তামস কুমার পাল বলেন, আমি বইয়ের কথা জানি তবে টাকাতো কম্পানিকে দিয়ে দেওয়ার কথা। তবে দিয়েছে কি না জানি না। মন্ত্রণায় থেকে প্রতি বছর বই দেয় আর সেই বই এর মূল্য স্লিপের টাকা থেকে পরিষদ করা হয়।